হাদিয়ার বিয়ে বৈধ, রায় সুপ্রিম কোর্টের

এর আগে হাদিয়ার বিয়ে ‘অবৈধ’ জানিয়ে বাতিল করে দিয়েছিল কেরালা হাইকোর্ট। বলেছিল, চাপ দিয়ে, মগজ ধোলাই করে তাঁকে বিয়ে করেছিলেন শাফিন। সেই রায় আজ খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৮ ০৩:২১
Share:

সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।

শাফিন জহানের সঙ্গে কেরলের মেয়ে হাদিয়ার বিয়ে আইনি ও বৈধ এবং নিজের ইচ্ছায়, স্বজ্ঞানে তিনি এই সম্পর্ক তৈরি করেছেন, ‘লভ জেহাদ’ মামলায় আজ এই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

এর আগে হাদিয়ার বিয়ে ‘অবৈধ’ জানিয়ে বাতিল করে দিয়েছিল কেরালা হাইকোর্ট। বলেছিল, চাপ দিয়ে, মগজ ধোলাই করে তাঁকে বিয়ে করেছিলেন শাফিন। সেই রায় আজ খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি এএম খানউইলকর ও বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, হাদিয়া ও শাফিনের বিয়ে বহাল রাখা হচ্ছে। বেঞ্চ জানিয়েছে, হাদিয়ার সঙ্গে তাঁরা আলাদা ভাবে কথা বলেছে। স্বজ্ঞানে তিনি শাফিনকে বিয়ে করেছেন। কোর্ট আরও জানিয়েছে, ওই দু’জনের বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হল। তাঁরা স্বামী-স্ত্রীর মতোই এক সঙ্গে থাকতে পারবেন। ‘লভ জেহাদ’-এর তদন্তের নামে কোনও সংস্থা ভবিষ্যতে তাঁদের হেনস্থা করতে পারবে না।

আগেই জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র হাত থেকে হাদিয়ার বিয়ের তদন্তের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল শীর্ষ আদালত। বলেছিল, ‘‘আপনারা তদন্ত করতেই পারেন, তবে ওঁদের বিয়ে নিয়ে নয়। লভ জেহাদ নিয়ে তদন্ত চলুক।’’

Advertisement

‘লভ জেহাদ’ নিয়ে মামলাই শুরু হয়েছিল এই অভিযোগে, যে ধর্মান্তকরণের উদ্দেশ্যে মুসলিম যুবকেরা অ-মুসলিম মেয়েদের বিয়ে করছে। এবং তার পরে তাদের জঙ্গি কার্যকলাপে ব্যবহার করা হচ্ছে। হাদিয়া-মামলা প্রকাশ্যে আসে যখন কেরালা হাইকোর্ট শাফিনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে অবৈধ ঘোষণা করে। হাদিয়াকে তাঁর বাবা-মায়ের কাছে পাঠিয়ে দেয়। কেরালা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন শাফিন। গত বছর ২৭ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট হাদিয়াকে মা-বাবার ‘হেফাজত’ থেকে মুক্ত করে কলেজে যাওয়ার অনুমতি দেয়।

এ সপ্তাহের গোড়াতেও হাদিয়ার বাবা কেএম অশোকন শীর্ষ আদালতের কাছে দাবি করেন, তাঁর তৎপরতার জন্যই মেয়ে এখনও ‘জঙ্গিদের হাতে’ পড়েননি। না হলে এত দিনে হাদিয়াকে সিরিয়ার মতো কোনও জঙ্গি-অধ্যুষিত দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হত। হয় ‘যৌনদাসী’, নয় তো ‘মানববোমা’ হিসেবে ব্যবহার করা হত মেয়েকে। অশোকন আরও জানিয়েছিলেন, খুবই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে রয়েছেন তাঁর মেয়ে। বলেন, ‘‘অসহায় অবস্থায় সম্পূর্ণ অপরিচিত একটি লোকের হাতে নিজেকে তুলে দিয়েছিল ও। এবং তার পর কাউকে না জানিয়ে ধর্ম বদলায়।’’

কিন্তু হাদিয়া বারবারই দাবি করেন, তাঁর ধর্ম বদলানোর পিছনে শাফিনের কোনও ভূমিকা নেই। ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা করার পরে স্বেচ্ছায় ধর্ম বদলেছেন তিনি। ভবিষ্যতে মুসলিম হিসেবেই জীবনযাপন করতে চান। শীর্ষ আদালতের কাছে হাদিয়া বলেছিলেন, ‘‘কেরালা হাইকোর্টকে বারবার জানানো সত্ত্বেও আদালত আমার আর্জিতে সাড়া দিচ্ছে না।’’ তাঁর আরও অভিযোগ ছিল, শাফিনকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে এনআইএ।

এ দিন রায় ঘোষণার পরে হাদিয়ার বাবা অশোকন জানিয়েছেন, তিনি সুপ্রিম কোর্টের কাছে মামলাটি পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন