দুর্ঘটনার ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় মুখ খুললেন অভিনেত্রী তথা বিজেপি সাংসদ হেমা মালিনী। এবং সেই দুর্ঘটনায় এক শিশুকন্যার মৃত্যুর জন্য দোষ চাপালেন শিশুটির বাবার উপর। শুধু তা-ই নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় আজ হেমা একহাত নিয়েছেন সংবাদমাধ্যমকেও।
গত ২ জুলাই রাজস্থানের দৌসা জেলায় অভিনেত্রীর গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছিল অন্য একটি গাড়ির। অভিযোগ, হেমার গাড়িই অত্যন্ত দ্রুত গতিতে এসে পিছন থেকে ধাক্কা মেরেছিল ওই গাড়িটিকে। সেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় অপর গাড়িটির আরোহী, চার বছরের এক শিশুর। নাম সোনম মহাজন। সোনমের পরিবারের বাকি চার সদস্যও ওই ঘটনায় গুরুতর আহত হন। আহত হয়েছিলেন হেমাও। সোনমের বাবা, হনুমান মহাজনের অভিযোগ, দুর্ঘটনার পরে সকলে তারকা সাংসদকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় তাঁর মেয়ের দিকে কেউ খেয়ালই করেনি। ঠিক সময় মতো তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে হয়তো বেঁচে যেত তাঁর ছোট্ট মেয়েটির প্রাণ। হনুমানের এই অভিযোগের পরে সংবাদমাধ্যমও গোটা ঘটনায় হেমার ভূমিকার সমালোচনা করে।
তারই পাল্টা দিয়েছেন হেমা। টুইটারে প্রথমেই অবশ্য সোনমের বাবার ঘাড়ে সবটার দায় চাপিয়েছেন তিনি। লিখেছেন, ‘‘ওই ছোট্ট মেয়েটির মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না....ওর বাবা যদি ট্রাফিক আইন ঠিক করে মানতেন, তা হলে হয়তো এত বড় ক্ষতিটা এড়ানো যেত।’’ গাড়িতে সোনমের বাবা চালকের আসনে ছিলেন। আর সোনম ছিল তাঁরই পাশের আসনে। এত ছোট কোনও শিশুকে কেন চালকের পাশের আসনে বসানো হয়েছিল, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন হেমা। এর আগেও বিজেপির প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এই একই বিষয় নিয়ে হেমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। টুইটারে লিখেছিলেন, কোনও শিশুকে চালকের পাশে বসানো যে কোনও দেশেই অপরাধের সামিল। হেমা সেই প্রসঙ্গ তুলেই দুর্ঘটনার যাবতীয় দায় চাপিয়েছেন সোনমের বাবার উপর।
তবে হেমার মন্তব্য শোনার পরে চুপ থাকেননি হনুমানও। আজ সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘‘হেমাজির মতো সাংসদের চিন্তাধারা এত ছোট দেখে খুব খারাপ লাগছে। বড় বড় ব্যক্তিত্বরা যেখান থেকে খুশি যা কিছু বলে দিতে পারেন। যদি ওঁর সাহস থাকে তো আমার সামনে এসে যা বলার বলুন। আমি জানতে চাই কোন ট্রাফিক আইনটা আমি ভেঙেছি। আমি কি খুব জোরে গাড়ি চালাচ্ছিলাম, নাকি আমি ভুল লেনে গাড়ি ঢুকিয়েছিলাম, না আমি ইন্ডিকেটর দিইনি, নাকি আমার সিট বেল্ট বাঁধা ছিল না। আমার একটাই ভুল হয়েছিল, যে আমি গাড়িটা খুব আস্তে চালাচ্ছিলাম আর ওঁর গাড়ি ততটাই জোরে চলছিল।’’ হেমার চালক গ্রেফতারের পরে দ্রুত জামিন পেয়ে যাওয়াতেও ক্ষুব্ধ হনুমান। দুর্ঘটনার পরে জয়পুরের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে হনুমান-সহ তাঁর পরিবারের বাকি সদস্যের। হেমা তাঁদের শারীরিক অবস্থার কোনও খোঁজ নেননি কেন, সে প্রশ্নও আজ তুলেছেন সোনমের বাবা।
তবে টুইটারে সে নিয়ে কিছু বলেননি হেমা। উল্টে সংবাদমাধ্যমের উপর ক্ষোভ উগরে বলেছেন, ‘‘খবরের খোঁজে থাকা সংবাদমাধ্যম আমায় বদনাম করতে চেয়েছিল, যখন আমি গভীর যন্ত্রণায় ছিলাম। তাদের জন্য একটাই শব্দ বলতে হয়, তোমাদের লজ্জা হওয়া উচিত।’’