পাকিস্তানি চরকে তথ্য পাচারের অভিযোগে ধৃত সহদেব সিংহ গিল। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
পাকিস্তানি গুপ্তচরকে তথ্য পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন আরও এক জন। এ বার গুজরাতের কচ্ছ এলাকা থেকে সহদেব সিংহ গিল নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে ওই রাজ্যের এটিএস (সন্ত্রাসদমন শাখা)। ধৃত যুবক গুজরাতেরই বাসিন্দা। তিনি পেশায় স্বাস্থ্যকর্মী। পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, এক তরুণী গুপ্তচরকে বিএসএফ (সীমান্তরক্ষী বাহিনী) এবং ভারতীয় নৌসেনার গোপন তথ্য পাচার করতেন তিনি। প্রথমে যদিও জানা গিয়েছিল, বিএসএফ এবং বায়ুসেনার গোপন তথ্য তিনি পাচার করেছিলেন। পরে সংবাদ সংস্থা এএনআই সংশোধন করে জানিয়েছে, বায়ুসেনা নয়, নৌসেনার গোপন তথ্য পাকিস্তানি চরকে পাচার করেছেন সহদেব।
এটিএস সূত্রে জানা গিয়েছে, গুজরাতের কিছু সংবেদনশীল এলাকার তথ্য পাকিস্তানি চরকে পাচার করেছেন সহদেব। তাঁকে অহমদাবাদে এনে জেরা করছেন তদন্তকারীরা। গুজরাত এটিএসের এসপি কে সিদ্ধার্থ জানিয়েছেন, পাকিস্তানি চরকে বিএসএফ, ভারতীয় নৌসেনার বিষয়ে সংবেদনশীল তথ্য পাচারের জন্য ওই স্বাস্থ্যকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১ মে প্রথমে তাঁকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদের সময় সহদেব জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের জুন-জুলাই মাস নাগাদ হোয়াট্সঅ্যাপে অদিতি ভরদ্বাজ নামে একটি মহিলার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়েছিল। পরে তিনি জানতে পেরেছিলেন, ওই মহিলা আদতে পাকিস্তানি গুপ্তচর। তার পরেও যোগাযোগ রেখেছিলেন বলে অভিযোগ।
জেরায় সহদেব দাবি করেছেন, বিএসএফ এবং নৌসেনার ঘাঁটি, অন্যান্য নির্মাণের ছবি, ভিডিয়ো তুলে তাঁকে পাঠাতে বলেছিলেন অদিতি নামে ওই তরুণী। বিশেষত নতুন তৈরি হওয়া বা নির্মীয়মাণ ঘাঁটির ছবি তাঁকে ওই তরুণী পাঠাতে বলেছিলেন বলে দাবি করেছেন সহদেব। এটিএস সূত্রে জানা গিয়েছে, হোয়াট্সঅ্যাপের মাধ্যমে ওই তরুণীকে ছবি, ভিডিয়ো পাঠাতেন সহদেব। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছে, ২০২৫ সালের শুরুতে নিজের আধার কার্ডের নথি দিয়ে মোবাইলের একটি সিমকার্ড কিনেছিলেন সহদেব। সেই সিমে ওটিপি ব্যবহার করে হোয়াট্সঅ্যাপও চালু করেছিলেন তিনি। অভিযোগ, সেই হোয়াট্সঅ্যাপ নম্বরের মাধ্যমে পাকিস্তানি চর অদিতির সঙ্গে যোগাযোগ করতেন তিনি। পাঠিয়ে দিতেন ছবি ভিডিয়ো। অপরিচিত এক জনের থেকে নগদে ৪০ হাজার টাকাও পেয়েছিলেন তিনি। সেই ব্যক্তি কে, তা খুঁজে দেখছেন তদন্তকারীরা। সহদেবের মোবাইল ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন। তার পর থেকে পাকিস্তানের হয়ে চরবৃত্তির অভিযোগে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেশির ভাগই হরিয়ানা, পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। হরিয়ানার জ্যোতি মলহোত্রাকে এই অভিযোগেই গ্রেফতার করেছে হরিয়ানা পুলিশ। নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাই কমিশনের এক আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ৩৩ বছরের জ্যোতির। ওই আধিকারিককে আগেই ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেছে ভারত। জ্যোতির সঙ্গে ওই আধিকারিকের মাধ্যমে পাক গুপ্তচরদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই আবহে গুজরাত থেকে ধৃত আরও এক জন।