গৌরী লঙ্কেশ। ফাইল চিত্র।
বাড়ির বাইরে কয়েক জন অজ্ঞাতপরিচয় লোক বেশ কয়েক দিন ধরেই আনাগোনা শুরু করেছে। মৃত্যুর এক সপ্তাহ আগে নিজের মা এবং বোনকে এমনটাই জানিয়েছিলেন সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ। বৃহস্পতিবার পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলকে এই কথাই জানালেন তাঁর বোন কবিতা লঙ্কেশ।
আরও পড়ুন: ‘আমি গৌরী, আমাদেরই নাম গৌরী’, বলল প্রতিবাদ
কবিতা জানিয়েছেন, নিজের পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন গৌরী। তাঁর মা ইন্দিরা লঙ্কেশ এবং বোন বিষয়টি পুলিশকে জানানোর কথাও বলেছিলেন। কিন্তু বরাবরই ডাকাবুকো ছিলেন যুক্তিবাদী এবং মুক্তমনা সাংবাদিক গৌরী। বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা ঘটলে পুলিশে খবর দেবেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি। কবিতা জানিয়েছেন, মৃত্যুর দিন দুপুরে গাঁধী বাজার এলাকায় গৌরীর অফিসেই তাঁর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। পরে রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বাড়ি ফিরে জানতে পারেন পারেন গৌরী খুন হয়েছেন।
আরও পড়ুন: দাভোলকর, পানসারে, কালবুর্গি, গৌরী লঙ্কেশ: এর পর কার পালা
কার্টুন: অর্ঘ্য মান্না
পশ্চিম বেঙ্গালুরুর রাজরাজেশ্বরী নগরে নিজের বাড়ির সামলেই গত মঙ্গলবার রাতে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন গৌরী লঙ্কেশ। পুলিশ জানিয়েছে, রাতে বাড়ি ফিরে গাড়ি পার্ক করে তিনি যখন বাড়ির দরজা খুলছিলেন, ঠিক তখনই হামলা হয়। বাইকে চড়ে হানা দেওয়া তিন আততায়ী মোট সাতটি গুলি ছোড়ে সাংবাদিককে লক্ষ্য করে। চারটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়, বাকি তিনটে তাঁর বুক আর তলপেট ফুঁড়ে দেয়। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন গৌরী।
খুনিদের ধরতে ইতিমধ্যেই ১০০ জন পুলিশ অফিসারের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে কর্ণাটক সরকার। পুলিশ জানিয়েছে, আততায়ীদের মাথায় হেলমেট ছিল। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে এক জনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। তদন্তকারী এক অফিসারের কথায়, রাজরাজেশ্বরী নগরের ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন গৌরী। খুনের দিন রাতে যে রাস্তা দিয়ে গৌরী বাড়ি ফিরছিলেন, খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে সেই পথের সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজও। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দিন রাতে রাস্তার সমস্ত আলো নেভানো ছিল। ফলে সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনার ঝাপসা ছবি উঠেছে। তবে খুব শীঘ্রই দুষ্কৃতীরা ধরা পড়বে বলে জানিয়েছে পুলিশ।