ছবি: সংগৃহীত।
গলার কাঁটা সুরাত। শাসক বিজেপিকে সমস্যায় ফেলে দেওয়া পাতিদার আন্দোলনের গড়ও বটে। তাই শাসক দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রশমনে সুরাতের পাঁচটি আসনেই প্রার্থী বদলের সিদ্ধান্ত নিল পদ্ম-শিবির। আজ বিজেপির যে তৃতীয় তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে সুরাতের কাটারগাম কেন্দ্রে টিকিট দেওয়া হয়নি বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্য তথা হার্দিক পটেলের সবচেয়ে বড় বিরোধী বলে পরিচিত নানুভাই ভানানিকে। পাতিদার সম্প্রদায়কে ইতিবাচক বার্তা দিতেই বিজেপি এই কৌশলী পদক্ষেপ করেছে বলে দলের অন্দরের খবর।
কংগ্রেস কাল তাদের প্রথম প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করার পরেই তাদের দলীয় দফতরে টিকিট না পাওয়ারা ঝামেলা বাধান। আজ বিজেপির তৃতীয় তালিকা প্রকাশের পরে কার্যত সেই ছবিই দেখা গেল গেরুয়া কার্যালয়ে। এর আগের দু’টি তালিকায় স্থান পাননি প্রাক্তন মন্ত্রী আই কে জাডেজা। গত দু’দিন ধরে তাই হত্যে দিয়ে পড়েছিলেন দলীয় কার্যালয়ে। প্রাক্তন ওই মন্ত্রী ভেবেছিলেন তৃতীয় দফায় শিকে ছিড়বে। কিন্তু তা হয়নি দেখে আরও এক দফা ঝামেলা করার পরে আপাতত দিল্লির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের শরণাপন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
আসলে প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যে এ বার টিকিট বণ্টনে আগাগোড়াই কৌশলী অমিত শাহ-নরেন্দ্র মোদীরা। সেই কারণে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আনন্দীবেন পটেলের ঘনিষ্ঠ হয়েও স্রেফ পটেল পরিচিতির জন্য টিকিট পেয়েছেন সৌরভ পটেল। অথচ এই আনন্দীবেনের জায়গায় মুখ্যমন্ত্রিত্ব পেয়েই মন্ত্রক থেকে এই সৌরভকে সরিয়ে দিয়েছিলেন বিজয় রূপাণী। আবার স্থানীয়দের ক্ষোভ মাথায় রেখে জামনগর (দক্ষিণ) বিধানসভা কেন্দ্রে টিকিট পাননি আনন্দীবেনের বোন বাসুবেন ত্রিবেদী। সেখানে টিকিট পেয়েছেন আর সি ফালদু। প্রথমে ফালদুকে তাঁর জেতা আসন জামনগর (গ্রামীণ) আসন থেকে টিকিট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দল। তাঁর বদলে টিকিট পান কংগ্রেস থেকে সদ্য বিজেপিতে আসা রাঘবজী পটেল। বহিরাগত ওই পটেল নেতার নাম ঘোষণা হতেই বিক্ষোভে নামেন স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা। এতে জামনগরের অন্যান্য আসন হাতছাড়া হতে পারে, এই আশঙ্কায় ফালদুকে আজ টিকিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দল।
নির্বাচনের আগে হার্দিক পটেলের আন্দোলনকে ভাঙতে সক্রিয় বিজেপি। যে ভাবে গুজরাতে আসন সমঝোতা নিয়ে কংগ্রেস ও হার্দিকের দলের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়েছে, তাতে খুশি অমিত শাহেরা। এই পরিস্থিতিতে আজ পাতিদারদের ক্ষোভকে প্রশমন করতে তাদের শক্ত ঘাঁটি সুরাতের পাঁচটি আসনেই নতুন প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। এই সিদ্ধান্তে শাসক দল তথা বর্তমান বিধায়কদের ব্যাপারে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার যে হাওয়া আছে, তা-ও মোকাবিলা করা যাবে বলেই মনে করছে তারা।