ধৃত আইনজীবী মুসারফ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
পেশায় আইনজীবী। তবে কাজ করতেন পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর হয়ে। এমনটাই সন্দেহ তদন্তকারীদের। সেই অভিযোগেই গ্রেফতার গুরুগ্রামের মুসারফ নামে এক যুবক! এর আগে একই অভিযোগে তাঁর বন্ধু রিজ়ওয়ানকে হরিয়ানার নুহ্ থেকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, মুশারফের দু’টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। টাকা সংগ্রহ করতে অন্তত সাত বার অমৃতসরে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কেন টাকা সংগ্রহ করছিলেন, তা স্পষ্ট নয়।
মুশারফ তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, সোহনা আদালতে ২০২২ সালে ইন্টার্নশিপ করার সময় তাঁর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল রিজ়ওয়ানের। গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। পরে মুশারফ নুহ্ আদালতে আইনি প্র্যাকটিস শুরু করেন। আর রিজ়ওয়ান গুরুগ্রামে প্র্যাকটিস করতেন। তবে দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্ব অটুট ছিল। বার কয়েক দু’জনে ঘুরতেও গিয়েছিলেন।
মুশারফ পুলিশকে আরও জানিয়েছেন, তিনি আর রিজ়ওয়ান গত জুলাই মাসে অমৃতসরে ওয়াঘা সীমান্তে গিয়েছিলেন। তার পরে যান স্বর্ণমন্দিরে। সেখানেই কয়েক জনের থেকে টাকার ব্যাগ সংগ্রহ করেন রিজ়ওয়ান। তবে তাঁরা কারা তা শনাক্ত করতে পারেননি মুশারফ। গাড়িতে করে অমৃতসর গেলেও ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তাঁরা। ক্ষতিগ্রস্ত হয় গাড়িটি। ফলে ট্রেনে ফিরতে হয় তাঁদের।
ধৃত আইনজীবী আরও জানিয়েছেন, গত ১ অগস্ট রিজ়ওয়ানের সঙ্গে তিনি আবার অমৃতসর যান। তাঁদের গাড়িটিকে ফিরিয়ে আনার জন্য। রাতে একটি হোটেলে থেকে যান মুশারফ, তবে ফিরে যান রিজ়ওয়ান। টাকা নিয়ে আবার ফিরে যাওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন তিনি। জেরার মুখে মুশারফ আরও জানান, রিজ়ওয়ান বার বার অমৃতসর গিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল টাকা তোলার।
তদন্তে যে দুই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের কথা জানা যায়, তার মধ্যে একটি কয়েক মাস আগে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কারণ, ওই অ্যাকাউন্টে টাকা জমা থাকার নির্দিষ্ট পরিমাণ অতিক্রম করেছিল। তদন্তকারীদের অনুমান, পাকিস্তানি হ্যান্ডলারদের থেকে হাওলার মাধ্যমে টাকা ঢুকেছিল। আরও ধারণা, ওই টাকা পঞ্জাবের জঙ্গি নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করতে কাজে ব্যবহার হয়েছিল।
গত মাসের শেষের দিকে রিজ়ওয়ানকে গ্রেফতার করা হয়। সূত্রের খবর, জেরার সময় রিজ়ওয়ানের বয়ানে বেশ কিছু জায়গায় অসঙ্গতি ধরা পড়ে। বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন (ইউএপিএ) এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতার যথাযথ ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করেন আধিকারিকেরা। ভারতের বেশ কিছু সংবেদনশীল তথ্য পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থার কাছে তিনি পাচার করেছেন বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের।