—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
কোর্টের নির্দেশ ছিল। তার পরেও বাবার কাছে ১২ বছরের কন্যাকে পাঠাননি মা। বাবা কন্যাকে নিজের কাছে নিতে চাইলে এক কোটি টাকা দাবি করল কিশোরী। তাঁকে লাঠি দিয়ে আঘাতও করতে গেল। এর পরেই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গবইয়ের হুঁশিয়ারি, ‘‘ফল ভুগবেন আপনিও।’’ এই প্রসঙ্গে ফিরে এল ‘বর্ণপরিচয়’-এর ভুবনের মাসির অনুষঙ্গ।
বাবার আইনজীবী পিআর পাটওয়ালিয়া আদালতে জানান, তাঁর মক্কেলের সঙ্গে স্ত্রীর দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছে। জেলা আদালত কিশোরীকে বাবার হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল। সেই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন মা। সেই আবেদন এখনও হাই কোর্টে বিচারাধীন। যদিও নিম্ন আদালতের রায় মেনে কন্যাকে বাবার কাছে পাঠাননি মা। নিজের কাছেই রাখেন। এর পরে মায়ের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বাবা। হাই কোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে। তার পরেই কিশোরীর বাবা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন।
আবেদনকারী বাবার আইনজীবী পাটওয়ালিয়া প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে জানিয়েছেন, গত সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দিয়েছিল, যাতে ওই ব্যক্তি তাঁর কন্যার সঙ্গে নিয়মিত দেখা করতে পারেন। আবেদনকারী আইনজীবীর মাধ্যমে বলেন, ‘‘বুধবার আমার কন্যা আমার কাছে ফিরে আসতে অস্বীকার করে। আমাকে বলে, তুমি আমার মাকে হেনস্থা করছ। মায়ের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেছ। এক কোটি টাকা না দিলে যাব না। স্কুলের খাতায় কন্যার মা আমার নাম কাটিয়ে দিয়েছে।’’ আবেদনকারীর আইনজীবী জানান, কন্যার মাকে ‘শাস্তি’ দিয়ে লাভ হবে না। বিষয়টিতে মধ্যস্থতার প্রয়োজন। কিশোরীর মায়ের আইনজীবী জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেলও মধ্যস্থতার জন্য প্রস্তুত।
এর পরেই প্রধান বিচারপতি গবইয়ের পর্যবেক্ষণ, ‘‘অকারণে নিজের সন্তানকে টেনে আনছেন। ওর কেরিয়ার, ওর মন নষ্ট করছেন। এক দিন এটা আপনার কাছে ফিরে আসবে।’’ সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করেছে। দুই পক্ষের সম্মতি নিয়ে উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন বিচারপতি ঋতু বাহরিকে মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
প্রসঙ্গত, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়ের দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে সেই ভুবনের মাসির কথা, যিনি ভুবনকে শাসন করেন না। তাঁর প্রশ্রয়ে ভুবন ক্রমে অপরাধীতে পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত জেলে দাঁড়িয়ে নিজের মাসির কান কামড়ে নেয়।