গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণি।
গুজরাতের নর্মদায় শুক্রবার নির্বাচনী সভা হচ্ছিল মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণীর। সেই সভাতেই দেখা গেল এক তরুণীকে হিড়হিড় করে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছেন মহিলা পুলিশকর্মীরা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিও মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে যে তরুণীকে দেখা যাচ্ছে তিনি দলিত সম্প্রদায় থেকে উঠে আসা প্রয়াত বিএসএফ জওয়ান অশোক তড়ভি-র মেয়ে বছর ছাব্বিশের রূপাল তড়ভি।
রূপালের দাবি, কর্মরত অবস্থাতেই শহিদ হন তাঁর বাবা অশোক। পাশাপাশি রূপাল এ-ও দাবি করেন, বাবার মৃত্যুর পর রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তাঁদের পরিবারকে জমি দেবে। কিন্তু, সেই প্রতিশ্রুতি রাখেনি সরকার। সেই দাবি জানাতেই ওই র্যালিতে এসেছিলেন রূপাল। দর্শকদের আসনে বসেছিলেন তিনি। রূপাণী যখন মঞ্চে ভাষণ দিচ্ছিলেন, সেই সময় দর্শকাসন ছেড়ে উঠে ‘আমি দেখা করতে চাই…’ বলে চিত্কার করতে করতে মঞ্চের দিকে ছুটে যান রূপাল। তখনই তাঁকে আটকায় মহিলা পুলিশকর্মীরা। রীতিমতো ধস্তাধস্তি চলে। এ ঘটনা চোখে পড়তেই মুখ্যমন্ত্রী বক্তৃতা থামিয়ে মঞ্চ থেকে বলেন, “আপনার সঙ্গে সভা শেষে দেখা করব।”
আরও পড়ুন: সেনাকর্তার বিরুদ্ধে ব্যারাকে প্যামফ্লেট বিলি, পিছনে কি আইএসআই?
পরে যদিও রূপালের সঙ্গে রূপানি দেখা করেননি বলে আধিকারিকরা সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানান। তবে, এই ঘটনার পরই শহিদ পরিবারকে যাবতীয় সুযোগ সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
আর এই ঘটনাকেই হাতিয়ার করে বিজেপি-র বিরুদ্ধে ময়দানে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। দলের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী টুইট করেন, “বিজেপির ঔদ্ধত্য চরম পর্যায়ে। ‘পরম দেশভক্ত’ রূপাণীজি শহিদের মেয়েকে সভা থেকে বের করে দিয়ে মানবতাকে অপমান করেছেন। প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও ১৫ বছর ধরে তাঁর পরিবার কোনও সাহায্য পায়নি সরকারের কাছ থেকে। আজ বিচার চাইতে এসেও অপমানিত হতে হলে তাঁকে!”
আরও পড়ুন: ‘অক্ষি’তে নিখোঁজ ১০২, ঝড়ের গতিপথ বুঝে তল্লাশি শুরু আলাপুঝায়
রাহুলের এই টুইটের পাল্টা জবাবও দিয়েছেন রূপাণী। তিনি লেখেন, ‘‘শহিদের নামে সস্তার রাজনীতি বন্ধ করুন রাহুল। দুর্নীতির জন্যই আজ সব জায়গা থেকে কংগ্রেসকে ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে মানুষ।” পাশাপাশি তিনি এই বার্তাও দেন, অশোকভাই তড়ভির স্ত্রী রেখাবেন তড়ভিকে বিজেপি সরকার ৪ একর জমি, ১০ হাজার টাকা মাসিক পেনশন এবং ৩৬ হাজার টাকা বার্ষিক পেনশনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, রাস্তার ধারে ২০০ বর্গ মিটার জায়গাও দেওয়া হয়েছে।
আদর্শ সোসাইটি কেলেঙ্কারি নিয়েও কংগ্রেসকে এ দিন ফের আক্রমণ করেন রূপাণী। প্রশ্ন তোলেন, মুম্বইয়ের অভিজাত এলাকায় যেখানে শহিদ জওয়ানদের পরিবারকে ঘর দেওয়ার কথা ছিল, তা না করে রাজনীতিবিদ, আমলা এবং সেনা আধিকারিকদের কী ভাবে সেখানে ঘর দেওয়া হল? এক পদ এক পেনশন নিয়েও কংগ্রেস যে ব্যর্থ হয়েছে এ দিন সে কথাও বলেন রূপাণী।