Rafale

কোনও পাকিস্তানি পাইলটকে রাফাল ওড়ানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি, বলল ফ্রান্স

ফরাসি দূতাবাস থেকে এনডিটিভিকে জানানো হয়েছে, এই খবর নিয়ে সংক্রান্ত সব কিছু পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খতিয়ে দেখেছে তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৯ ১৪:১৪
Share:

রাফাল যুদ্ধবিমান। ছবি: ফাইল চিত্র।

ফান্সের মাটিতে পাকিস্তানি পাইলটদের রাফাল বিমান ওড়ানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল, এই খবরকে ভুয়ো বলে জানাল ফরাসি সরকার। ভারতে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার জিয়েগলার বলেছেন, ‘‘এই খবর যে ভুয়ো, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।’’ ফরাসি দূতাবাস থেকে এনডিটিভিকে জানানো হয়েছে, এই খবর নিয়ে সংক্রান্ত সব কিছু পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খতিয়ে দেখেছে তাঁরা।

Advertisement

কাতারের বায়ুসেনার হাতে থাকা রাফাল যুদ্ধবিমানের সাহায্যে নিজেদের পাইলটদের এই বিমান ওড়ানো শিখিয়ে নিয়েছে পাকিস্তান, এই খবর প্রকাশের পর থেকেই বাড়ছিল উদ্বেগ। সেখানে বলা হয়েছিল, ২০১৭ সালের নভেম্বরে ফ্রান্সের মাটিতে চলেছিল এই প্রশিক্ষণের কাজ। এই খবরে স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বিগ্ন হওয়ার কথা ভারতের। কারণ, অত্যাধুনিক রাফাল যুদ্ধবিমানের সাহায্যেই আকাশযুদ্ধে নিজেদের এগিয়ে রাখার পরিকল্পনা ভারতের।

এআইএন অনলাইন ডট কম নামের একটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয় এই রিপোর্টটি। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ‘২০১৭ সালের নভেম্বরে কাতারের হয়ে যে পাইলটরা রাফাল বিমান ওড়ানোর প্রশিক্ষণ পেয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই পাক বায়ুসেনার অফিসার।’’ ভারতের মতোই ফ্রান্সের কাছ থেকে রাফাল কিনতে চুক্তিবদ্ধ কাতার। রাফাল যুদ্ধবিমান প্রস্তুতকারক দাসোঁ অ্যাভিয়েশনের তরফে প্রকাশ করা প্রেস বিবৃতি থেকে দেখা যাচ্ছে, ২০১৫ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে ২৪টি যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করেছিল কাতার। ২০১৭ সালে কাতার আরও ১২টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনতে নতুন চুক্তি করে ফ্রান্সের সঙ্গে। প্রথম দফার ২৪টি যুদ্ধবিমানের জন্য চুক্তির অর্থমূল্য ছিল প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। সেই যুদ্ধবিমান চালানোর জন্য প্রশিক্ষণ নিতেই কাতার থেকে ফ্রান্সে গিয়েছিল পাইলটদের একটি দল। সেই দলেই ছিলেন পাকিস্তানি পাইলটরা, এমনটাই দাবি করেছিল এআইএন অনলাইন ডট কম।

Advertisement

দাসোঁ অ্যাভিয়েশনের যে আধিকারিকেরা এখন ভারতে আছেন, তাঁদের এই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁরাও এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, কাতার এয়ার ফোর্সের হয়ে পাকিস্তানি পাইলটরা রাফাল ওড়াতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, এই রকম কোনও খবর তাঁদের কাছে নেই।

আরও পড়ুন: রাফাল ওড়ানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছে পাক পাইলটরা? নয়া রিপোর্টে উদ্বেগ বাড়ল ভারতের

মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বরাবরই সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে পাকিস্তানের। এই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে মোতায়েনও থাকেন পাকিস্তানি সেনা। জর্ডনের মতো দেশের কাছ থেকে সরাসরি সামরিক সহযোগিতা পেয়ে থাকে পাকিস্তান। কিছু দিন আগেই ইসলামাবাদকে ১৩টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিয়েছিল জর্ডন। বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানের পরনিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে যে যুদ্ধবিমানগুলি ভারতের আকাশে হামলা চালাতে এসেছিল, তার মধ্যে জর্ডনের দেওয়া যুদ্ধবিমানও থাকতে পারে, এমনটাই অনুমান বিশেষজ্ঞদের।

বিভিন্ন পাক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ইসলামাবাদে পাক বায়ুসেনার সদর দফতরে গিয়েছিলেন কাতারের বায়ুসেনা প্রধান। সেই অনুষ্ঠানের পর পাক বায়ুসেনা প্রধান জানিয়েছিলেন, ‘‘সামরিক ক্ষেত্রে পাক বায়ুসেনাকে সহ রকমের সাহায্য করতে প্রস্তুত কাতার।’’

আরও পড়ুন: মোদীই ফিরুন ক্ষমতায়, চাইছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান

এই বছরের সেপ্টেম্বরেই ভারতে আসতে চলেছে রাফাল যুদ্ধবিমান। তার আগেই পাকিস্তানি পাইলটরা এই বিমান ওড়ানোর প্রশিক্ষণ নিয়ে ফেললে তা যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয় ভারতের কাছে। কারণ, ভারত তাঁর নিজের পছন্দ মাফিক রাফাল যুদ্ধবিমানে বেশ কিছু অদলবদল করার পরই তা কিনতে সম্মত হয়েছে। তাই কাতারের কেনা যুদ্ধবিমানের সঙ্গে ভারত যে রাফাল কিনছে, তার ফারাক থাকলেও এই বিমানের রেডার ব্যবস্থা দুই দেশের ক্ষেত্রেই এক। অত্যাধুনিক এই রেডার ব্যবস্থা থাকলে বিমান ওড়ানোর সময়েই পাইলটরা টের পেয়ে যাবেন, আকাশের বা সমুদ্রের কোথায় বিপদ লুকিয়ে আছে বা কোন জায়গা থেকে আঘাত হানার প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রতিপক্ষ।

এখন এই রেডার ব্যবস্থা পাকিস্তানের হাতে থাকলে ভারতের রাফাল আকাশে উড়লেই পাক সেনা তার হালহকিকত জেনে ফেলতে পারবে খুব সহজেই। ভারতীয় বায়ুসেনার অবসরপ্রাপ্ত পাইলট অংশুমান মইনকার এনডিটিভিকে বলেছেন, ‘‘প্রশিক্ষণ নেওয়া থাকলে ওঁরা জেনে যাবে এই যুদ্ধবিমানের অস্ত্রব্যবস্থা কেমন। কতক্ষণ আকাশে উড়তে পারে। কী ভাবে এই বিমান অভিযান চালায়, এই সব কিছুই।’’ অর্থাৎ, রাফাল হাতে থাকলে ভারতীয় বায়ুসেনার আক্রমণের কৌশল কী হতে পারে, তা নিয়ে পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর কাছে আর কিছুই অজানা থাকবে না। যদিও ফ্রান্স সরকারের তরফে এই বিবৃতি দেওয়ার পর নিশ্চিত ভাবেই কিছুটা স্বস্তিতে ভারত। যদিও রাফাল প্রস্তুতকারক সংস্থা দাঁসো অ্যাভিয়েশনের তরফে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয় কিনা, সেদিকেও নজর রাখছে ভারত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন