গুজরাতে ধৃত সিরিয়ার নাগরিক। ছবি: সংগৃহীত।
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়ার বাসিন্দাদের সাহায্য করার নামে টাকা তুলছিলেন সিরিয়ার এক নাগরিক। সেই টাকা পাঠানো তো দূর অস্ত্ , সংগৃহীত টাকা নিয়ে নিজের শখ-আহ্লাদ মেটাতেন, এমনকি বিলাসবহুল জীবনযাপনও শুরু করেছিলেন। অবশেষে গুজরাত পুলিশের জালে সিরিয়ার সেই যুবক। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, গুজরাতে যাওয়ার আগে প্রায় দু’সপ্তাহ কলকাতায় ছিলেন তাঁরা।
ধৃতের নাম মেঘাত আল-আজ়হার। তাঁকে এলিস ব্রিজ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেঘাত এবং সিরিয়ার আরও তিন নাগরিক জ়াকারিয়া হাইথাম আলজ়ার, আহমেদ আলহাবাস এবং ইউসুফ আল-আজ়হার এলিস ব্রিজ এলাকাতে একটি হোটেলে ছিলেন। সেখান থেকেই মেঘাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেঘাত গ্রেফতার হতেই তাঁর তিন সঙ্গী গা ঢাকা দিয়েছেন।
অহমদাবাদের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) শরদ সিঙ্ঘল জানিয়েছেন, বেশ কিছু দিন ধরেই পুলিশের কাছে খবর আসছিল গাজ়াবাসীদের সাহায্য করার নামে টাকা তোলা হচ্ছে। কিন্তু কারা টাকা তুলছেন, সেই বিষয়টি স্পষ্ট ছিল না পুলিশের কাছে। খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারা যায়, এলিস ব্রিজ এলাকার কয়েক জন যুবক এই টাকা তুলছেন। নজরদারি শুরু করে পুলিশ। পরে গোপন সূত্রে তারা জানতে পারে, যাঁরা টাকা তুলছেন, তাঁরা ভারতের নাগরিকই নন। সিরিয়ার নাগরিক। তখনই সন্দেহ হয় পুলিশের। তার পরই ওই এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে একটি হোটেল থেকে মেঘাতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু তাঁর তিন সঙ্গীর খোঁজ মেলেনি। তাঁদের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি করা হয়েছে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বিপুল টাকা তোলা হয়েছিল। সেই টাকা দিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছিলেন অভিযুক্তেরা। সিরিয়ার চার নাগরিক পর্যটক ভিসায় গত ২২ জুলাই কলকাতায় আসেন। সেখান থেকে ২ অগস্ট তাঁরা অহমদাবাদ পৌঁছোন। সেখানে একটি হোটেলে ওঠেন। যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘অভিযুক্তেরা স্থানীয় মসজিদগুলি থেকে টাকা তুলছিলেন। গাজ়ার ছবি এবং ভিডিয়ো দেখিয়ে সহানুভূতি আদায় করছিলেন। ধরা পড়ার পরেও অভিযুক্তেরা দাবি করেন, গাজ়ার বাসিন্দাদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করছিলেন।’’ কিন্তু এ রকম কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে দাবি যুগ্ম কমিশনারের।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, হঠাৎ কোন উদ্দেশে ভারতে এসেছিলেন সিরিয়ার এই নাগরিকেরা, কেন তাঁরা প্রথমে কলকাতায় গেলেন— এই সব প্রশ্ন ভাবাচ্ছে পুলিশকে। গাজ়াবাসীদের সাহায্যের নামে টাকা তোলার নামে কি রেকি করছিলেন তাঁরা? ধৃতদের কাছে থেকে সাড়ে ৩ হাজার মার্কিন ডলার এবং ভারতীয় মুদ্রার ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে। অহমদাবাদ পুলিশের অপরাধদমন শাখা, গুজরাতের সন্ত্রাসদমন শাখা এবং জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) একযোগে তদন্ত শুরু করেছে।