রাজনাথ সিংহ।— ফাইল চিত্র।
জারি রয়েছে জঙ্গি হামলা। চালু রয়েছে অনুপ্রবেশও। মাঝেমধ্যেই পাথর হাতে রাস্তায় নামছেন যুবকেরা। বারবার আলোচনার রাস্তা এড়িয়ে যাচ্ছেন হুরিয়ত নেতারা। তবু দু’দিনের শ্রীনগর সফর সেরে জম্মু যাওয়ার আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ দাবি করলেন, কাশ্মীরের পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক শান্ত। পরিস্থিতি ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে।
গত দু’মাস ধরে দমননীতি ছেড়ে কাশ্মীর প্রশ্নে নরম মনোভাব দেখানোর নীতি নিয়েছে কেন্দ্র। তাতে কতটা লাভ হয়েছে তা নিয়ে সংশয় থাকলেও সরকার যে আপাতত ওই রাস্তা থেকে সরবে না, তা আজ ফের স্পষ্ট করে দেন রাজনাথ। দু’বছর ধরে কাশ্মীরে পাথর ছোড়ার ঘটনায় যারা ধরা পড়েছে, তাদের অনেকেই নাবালক। শ্রীনগরের নেহরু গেস্ট হাউসে ডাকা এক সাংবাদিক বৈঠকে রাজনাথ বলেন, ‘‘নিরাপত্তারক্ষীদের বলেছি, যাদের বয়স ১৮-র নীচে তাদের সঙ্গে যেন পোড়খাওয়া অপরাধীর মতো ব্যবহার করা না হয়।’’
রাজনাথের দাবি, জঙ্গিরা কাশ্মীরে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধ্বংস করে দিয়েছে। ‘‘আমরা আর কোনও ক্ষতি করতে দেব না,’’ বলেন তিনি। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘গরিব মানুষ, মেহনতি মানুষ, ব্যবসায়ী, পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষ— সন্ত্রাসবাদ প্রত্যেকের জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। সকলের কাছে আবেদন করছি, জঙ্গিদের হাত থেকে রাজ্যটিকে রক্ষা করুন।’’
রাজ্যে পর্যটনের উন্নয়নে কেন্দ্র বিশেষ ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন রাজনাথ। জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী কাশ্মীরের জন্য যে ৮০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন, মৃল্যবৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে তা বাড়িয়ে এক লক্ষ কোটি টাকা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এখনও সব কিছু শুকিয়ে যায়নি। চারপাশে তাকালে দেখবেন, সবুজ গাছের চারা দেখা যাচ্ছে।’’ উপত্যকার সমস্যা সমাধান সূত্র হিসেবে আলোচনার উপরেই জোর দিয়ে রাজনাথ বলেন, ‘‘দরকার হলে পাঁচ বারের বদলে পঞ্চাশ বার কাশ্মীরে আসতে রাজি আছি।’’ এ প্রসঙ্গে উঠে আসে বিতর্কিত ৩৫-এ ধারার কথাও। রাজনাথ আশ্বাস দেন, ‘‘কেন্দ্র এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থও হয়নি।’’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, নিরাপত্তাবাহিনীর পক্ষ থেকে রাজনাথকে জানানো হয়েছে, সীমান্তপারে বিভিন্ন লঞ্চপ্যাডে এই মুহূর্তে অন্তত চারশো জঙ্গি অপেক্ষা করছে, বরফ পড়ার আগে সীমান্ত পেরিয়ে কী ভাবে কাশ্মীরে ঢুকে পড়া যায়। তাদের মদত দিচ্ছে পাক সেনা ও পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। আজ ফের পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাজনাথ বলেন, ‘‘জঙ্গি ঢোকানো বন্ধ করুক পাকিস্তান। বন্ধ হোক সীমান্ত লক্ষ্য করে গুলি চালানো। নীতিগত ভাবেই ভারত প্রথমে গুলি চালাবে না। কিন্তু একবার আমাদের দিকে গুলি ছুটে এলে, পাল্টা জবাব গুলিতেই দিতে বলা হয়েছে। তখন বিএসএফকে গুলির হিসেব না দিলেও চলবে!’’