হার্দিক পটেল
ধারাবাহিক বৈঠক করে দীর্ঘ দর কষাকষির পর হার্দিক পটেলের সঙ্গে রফা হয়েছিল রাহুল গাঁধীর। তার ভিত্তিতে গত কাল সন্ধ্যায় গুজরাতের কংগ্রেস সভাপতি জানিয়েছিলেন, জট কেটেছে। সব বিষয়েই একমত হওয়া গিয়েছে। কিন্তু গভীর রাত থেকে শুরু হল আসন নিয়ে ক্ষোভ। ফলে গুজরাত ভোটের আগে অস্বস্তিতে বিরোধী শিবিরে।
কংগ্রেস ‘কথা না রাখায়’ প্রবল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে পাতিদার সংগঠন ‘পাস’ (পাতিদার অনামত আন্দোলন)। প্রার্থিত আসন পাওয়া যায়নি— এই অভিযোগে রবিবার গভীর রাত থেকে সুরাতে শুরু হয় বিক্ষোভ। পাস-এর সদস্যরা পটেল অধ্যুষিত ভারুচা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থীর অফিস ঘেরাও করে। ধস্তাধস্তি এবং ভাঙচুরও হয়।
আরও পড়ুন: পাতিদার অঙ্কেই প্রার্থী বদল পদ্মের
ঘটনার জেরে আজ রাজকোটের প্রস্তাবিত জনসভা বাতিল করে দিয়েছেন হার্দিক। তাঁকে সঙ্গত কারণেই সংগঠনের অন্য নেতাদের চাপে পড়তে হচ্ছে। অথচ কাল হার্দিকই জানিয়েছিলেন, রাহুল গাঁধীর দল চাকরি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে সংরক্ষণ নিয়ে তাঁদের সব দাবিই মেনে নিয়েছে। কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁদের জোট নিয়ে সোমবার রাজকোটের জনসভা থেকেই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করবেন তিনি, এমনটাও জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সতীর্থ নেতাদের ক্ষোভের পরে সেই জনসভাই বাতিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হল।
বিষয়টি নিঃসন্দেহে অস্বস্তিতে ফেলেছে কংগ্রেসকে। কাল ৭৭ জনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে কংগ্রেস। তার মধ্যে কুড়ি জনের উপর পাতিদার নেতা রয়েছেন এ কথা ঠিক। কিন্তু অধিকাংশই কংগ্রেস নেতা। হার্দিকের পাস সংগঠনের থেকে মাত্র দু’জনকে টিকিট দেওয়া হয়েছে। পাস-এর বক্তব্য, এতে তাদের প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব থাকছে না। তাদের বক্তব্য, ২০টি আসন চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু দেওয়া হয়েছে মাত্র দু’টি (ললিত ভাসোয়া এবং অমিত থুম্মার)। পাস-এর স্থানীয় আহ্বায়ক অল্পেশ ক্ষত্রিয়ের কথায়, ‘‘সংগঠনের দু’জনকে বাদ দিয়ে বাকি যে সব পাতিদারদের টিকিট দেওয়া হয়েছে তারা কংগ্রেসের। শুধু কংগ্রেস বলেই নয়, ওরা অপদার্থ।’’ পাশাপাশি সহ আহ্বায়ক দীনেশ বাম্ভাবনিয়ার কথায়, ‘‘আমাদের কোর কমিটির সঙ্গে কোনও কথা না বলেই তালিকা ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। এমনটা হওয়ার কথা ছিল না।’’
রাতের দিকে কংগ্রেস এ দিন আরও ১৩টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে। তার একটিতে পাস-এর অমিত থুম্মারের বদলে কংগ্রেসের নেতাকে টিকিট দেওয়া হয়েছে। আর ভারুচে কংগ্রেসেরই কিরণ ঠাকুরকে বদলিয়ে জয়েশ পটেলকে দেওয়া হয়েছে। এ দিনের ১৩টির মধ্যে মোট ৪টি আসনে নামের রদবদল হয়েছে। ফলে প্রথম দফার ৮৯টি আসনের পূর্ণাঙ্গ তালিকা মিলল না। মঙ্গলবার মনোনয়ন পেশের শেষ দিন।
গোটা বিষয়টি নিয়ে কার্যত এখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে দু’পক্ষে। হার্দিক আজ টুইট করে কৌশলে কংগ্রেসকে বার্তা দিয়েছেন যে তাঁরা অসন্তুষ্ট। সেখানে তাঁর কর্মীদের রাজনীতিতে জড়িয়ে না পড়তে যেমন উপদেশ দিয়েছেন তিনি, পাশাপাশি পদ্য-ছন্দে লিখেছেন ‘মনে রেখো তোমাদের কী প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। অবশ্য কে কী বলেছিল তা এখন কী ভাবেই বা মনে করবে!’