কেসিআর-এর সভাস্থল। সৌজন্যে: টিআরএস-এর টুইটার হ্যান্ডল
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জমায়েত। আগাম ভোটের দামামা। কৃষি ঋণ মকুব। একগুচ্ছ প্রকল্প ঘোষণা। রবিবার তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির (টিআরএস) চতুর্থ বর্ষপূর্তির সভা ঘিরে এরকমই নানা জল্পনা হাওয়ায় ভাসছিল। কিন্তু কে চন্দ্রশেখর রাও ওরফে কেসিআর-এর সভাস্থল ডুবিয়ে দিল বৃষ্টি। তবে কর্মীরাও রাতারাতি ময়দানে নেমে চেষ্টা করলেন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার। কোথাও কোথাও জল সরিয়ে, কোথাও বালি ফেলে।
নাম ‘প্রগতি নিবেদন সভা’। সভাস্থল রঙ্গা রেড্ডি জেলার ২০০০ একর এলাকার বিশাল ময়দান। টিআরএস-এর দাবি, জমায়েতের নিরিখে এই সভা হবে দেশের সবচেয়ে বড়। তার জন্য চেষ্টার কসুর নেই। দু’দিন আগেই খাম্মাম জেলা থেকে ২০০০ ট্রাক্টরে ২০ হাজার কৃষক এসেছেন। সাড়ে দশ হাজার সরকারি বাসের মধ্যে প্রায় সাড়ে সাত হাজার অর্থাৎ প্রায় ৭০ শতাংশ বাসই ভাড়া করা হয়েছে সভায় লোক আনার জন্য। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এই সভার মাঠেই ঘাঁটি গেড়েছেন টিআরএস-এর বহু নেতা, মন্ত্রী, বিধায়ক সাংসদ। রাজ্যের প্রায় সর্বত্র বিশাল বিশাল কাটআউট, পোস্টার, ব্যানার, বেলুন। কার্যত গোলাপি রঙে সেজে উঠেছে গোটা তেলঙ্গানা।
কিন্তু এত আয়োজনে বাধ সেধেছিল প্রকৃতি। শনিবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় মুষলধারায় বৃষ্টি। সেই সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। প্রায় ভোর রাত পর্যন্ত এই দুর্যোগে কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে সভা ময়দান। এমনকি, কেসিআর-এর একটি বিশাল কাটআউট ভেঙে পড়ে। তবে তাতে কেউ হতাহত হননি। কিন্তু তার চেয়েও বড় অন্তরায় হয়ে ওঠে মাঠে জল দাঁড়িয়ে পড়ায়। গত কয়েক দিন ধরে যাঁরা অস্থায়ী ঘাঁটি গেরেছিলেন, তার অনেক জায়গাতেই জল দাঁড়িয়ে যায়।
আরও পড়ুন: এক বছর আগেই বিধানসভা ভাঙছে তেলঙ্গানায়? জল্পনা তুঙ্গে
তাতে অবশ্য হতোদ্যম হননি টিআরএস কর্মীরা। বৃষ্টি সামান্য কমতেই নেমে পড়েন মাঠের উন্নয়নে। গামলা, বালতি নিয়ে নেমে পড়েন জল সরানোর কাজে। অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গা থেকে বালি-মাটি এনে নীচু জায়গা ভরাট করার কাজ চলে যুদ্ধকালীন তৎপরতায়। বিশাল বিশাল কার্পেট সরিয়ে আবার পাতা হয়। কিছু কার্পেট পাল্টেও ফেলা হয়। কয়েকশো কর্মীর কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় মাঠের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়।
আরও পড়ুন: নোটবন্দি নিয়ে চুপ, মোদীর নিশানায় ‘নামদার’
সভার রাজনৈতিক তাৎপর্যও কম নয়। টিআরএস-এর বিভিন্ন সূ্ত্রে খবর, এদিনের সভাতেই বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা করতে পারেন কেসিআর। তার আগে কৃষকদের বিপুল অঙ্কের ঋণ মকুব-সহ একাধিক জনকল্যাণমুখী ঘোষণাও করতে পারেন। তাই দলের কাছে কেসিআর-এর সভার পথ সুগম করাই ছিল চ্যালেঞ্জ। রাতারাতি জল শুকিয়ে সভা ময়দানকে উপযুক্ত করার কাজে অনেকটাই সফল কর্মী সমর্থকরা।