‘কালো দিনে’ই কালো টাকা বিরোধী দিবস

নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে মানুষের ভোগান্তির স্মৃতিকে উস্কে দিতে গত কালই ৮ নভেম্বর কালো দিন পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ১৮টি বিরোধী দলের সমন্বয় কমিটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৩৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

আগামী ৮ নভেম্বর নোট বাতিল সিদ্ধান্তের বর্ষপূর্তি। বিরোধীরা যখন নোট বাতিলের স্মৃতিকে ফিরিয়ে এনে আক্রমণ শানাতে চাইছে, তখন ‘আক্রমণই আত্মরক্ষার শ্রেষ্ঠ উপায়’ নীতি মেনে পাল্টা আন্দোলনে নামার কথা জানাল বিজেপি। নোট বাতিলের বর্ষপূর্তির দিনে বিরোধী দলগুলি যখন ‘কালো দিন’ পালন করবে, তখন তার প্রতিবাদে গোটা দেশে ‘কালো টাকা বিরোধী দিবস’ উদ‌যাপনের কথা জানিয়েছেন অরুণ জেটলিরা। বিজেপির ওই নেতার কথায়, ‘‘এর থেকেই স্পষ্ট হয়ে যাবে কারা কালো টাকার পক্ষে আর কারা বিপক্ষে!’’

Advertisement

নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে মানুষের ভোগান্তির স্মৃতিকে উস্কে দিতে গত কালই ৮ নভেম্বর কালো দিন পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ১৮টি বিরোধী দলের সমন্বয় কমিটি। এরই মধ্যে আজ গুজরাতের নির্বাচনের দিন ঘোষণা করে কমিশন। ফলে আগামী দিনগুলিতে বিরোধী প্রচারের ধার ও ভার যে আরও বাড়বে, তা বুঝতে পারছে বিজেপিও। আর তাই বিরোধী আক্রমণ রুখতে পাল্টা কর্মসূচি নিল বিজেপি। আজ গোটা দিন ধরে কখনও অরুণ জেটলি-পীযূষ গয়াল, কখনও নিতিন গডকড়ী-মনোজ সিন্‌হার মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা যে ভাবে সরকারের সাফল্য তুলে ধরলেন, বিজেপি জানিয়েছে আগামী দিনগুলিতেও এই প্রবণতা বজায় থাকবেন। রোজই মাঠে নামানো হবে এক বা একাধিক মন্ত্রীকে। তুলে ধরা হবে সরকারের সাফল্যকে। একই সঙ্গে কাল থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত নোট বাতিলের পক্ষে দেশব্যাপী জনমত তৈরিতেও পথে নামছে বিজেপি নেতৃত্ব। যা নিয়ে কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মার কটাক্ষ, ‘‘মানুষকে পথে বসিয়ে, জুলুম করে এখন উৎসব পালন করতে চাইছে সরকার। মানুষই এর বিচার করবে।’’

নোট বাতিল ও জিএসটি-জোড়া ধাক্কায় আমজনতার মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। যার আঁচ পাচ্ছে বিজেপিও। বিশেষ করে ব্যবসায়ী সমাজ যারা বিজেপির চিরাচরিত ভোটার, তারাও যে ক্ষুব্ধ এবং সেই প্রচারকে যে কংগ্রেস তুঙ্গে নিয়ে যেতে চাইছে তাও বিজেপির অজানা নয়। ব্যবসায়ী শ্রেণির এই ক্ষোভকে কাজে লাগাতে ১ নভেম্বর সুরাত যাচ্ছেন রাহুল গাঁধী। তাই পরিস্থিতি মোকাবিলায় গত কালের মতো আজও মাঠে নামেন অরুণ জেটলি। নোট বাতিল প্রশ্নে কংগ্রেসের বিরোধিতাকে সমালোচনা করে জেটলির প্রশ্ন, ‘‘কালো টাকা আটকাতেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ছিল। এখন কংগ্রেস সরব হলেও, ক্ষমতায় থাকাকালীন কেন কালো টাকা রুখতে একটি পদক্ষেপও করতে দেখা যায়নি কংগ্রেসকে?’’

Advertisement

আজ জেটলির সাংবাদিক সম্মেলনের পরে দ্বিতীয় বার তড়িঘড়ি সাংবাদিক সম্মেলন ডাকে কংগ্রেস। আনন্দ শর্মার কথায়, ‘‘কালো টাকা উদ্ধারের উদ্দেশ্যে নোট বাতিল করা হয়েছিল। তা হলে সেই কালো টাকা গেল কোথায়? সরকারই প্রকারন্তরে স্বীকার করেছে ৯৯ শতাংশ টাকা ফিরে এসেছে।’’ কংগ্রেসের দাবি, গায়ের জোরে চাপিয়ে দেওয়া এই সিদ্ধান্তে অর্থনীতির কোমর ভেঙে গিয়েছে। বিশেষ করে অসংগঠিত ক্ষেত্রে বহু চাষি, শ্রমিক, মজদুররেরা কাজ হারিয়েছে। এই তথ্য যে অনেকাংশেই সত্যি, তা মানছে সরকারও। পাল্টা জবাবে অবশ্য জেটলি বলছেন, ‘‘কংগ্রেস চাইত অর্থনীতিতে কালো টাকা থাকুক। যারা এক সময়ে দেশের সর্বনাশ করেছে, তারাই এখন নৈতিকতার কথা বলছে!’’ যা শুনে কংগ্রেস বলছে— গুজরাতের ফলই বুঝিয়ে দেবে মানুষ কতটা ক্ষুব্ধ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement