National News

পুলিশের হাত থেকে রাম রহিমকে ছিনিয়ে নিতে চেয়েছিলেন ভক্তেরা

হরিয়ানা পুলিশ জানিয়েছে, জোড়া ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত ঘোষণার পরই বিচারক রাম রহিমকে রোহতকে পাঠানোর নির্দেশ দেন। গত ২৮ অগস্ট সেখানেই তাঁর রায় ঘোষণা হবে বলে জানান বিচারক। সেই মতো রাম রহিমকে স্করপিও গাড়িতে নিয়ে পুলিশের একটি দল আদালত চত্বর থেকে বেরোচ্ছিল। পিছনেই একটি এসইউভি গাড়িতে ছিল রাম রহিমের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীরা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

রোহতক শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৭ ১৪:২৩
Share:

রাম রহিমের ছক বানচাল করে দিল হরিয়ানা পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত।

দোষী সাব্যস্ত হওযার পর পূর্বপরিকল্পিত ভাবে রাম রহিমকে নিয়ে পালানোর ছক কষেছিলেন তাঁর ভক্তরা। এর পিছনে রাম রহিমের হাত ছিল। সেই মতো কাজও শুরু করে দিয়েছিলেন তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা। এ অভিযোগ হরিয়ানা পুলিশের। এ নিয়ে পঞ্চকুলা থানায় এফআইআর দায়ের করেছে তারা। মজার কথা, ওই নিরাপত্তারক্ষীদের মধ্যে হরিয়ানা পুলিশের কয়েক জন কর্মীও রয়েছেন। রাম রহিমের নিরাপত্তার জন্যই তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ।

Advertisement

জোড়া ধর্ষণ মামলায় গত শুক্রবার পঞ্চকুলায় বিশেষ সিবিআই আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন ডেরা সচ্চা সৌদা প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিংহ। সে মামলায় রায় যদি রাম রহিমের বিরুদ্ধে যায় তবে তাঁকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার নিখুঁত পরিকল্পনা করেছিলেন ডেরার ভক্তগণ। কিন্তু তাঁদের সে ছক বানচাল করে দেয় হরিয়ানা পুলিশ। পঞ্চকুলার আদালত চত্বরে যে যথা সময়ে অতিরিক্ত পুলিশকর্মী এসে উপস্থিত হবে তা তাঁরা ভাবতেও পারেননি। নিউজ ১৮-এর প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুযায়ী, হরিয়ানা পুলিশের তত্পরতায় শেষমেশ সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

আরও পড়ুন

Advertisement

মেয়ে? ওদের আমি বিছানায় দেখেছি, বলছেন হানিপ্রীতের প্রাক্তন স্বামী

ভারতীয় এই ‘বাবা’দের সম্পত্তির পরিমাণ শুনলে চমকে উঠবেন!

বেঞ্চে পিরিয়ডসের রক্ত, বার করে দিলেন শিক্ষিকা, আত্মঘাতী ছাত্রী

কী ভাবে বানচাল হল সে পরিকল্পনা?

হরিয়ানা পুলিশ জানিয়েছে, জোড়া ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত ঘোষণার পরই বিচারক রাম রহিমকে রোহতকে পাঠানোর নির্দেশ দেন। গত ২৮ অগস্ট সেখানেই তাঁর রায় ঘোষণা হবে বলে জানান বিচারক। সেই মতো রাম রহিমকে স্করপিও গাড়িতে নিয়ে পুলিশের একটি দল আদালত চত্বর থেকে বেরোচ্ছিল। পিছনেই একটি এসইউভি গাড়িতে ছিল রাম রহিমের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীরা। ওই গাড়িতে ইলেকট্রনিক সিগন্যাল জ্যামিংয়ের মতো অত্যাধুনিক ব্যবস্থা ছিল। হঠাত্ই ওই এসইউভিটি গাড়িটি গতি বাড়িয়ে পুলিশের কনভয়ের মধ্যে ঢুকে পড়ে। এর পর গাড়ির মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসে হরিয়ানা পুলিশের কম্যান্ডো বাহিনীর কালো পোশাক পরা ছ’জন। যাঁরা রাম রহিমের নিরাপত্তারক্ষার কাজে ছিলেন। গাড়ি থেকে নেমেই তাঁরা চেঁচাতে থাকেন, “আমরা পিতাজিকে আমাদের সঙ্গে নিয়ে যাব।” শুধু তা-ই নয়, এর পর ওই এসইউভিটি গাড়িটির ড্রাইভারকে নির্দেশ দেন, ওই চত্বরে উপস্থিত পুলিশকর্মীদের উপর গাড়ি চালিয়ে দিতে। বেগতিক দেখে ঘটনাস্থলে দ্রুত এসে পৌঁছন অতিরিক্ত পুলিশকর্মী। তাঁদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বেধে যায় ওই নিরাপত্তারক্ষীদের। এর পর ওই ছ’জনকে পাকড়াও করে ফেলে তাঁরা।

আরও পড়ুন

গুরমিতকে নিয়ে মুখ খুলবেন অনেক নির্যাতিতা, দাবি ডেরা সদস্যদেরই

বৈবাহিক ধর্ষণ অপরাধ নয়, আদালতে সওয়াল কেন্দ্রের

হরিয়ানা পুলিশের আইজি কে কে রাও জানিয়েছেন, রাম রহিমের সাত জন নিরাপত্তারক্ষীদের মধ্যে পাঁচ জন পুলিশকর্মী। যে এসইউভি গাড়িতে তাঁরা ছিলেন তাতে তল্লাশি চালিয়ে অটোমেটিক মেশিনগান, কার্তুজ-সহ অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। ওই সাত জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন ছাড়াও একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। আইজিপি বলেন, “গোটাটাই আগে থেকে প্ল্যান করা ছিল। কোর্টে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর একটি লাল রঙের ব্যাগ চান রাম রহিম। ওইটাই ভক্তদের কাছে একটা সিগন্যাল ছিল। যাতে তাঁর ভক্তেরা আদালত চত্বরে গণ্ডগোল বাধাতে পারেন। সেই মতো গণ্ডগোলও শুরু করেন ভক্তেরা। তা বুঝতে পেরেই ডিসিপি সুমিতের স্করপিও গাড়িতে করে রাম রহিমকে আদালতকক্ষের বাইরে বের করে আনা হয়। আইজি আরও বলেন, “আদালত চত্বরে দু’বার কাঁদানে গ্যাস ছোড়েন তাঁর ভক্তেরা। সেটাই গণ্ডগোল শুরুর সিগন্যাল ছিল।” তবে শেষমেশ রাম রহিমের সমস্ত পরিকল্পনাই বানচাল হয়ে যায়। হেলিকপ্টারে উড়িয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় সুনারিয়ার জেলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন