মুখোমুখি: নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
দু’মাস আগে শেখ হাসিনার সফরের সময়ে তিস্তা চুক্তি নিয়ে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। তিস্তার বদলে তোর্সার জল দিতে চেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই প্রস্তাব ঘিরে বিতর্কও হয়েছিল যথেষ্ট। আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের উপর থেকে বাম আমলের ঋণের বোঝা কমানোর জন্য মমতা আবেদন করলেন ঠিকই। কিন্তু একই সঙ্গে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নদীর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকা নিয়ে জোরদার অভিযোগ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অনুরোধ, দ্বিপাক্ষিক স্তরে এর সমাধান হোক। পাশাপাশি মমতার ক্ষোভ, ‘‘ইলিশ দেওয়া তো বাংলাদেশ বন্ধ করেই দিয়েছে। মালদহ-মুর্শিদাবাদের আমও এখন ওখানে রফতানি করা সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কারণ আমদানি শুল্ক দ্বিগুণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানিয়েছি।’’
অনেকের মতে, তিস্তা চুক্তির ভবিষ্যৎ যে আরও তলানিতে গিয়ে ঠেকছে, মমতার অভিযোগ তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বোঝাতে চাইছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে অনেক দ্বিপাক্ষিক বিষয় দীর্ঘদিন ঝুলে রয়েছে। সেগুলির আগে সমাধান হোক। তাই তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশ এবং মোদী সরকারের চাপকেই তিনি কার্যত ফেরত পাঠিয়েছেন সুকৌশলে।
আরও পড়ুন: বিজেপি কেন বাম পথে, প্রশ্ন মমতার
বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আত্রেয়ী, পুনর্ভবা, এবং টাঙন— এই তিনটি আন্তর্জাতিক নদীর স্রোত শুকিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে এসে। বাংলাদেশ এমন ভাবে বাঁধ দিয়েছে যে, দক্ষিণ দিনাজপুরে প্রবল জলাভাব দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের মাথাভাঙা নদী নদিয়া দিয়ে বয়ে গিয়েছে চূর্ণী নামে। পশ্চিমবঙ্গের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ মেপে দেখেছে, ও-পার থেকে এত বেশি বর্জ্য পদার্থ এই নদী বয়ে আনছে যে, এ-পারে তার জল ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে।’’ নদী সমস্যার পাশাপাশি গঙ্গার ভাঙন রোধে অবিলম্বে সরকারি হস্তক্ষেপেরও আজ দাবি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।