তেজস যুদ্ধবিমান। — ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে তেজস যুদ্ধবিমান হাতে পেতে চলেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। প্রতিরক্ষা সচিব আরকে সিংহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রথম দফায় দু’টি তেজস এমকে ওয়ান এ বিমান বায়ুসেনাকে পাঠাবে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘হিন্দুস্থান অ্যারোনটিকস লিমিটেড’(হ্যাল)। কবে এই দুই যুদ্ধবিমান ভারতীয় সেনার ভান্ডারে পাওয়া যাবে, তা-ও জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা সচিব।
সময়মতো তেজস যুদ্ধবিমান সরবরাহ করতে না পারায় বার বার ভারতীয় বায়ুসেনার প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিংহের রোষের মুখে পড়েছে হ্যাল। কেন তেজস সরবরাহে দেরি হচ্ছে, তার কারণও ব্যাখ্যা করেছে তারা। তবে তাতেও চিঁড়ে ভেজেনি। বায়ুসেনার প্রধান স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছিলেন, কথার খেলাপ হওয়ায় হ্যালের প্রতি ভরসা হারিয়েছেন তিনি। এই নিয়ে দীর্ঘ টালবাহানার পর তেজস যুদ্ধবিমান নিয়ে সুখবর শোনালেন প্রতিরক্ষা সচিব। তিনি জানান, সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে দু’টি তেজস যুদ্ধবিমান সরবরাহ করবে হ্যাল। তিনি আরও ইঙ্গিত দিয়েছেন, আরও ৯৭টি তেজস যুদ্ধবিমানের জন্য নতুন চুক্তি সই হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হালকা ওজনের, ‘মাল্টি রোল সুপারসনিক’ যুদ্ধবিমান তেজস নানা ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে সক্ষম। এর ৬৫ শতাংশেরও বেশি যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জাম ভারতীয় সংস্থাগুলি তৈরি। চিনের জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানের তুলনায় তেজসের নয়া সংস্করণ প্রযুক্তিগত উৎকর্ষে এগিয়ে বলে একাধিক আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা বিষয়ক রিপোর্টে জানানো হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে হ্যালকে ৪০টি তেজস মার্ক-১ বরাত দিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনা। তবে এখনও পর্যন্ত সেই বিমান হাতে পায়নি তারা। এ নিয়ে বার বার ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন বায়ুসেনা প্রধান। তাঁর আক্ষেপের সুরে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমরা জানি, কোনও দিনই বিমান আমাদের হাতে এসে পৌঁছোবে না, অথচ এটা জেনেও কখনও কখনও আমরা চুক্তি স্বাক্ষর করি।’’
কেন সময়মতো তেজস সরবরাহ করতে পারেনি হ্যাল? বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হ্যালের চেয়ারম্যান তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডিকে সুনীল জানিয়েছিলেন, বিমানের এফ৪০৪ ইঞ্জিন সরবরাহকারী মার্কিন সংস্থা ‘জিই অ্যারোস্পেস’-এর দেরির কারণেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিমানগুলি পৌঁছে দিতে দেরি হচ্ছে তাঁদের। সেই সব জট কাটিয়ে এ বার তেজস পাঠানো হবে ভারতীয় বায়ুসেনার কাছে।