Herd Immunity

Herd Immunity: দেশে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে, ইঙ্গিত মিলল কেন্দ্রীয় সংস্থার সমীক্ষাতেও

সমীক্ষা জানাচ্ছে, সংগৃহীত নমুনার ৮৭.৮% রোগীই করোনার দু’টি টিকা নিয়েছিলেন। ৩৯.১% বিদেশযাত্রা করলেও ৬০.৯ শতাংশের ক্ষেত্রে তা ছিল না।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২২ ০৮:৩৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

গত কয়েক দিন ধরেই বিশেষজ্ঞেরা বার বার জানিয়েছেন, দেশে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে। এ বার নয়াদিল্লির ডিপার্টমেন্ট অব ক্লিনিক্যাল ভাইরোলজি এবং ইনস্টিটিউট অব লিভার অ্যান্ড বাইলিয়ারি সায়েন্স-এর দিল্লির পাঁচ জেলায় করা সমীক্ষাতেও উঠে এল সেই তথ্য। দেখা গিয়েছে, ডিসেম্বরের শেষে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এমন বহু মানুষ, যাঁরা সম্প্রতি বিদেশযাত্রা করেননি।

Advertisement

সমীক্ষা জানাচ্ছে, ২৬৪টি করোনা রিপোর্টের মধ্যে ৬৮.৯ শতাংশের ডেল্টা ভেরিয়েন্টের উপস্থিতি মিলেছে। ৩১.০৬ শতাংশের নমুনায় মিলেছে ওমিক্রনের উপস্থিতি। ওমিক্রন আক্রান্তদের অধিকাংশই উপসর্গহীন। তবে দ্রুত সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতার জেরে ওমিক্রনই ‘ডমিন্যান্ট স্ট্রেন’ হয়ে উঠবে বলে জানাচ্ছেন সমীক্ষকেরা।

সমীক্ষা জানাচ্ছে, সংগৃহীত নমুনার ৮৭.৮ শতাংশ রোগীই করোনার দু’ডোজ় প্রতিষেধক নিয়েছিলেন। এর মধ্যে ৩৯.১ শতাংশ সাম্প্রতিক কালে বিদেশযাত্রা করলেও ৬০.৯ শতাংশের ক্ষেত্রে তা ছিল না। এর থেকেই সমীক্ষকদের বক্তব্য, দেশে শুরু হয়ে গিয়েছে গোষ্ঠী সংক্রমণ। ওমিক্রনের প্রভাবে গোষ্ঠী সংক্রমণের বিষয়টি এই প্রথম উঠে এল দেশের কোনও সমীক্ষায়। তবে মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্য দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব প্রদীপ ব্যস জানান, সেখানে ওমিক্রন নয়, এখনও ডেল্টাই ‘ডমিন্যান্ট স্ট্রেন’।

Advertisement

দেশে করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের মধ্যেই কয়েকটি শহরে দেখা গিয়েছে সংক্রমণ কমছে। এর পরেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি করোনার আসল চিত্র গোপন করা হচ্ছে না কি করোনা পরীক্ষার সংখ্যা কমে যাওয়ায় আপাত ভাবে মনে হচ্ছে সংক্রমণ কম?

দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন আজ জানান, প্রায় ৪০০০ সংক্রমণ কমেছে। তবে স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, দৈনিক সংক্রমণ কমলেও সংক্রমণের হার (পজ়িটিভিটি রেট) ৩০ শতাংশের বেশিই। অর্থাৎ করোনা পরীক্ষা কম হওয়ায় সংক্রমণ কমে যাওয়ার বিভ্রম তৈরি হয়েছে। গত ১-১৪ জানুয়ারির মধ্যে সেখানে সংক্রমণ ৯ গুণ বাড়লেও ভেন্টিলেটরের সহায়তায় থাকা রোগী বেড়েছে দ্বিগুণ।

মুম্বইয়েও দেখা গিয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায় কমেছে সংক্রমণ। সংক্রমণ হার সামান্য কমে ১৯.৫৪ শতাংশ। তবে সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। যা গত ৬ মাসের নিরিখে সর্বোচ্চ। বেঙ্গালুরুতে গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত ২২,২৮৪ জন। পুদুচেরিতে সংক্রমণ হার ৫১.৭৫ শতাংশ।

এই পরিস্থিতিতে করোনার দাওয়াই হিসেবে মলনুপিরাভিয়ার, অ্যাজ়িথ্রোমাইসিনের যথেচ্ছ ব্যবহার না করার সুপারিশ করছেন বিশেষজ্ঞেরা। বরং আস্থা রাখছেন প্যারাসিটামলের উপরেই। শুধুমাত্র যে সমস্ত করোনা রোগী প্রতিষেধক নেননি এবং উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন তাঁদের ক্ষেত্রে খুব সতর্ক ভাবে মলনুপিরাভিয়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। ন্যাশনাল কোভিড টাস্ক ফোর্সের সঞ্জয় পূজারি জানিয়েছেন, টিকা নেননি এবং স্থূলতা রয়েছে এমন মানুষদের ক্ষেত্রে মলনুপিরাভিয়ারের সুফল দেখা গিয়েছে।

কাশ্মীরে পরিস্থিতি ক্রমশ উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। গত ১৫ দিনে সেখানকার বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে অন্তত ২৫০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমিত হয়েছেন ২ লক্ষ ৬৮ হাজারের বেশি মানুষ। মোট ওমিক্রন আক্রান্ত ৬ হাজারের গণ্ডি পেরিয়েছে। অ্যাক্টিভ রোগীও ১৪ লক্ষ পেরিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, দৈনিক সংক্রমণ হার ১৬.৬৬ শতাংশ। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যে মিটিং, মিছিলের উপরে যে নিষেধাজ্ঞা ছিল, তা ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ঝাড়খণ্ডে করোনার বিধিনিষেধ বাড়ানো হল ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।

কর্নাটক সরকার আজ জানিয়েছে, মৃদু উপসর্গযুক্ত করোনা রোগীরা যেন অন্তত আগামী ২ সপ্তাহ হাসপাতালে না যান। শুধুমাত্র অসুস্থ রোগীরাই আপৎকালীন পরিষেবার জন্য হাসপাতালের দ্বারস্থ হতে পারেন।

হরিয়ানার মন্ত্রী অনিল ভিজ জানিয়েছেন, স্কুল যদি খোলেও ১৫-১৮ বছর বয়সিদের যারা এখনও টিকা নেয়নি, তাদের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।

আজ মধ্যপ্রদেশ সরকার জানিয়েছে, বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে মার্চের শেষ পর্যন্ত জেলবন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না পরিজনেরা।

এ দিকে করোনার জেরে উত্তরপ্রদেশের মেরঠের ৫৫ বছর বয়সি এক ব্যক্তির ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দিল্লির সাকেত-এ এক বেসরকারি হাসপাতালে ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা হল আজ। তিন ঘণ্টায় ৯৫০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ওই ব্যক্তির জন্য ফুসফুস আনার ব্যবস্থা করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন