পাঁচশো ও ১ হাজার টাকার নোট বাতিলের জেরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হাসপাতালে হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে রোগী ও তাঁদের পরিজনদেরও। রাঁচীর অনেক হাসপাতালে খুচরো টাকার অভাবে রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ব্যতিক্রম ঘটল নামকুমের একটি বেসরকারি হাসপাতালে।
সেই হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ জানান— কোনও ‘ডিউ স্লিপ’ নয়, ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত তাঁদের হাসপাতালে সমস্ত চিকিৎসা করা হবে বিনামূল্যে। ‘বিনায়ক হসপিটাল ও রিসার্চ সেন্টার’ নামে ওই হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর চিকিৎসক চন্দন কুমার বলেন, ‘‘১৩ নভেম্বর পর্যন্ত হাসপাতালের বহির্বিভাগ বা জরুরি বিভাগে সবার চিকিৎসাই হবে বিনামূল্যে। যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন, তাঁদের ওষুধের দামও আপাতত নেওয়া হবে না।’’
শহরের অন্যান্য হাসপাতালের মতো নামকুমের ওই চিকিৎসাকেন্দ্রেও গত কাল সকাল থেকে টাকা মেটানো নিয়ে সমস্যা ছড়িয়েছিল। চন্দনবাবু জানান, তাঁরা প্রথম দিকে রোগী বা তাঁদের পরিজনদের কাছ থেকে ৫০০ বা ১ হাজার টাকার নোট নিচ্ছিলেন। কিন্তু বিকেলের দিকে দেখা যায়, হাসপাতালের ক্যাশ কাউন্টারে পাঁচশো বা ১ হাজার টাকা খুচরো নেই। কারণ বেশিরভাগ লোকই পাঁচশো বা ১ হাজার টাকার নোট দিচ্ছিলেন। চন্দনবাবু বলেন, ‘‘গত রাতে দুর্ঘটনায় আহত এক যুবককে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। তাঁর পরিবারের কাছে শুধু ১ হাজার টাকার নোট ছিল। আমাদের কাছেও খুচরো ছিল না। তাঁদের অসহায় অবস্থা দেখে মনে হল, অনেকেরই তো এই সমস্যা হচ্ছে। আমরা তখনই চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করি টাকার সমস্যা থাকাকালীন বিনামূল্যে চিকিৎসা করা হবে।’’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে স্বস্তি ফিরেছে সেখানকার রোগীদের। দুর্ঘটনায় জখম রাহুল কুমারের মা দীপিকাদেবী বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম খুচরো টাকা নেই বলে হয়তো ছেলের চিকিৎসা করাতে পারব না। বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ পেয়ে চিন্তা কাটল।’’ চন্দনবাবু জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশে কালো টাকা বন্ধ করতে যে পদক্ষেপ করেছেন, তাকে সমর্থন করতেই এই সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, ‘‘খুচরো টাকা হাতে না থাকায় রোগীরা হয়রান হচ্ছিলেন। সে সব অসহায় মানুষদের সাহায্য করতে পেরে আমরা খুব খুশি।’’