নরেন্দ্র মোদী
নোট বাতিল নিয়ে মৌনব্রতই বজায় রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কালো টাকা, জাল নোট শেষ করতে মোদীর নোট বাতিলের কার্যকারিতা নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। প্রায় সব নোটই ব্যাঙ্কে ফিরে আসায় প্রশ্ন উঠেছে, কালো টাকা, জাল নোট কোথায় ধরা পড়ল!
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ওই রিপোর্ট প্রকাশের পর, আজ ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস ব্যাঙ্কের উদ্বোধনই ছিল মোদীর প্রথম অনুষ্ঠান। কিন্তু নোট বাতিলের সমালোচনার জবাব দিলেন না প্রধানমন্ত্রী। বরং এশিয়ান গেমসে পদক জয়ের সঙ্গে তুলনা করে ৮.২ শতাংশ বৃদ্ধির হারকে তাঁর সংস্কারের সাফল্য বলে দাবি করলেন। কিন্তু সেই সংস্কারের তালিকাতেও জায়গা পায়নি নোটবন্দি। তার বদলে সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চেই প্রধানমন্ত্রী আক্রমণ করলেন গাঁধী পরিবার ও মনমোহন সিংহের সরকারকে। দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায় ঘুরে ফিরে এল ‘পরিবার’, ‘নামদার’-এর মতো শব্দ। অভিযোগ তুললেন, ব্যাঙ্কের অনাদায়ী ঋণের বোঝার জন্য কংগ্রেসের ‘নামদার পরিবার’-ই দায়ী।
স্টেডিয়াম ভর্তি লোক। ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস ব্যাঙ্ক উদ্বোধনের অনুষ্ঠানটি কার্যত জনসভার চেহারা নিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতাও করেছেন জনসভার মেজাজেই। শুনিয়েছেন ডাক হরকরাদের সঙ্গে তাঁর ছোটবেলার স্মৃতির কথা। কানাডায় গিয়ে ‘এয়ার মেল’ নামের ছবি দেখার গল্প বলেছেন। যে ছবিতে রয়েছে চিঠি ভর্তি বিমান ভেঙে পড়ার পরে ধ্বংসস্তূপ থেকে সেগুলি উদ্ধার করে প্রাপকদের কাছে পাঠানোর কাহিনি। ইউটিউব-এ সকলকে ছবিটি দেখার অনুরোধও করেছেন মোদী। কিন্তু নোট বাতিল? উচ্চারণও করেননি।
ব্যাঙ্কের অনাদায়ী ঋণের সমস্যার জন্য আজ গাঁধী পরিবারকেই নিশানা করেন মোদী। যুক্তি দেন, স্বাধীনতার পর থেকে ২০০৮ পর্যন্ত ব্যাঙ্ক থেকে ১৮ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছিল। ২০০৮ থেকে ইউপিএ-সরকারের শেষ ছ’বছরে তা ৫২ লক্ষ কোটিতে পৌঁছে যায়। ৬০ বছরে যে পরিমাণ ঋণ দেওয়া হয়েছিল, ছ’বছরে তার দ্বিগুণ ঋণ বিলি হয়।
প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, একটি পরিবারের কাছের লোকেরাই ঋণ পেতেন। যে কোনও শিল্পপতির ঋণের প্রয়োজন হলেই নামদার লোকেদের দিয়ে ব্যাঙ্কে ফোন করাতেন। ঋণ শোধ হবে না জেনেও সেই ঋণ মঞ্জুর হত। টেবিল চাপড়ে মোদীর দাবি, অর্থনীতিকে ল্যান্ডমাইনের উপরে বসিয়ে রেখে চলে গিয়েছিল কংগ্রেস। অনাদায়ী ঋণের পাইপয়সা তিনি উদ্ধার করবেন।
সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চকে এ ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগানোয় আজ প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেন বাজপেয়ী জমানার অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা। তাঁর অভিযোগ, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবার সরকারি অনুষ্ঠানের অপব্যবহার করলেন। ওঁকে বোঝানো দরকার যে আমাদের গণতন্ত্রে এটা হয় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy