কাজিরাঙা কাণ্ড

দায় কংগ্রেস ও অখিলের উপরে চাপালেন হিমন্ত

ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থ রক্ষায় শুধু কাজিরাঙায় জবরদখলকারীদের আশ্রয় দেওয়াই নয়, বেআইনি বিদ্যুৎ সংযোগ, প্রাথমিক স্কুল, এমনকী সরকারি প্রকল্পের অধীনে সুন্দর রাস্তাও তৈরি করে দিয়েছিল কংগ্রেস সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:৪২
Share:

ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থ রক্ষায় শুধু কাজিরাঙায় জবরদখলকারীদের আশ্রয় দেওয়াই নয়, বেআইনি বিদ্যুৎ সংযোগ, প্রাথমিক স্কুল, এমনকী সরকারি প্রকল্পের অধীনে সুন্দর রাস্তাও তৈরি করে দিয়েছিল কংগ্রেস সরকার। এই অভিযোগ বিজেপি সরকারের বর্তমান অর্থমন্ত্রী তথা সাবেক কংগ্রেস সরকারের দু’নম্বর হিমন্তবিশ্ব শর্মার। আজ তিনি বলেন, ‘‘কাজিরাঙায় জবরদখল থাকা তিনটি গ্রাম, বিশেষ করে বান্দরডুবিতে কংগ্রেস আমলের মন্ত্রীদের সৌজন্যে পুরো পরিকাঠামো তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল।’’

Advertisement

গত কালই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ উচ্ছেদ নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘‘ওই এলাকার পরিবারগুলি অনেক আগে থেকেই সেখানকার বাসিন্দা। অগপ আমলে সরকারই তাদের সেখানে জমি দেয়।’’ হিমন্ত এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের সরকার যা করছে আইন মেনেই করছে। অগপ আমলে কয়েকটি স্থানীয় পরিবারকে সেখানে থাকতে দেওয়া হয়েছিল। নিয়ম মতো, আদি বাসিন্দাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও বিজেপি সরকার ঘোষণা করেছে। প্রকৃত বাসিন্দারা তা মেনে সরেও গিয়েছেন। ঝামেলা পাকাচ্ছে জবরদখলকারীরা। এবং এই জবরদখল শুরু হয়েছে ২০০৬ সাল থেকে।’’

তিনি উচ্ছেদের সময় তোলা বিভিন্ন ছবি দেখিয়ে বলেন, দখল করা গ্রামে এমন সড়ক তৈরি হয়েছে যা তাঁর শহুরে কেন্দ্রকেও লজ্জা দেবে। আন্দোলনে নেতৃত্বে দেওয়া কৃষক নেতা অখিল গগৈয়ের সমালোচনা করে হিমন্ত বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি অধিকার রক্ষার নামে মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে, গন্ডগোল উস্কে দিয়ে পালায়, তাকে মানুষের বিশ্বাস করা উচিত নয়। এর আগেও ওই ব্যক্তির প্ররোচনায় দিসপুরে এক ব্যক্তি গায়ে আগুন লাগিয়ে মারা গিয়েছেন। এক কিশোরের প্রাণ গিয়েছে। কিন্তু ঘটনার পরেই তিনি উধাও হয়ে যান। পুলিশ এখন তাঁকে খুঁজছে। অথচ তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। নৈতিকতা থাকলে তাঁর সামনে আসা উচিত ছিল।’’

Advertisement

হিমন্তর দাবি, কাজিরাঙা জবরদখলের পরে বহিরাগতদের উজানি অসমেও জমি দখলের সুসংগঠিত পরিকল্পনা ছিল। এরপর মরিগাঁও জেলার মায়ংয়েও একই ঘটনা ঘটতে চলেছে। সেখানে বন্যার সময় চর থেকে আসা ভূমিপুত্ররা ফিরে গেলেও দখলদাররা এখনও জমি ছাড়ছে না। কংগ্রেস সময় দেওয়ার কথা বলছে। তাহলে মায়ংয়ের ক্ষেত্রে তারা জানাক, কতদিন পরে উচ্ছেদ চালানো উচিত হবে।

কাজিরাঙার উচ্ছেদ ঘিরে দু’জনের প্রাণহানির ঘটনার প্রতিবাদে ডাকা বন্‌ধে নগরবেরা, যোগিঘোপায় আজ কিছু গন্ডগোল হয়। বাসে ইট মারা হয়। তবে কাজিরাঙাতেই এ দিন বন্‌ধের প্রতিবাদ করে স্থানীয় মানুষ। বন্‌ধের কোনও প্রভাবই সেখানে পড়েনি। গত কাল মৃত যুবক ফকরুদ্দিন ও দশম শ্রেণির ছাত্রী আঞ্জুমার আজ শেষকৃত্য হয়েছে। বান্দরডুবির বাসিন্দারা দেহ নিয়ে মিছিল করতে চাইলেও প্রশাসন তার অনুমতি দেয়নি। শেষকৃত্যে হাজির ছিলেন জলসম্পদ মন্ত্রী কেশব মহন্ত ও প্রাক্তন বনমন্ত্রী রকিবুল হুসেন। হুসেনের বক্তব্য, মৃত্যুর ঘটনা সরকারের দুমুখো নীতি দেখিয়ে দিল। এক দিকে সরকার বলছে, এরা বাংলাদেশি জবরদখলকারী। অন্য দিকে, নিহতদের পরিবার ও জখমদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলি জাতীয় সড়কে শিবির গড়েছিল। তাও উচ্ছেদ করা হয় আজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন