নিজের হাতের চুড়ি ছুড়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর দিকে। মাসখানেক আগে বডোদরায় নরেন্দ্র মোদীর রোড-শোতে। এখন ‘চুড়ি’র প্রতীকেই সেখান থেকে নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়ছেন চন্দ্রিকা সোলাঙ্কি।
এক শহিদ-কন্যাকে মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণীর সভায় টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। উত্তরপ্রদেশের পুরভোটে হারের দিনেও যা নিয়ে সরব হয়ে রাহুল গাঁধী কটাক্ষ করেছেন বিজেপির ‘অহঙ্কার’-কে।
গুজরাতে মহিলা-মহলে জনপ্রিয়ই ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সেখানেও এখন ভাটা পড়ছে। বরং মোদীর গড়ে রাহুলের প্রচার-গাড়ির মাথায় চড়ে নিজস্বী তুলতে দেখা গিয়েছে এক তরুণীকে। দু’দফার ভোট প্রচারের শেষে ফের গুজরাতে যাওয়ার আগে মোদীর হাতে এখনও দু’দিন। তার ফাঁকে সুযোগ হাতছাড়া না করে আজ বারাক ওবামার সঙ্গে বৈঠকের পরেই দিল্লিতে বসে গুজরাতের মহিলাদের উদ্দেশে একটি ছোটোখাটো ‘ভিডিও-জনসভা’ সেরে ফেললেন প্রধানমন্ত্রী। নিজের ‘নমো-অ্যাপে’র মাধ্যমে। মহিলাদের আবেদন করলেন, জাতপাতের অঙ্কে বিভাজন নয়, সকলে মিলে আরও ভোট দিন।
কংগ্রেস বলছে, উত্তরপ্রদেশের পুরভোট নিয়ে দিনভর গলা ফাটিয়েও যে বিজেপির শঙ্কা মিটছে না, এটাই তো তার প্রমাণ। তা না হলে আগামিকাল মনমোহন সিংহ গুজরাতে জিএসটি নিয়ে বলতে যাওয়ার আগে অমিত শাহ তাঁকে ‘নমুনা’ বলে সম্বোধন করেন? প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এমন শব্দচয়ন! যে মনমোহনকে ওবামাও আজ দিল্লিতে বসে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে গিয়েছেন।
আর মহিলাদের প্রধানমন্ত্রী বোঝাচ্ছেন, উত্তরপ্রদেশের জয় আসলে নোটবন্দি, জিএসটির জয়। তাঁদের বলছেন, জাতপাতের ঊর্ধ্বে উঠতে। কংগ্রেসের নেতা সঞ্জয় ঝা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যতই বলুন যে, দুই রাজ্যের ভোট আলাদা। গুজরাতে বিজেপির হার নিশ্চিত।’’
বিজেপির ছোট-বড় কোনও নেতারই যদিও গুজরাতের জয় কোনও সংশয় নেই। কিন্তু তাঁদের চিন্তা, ভোটের আর আট দিন মাত্র বাকি। এখনও গুজরাতে সে ভাবে মোদী তথা বিজেপির হাওয়া উঠছে কই? আগে লড়াই একতরফা ছিল। এখন হাওয়া তোলার চেষ্টা হলেই রাহুল-ব্রিগেড তা ভোঁতা করছে। নরম-হিন্দুত্ব তাসে রাহুল যে ভাবে জাতপাতের অঙ্ক সাজিয়েছেন, তা মোকাবিলা করতে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে দলকে। বিজয় রূপাণীর বদলে পাতিদার নেতা নিতিন পটেলকে ভোটের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী করে দেওয়া হবে কি না, তা নিয়েও জোর চর্চা ভোট বাজারে। প্রতি রাতেই আসন ধরে ধরে বৈঠক করছেন অমিত শাহ। এরই মধ্যে বিজেপি আজ ২৪ জনকে দল থেকে বার করে দিতে বাধ্য হয়েছে। কারণ, এঁরা সকলেই লড়ছেন দলের ঘোষিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে।