ইচ্ছামতো ড্রোন নয়, অভিন্ন নীতি দেশে

ড্রোনে ওড়ানোয় নিয়ন্ত্রণ আনতে কেন্দ্র একটি ‘ডিজিটাল স্কাই প্ল্যাটফর্ম’ তৈরি করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৯ ০২:০৩
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

সিনেমার শুটিং থেকে বিয়ের অনুষ্ঠান, টাকা ফেললেই এখন সর্বত্র ‘ড্রোন’ বা চালকবিহীন আকাশযান ব্যবহার করে ছবি তোলা যাচ্ছে অবাধে। এ বার তাতে রাশ টানতে গোটা দেশে অভিন্ন ড্রোন নীতি চালু করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছেও এই মর্মে চিঠি পাঠিয়েছে দিল্লি। নবান্ন সূত্রের খবর, এ বার থেকে ড্রোন ব্যবহার করতে হলে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে আগাম অনুমতি নিতে হবে। এই নীতি চালু হচ্ছে সামগ্রিক নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে।

Advertisement

কেন এমন ব্যবস্থা?

পুলিশকর্তাদের একাংশের ব্যাখ্যা, এখন যে-কেউ যথেচ্ছ ড্রোন ওড়াতে পারছেন। কোনও নিয়ন্ত্রণ না-থাকায় সার্বিক নিরাপত্তার দিক থেকে সেটা চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে। তাই একটি অভিন্ন নীতি জরুরি হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি কলকাতা বিমানবন্দরের কাছে একটি ড্রোন উড়তে দেখে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-কে জানান বিদেশি উড়ান সংস্থার পাইলট। বিমান নামা বা ওঠার সময় ড্রোনের সঙ্গে তার ধাক্কা লাগলে কয়েকশো মানুষের প্রাণহানিও ঘটতে পারে।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ড্রোনে ওড়ানোয় নিয়ন্ত্রণ আনতে কেন্দ্র একটি ‘ডিজিটাল স্কাই প্ল্যাটফর্ম’ তৈরি করেছে। যাঁরা ড্রোন চালাতে চান, সেই প্ল্যাটফর্মে তাঁদের আবেদন জমা দিতে হবে। কোথায়, কখন, কেন এবং কত সময়ের জন্য ড্রোন ব্যবহার করা হবে, তা বিস্তারিত ভাবে জানাতে হবে আবেদনকারীকে। কেন্দ্রীয় সার্ভার থেকে সেই আবেদনপত্র সরাসরি চলে যাবে সংশ্লিষ্ট এলাকায়। জেলা স্তরে অনুমোদন দেওয়ার দায়িত্ব থাকবে পুলিশ সুপার এবং নিকটবর্তী বিমানবন্দরের উপরে। রাজ্য স্তরে সেই দায়িত্বে থাকবেন রাজ্য সরকারের মনোনীত কোনও আধিকারিক। অনলাইনে অনুমতি পেলে তবেই ড্রোন ব্যবহার করা যাবে।

সব রাজ্যকে একটি করে মানচিত্র (গ্রিড ম্যাপ) তৈরি করতে বলা হয়েছে। বিমানবন্দর ছাড়াও নিরাপত্তা নিয়ে আপস করা সম্ভব নয়, এমন ভবন, পরিকাঠামো, গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ইত্যাদির কথা মাথায় রেখে ওই মানচিত্র তৈরি করার কথা। নিরাপত্তার দিক থেকে মানচিত্রে লাল, হলুদ এবং সবুজ রঙের বিভাজন থাকবে। যে-এলাকায় কোনও ভাবেই ড্রোন চালানো যাবে না, তাকে লাল রং দিয়ে চিহ্নিত করা হবে। এ ক্ষেত্রে ছাড় রয়েছে নিরাপত্তা সংস্থাকে। হলুদ চিহ্নিত এলাকায় অনুমতিসাপেক্ষে যে-কেউ ড্রোন চালাতে পারবেন। সবুজ এলাকায় নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। এলাকা-নির্ভর সেই মানচিত্র দেওয়া থাকবে ডিজিটাল স্কাই প্ল্যাটফর্মে।

‘‘আবেদন করার সময়েই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি জানতে পারবেন, যে-এলাকায় তিনি ড্রোন ব্যবহার করতে চান, সেটা কোন রঙের অন্তর্ভুক্ত। কোন এলাকায় কে কখন ড্রোন ব্যবহার করতে চাইছেন, প্রশাসনের কাছেও সেই তথ্য থাকবে,’’ বলেন এক পুলিশকর্তা।

যাঁরা ২০০ ফুটের উপরে ড্রোন চালাতে চাইবেন, তাঁদের স্থানীয় বিমানবন্দরে ‘ফ্লাইট প্ল্যান’ জমা দিতে হবে। কবে, কখন, কোথা থেকে, কত উচ্চতায় ড্রোন উড়বে, ফ্লাইট প্ল্যানে তা লিখতে হবে। সংশ্লিষ্ট এলাকা দিয়ে সেই সময় কোনও বিমান বা হেলিকপ্টার চলবে কি না, তা খতিয়ে দেখে অনুমতি দেবে এটিসি।

বিমান মন্ত্রক জানিয়েছে, বড় বিমানবন্দরের চার পাশের পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় ড্রোন ওড়ানোর ক্ষেত্রে যে-নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তা বহাল থাকবে। যে-সব অঞ্চলে বিমান ৪০ হাজার ফুট উপর দিয়ে যায়, সেখানে ড্রোন ব্যবহারে সমস্যা নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement