Police Encounter

‘টপার’ থেকে শার্পশুটার! ভাল স্কুল থেকে পড়াশোনা করেও কী ভাবে গ্যাংস্টার আতিক-পুত্র আসাদ?

শৈশব থেকেই পিস্তলে হাত পাকিয়েছিল আসাদ। ১২ বছর বয়সেই হাতে বন্দুক তুলে নিয়েছিলেন। একটি ভিডিয়ো সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছিল। সেখানে দেখা গিয়েছে, আসাদ শূন্যে পর পর গুলি ছুড়ছেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লখনউ শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৩ ১২:০৯
Share:

পুলিশের গুলিতে হত আতিক আহমেদের পুত্র আসাদ (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।

উমেশ পাল হত্যার ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ‘গ্যাংস্টার’ আতিক আহমেদের পুত্র আসাদের মৃত্যু হয়েছে পুলিশের ‘এনকাউন্টারে’। বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসিতে পুলিশের সঙ্গে আসাদ এবং তাঁর এক সঙ্গী গুলামের গুলির লড়াই হয়। আর তাতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই অভিযুক্তের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি পুলিশের।

Advertisement

আতিকের পাঁচ পুত্র। তাঁদের মধ্যে তৃতীয় পুত্র ছিলেন আসাদ। তাঁর দুই দাদা উমর এবং আলি জেল খাটছেন। ছোট দুই ভাইও সংশোধনাগারে বন্দি। পুলিশ সূত্রে খবর, উমেশ পাল হত্যার ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন আসাদ এবং গুলাম।

শৈশব থেকেই পিস্তলে হাত পাকিয়েছিল আসাদ। ১২ বছর বয়সেই হাতে বন্দুক তুলে নিয়েছিল। একটি ভিডিয়ো সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছিল। সেখানে দেখা গিয়েছে, আসাদ শূন্যে পর পর গুলি ছুড়ছেন। ২০১৭ সালের একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গুলি চালাতে দেখা গিয়েছিল বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। আসাদ যখন গুলি চালাচ্ছিলেন, তাঁকে উৎসাহ দিচ্ছিলেন পরিবারের সদস্যরা। স্থানীয়দের দাবি, শৈশব থেকেই নিজের সন্তানদের বন্দুক চালানোর প্রশিক্ষণ দিয়েছিল আতিক।

Advertisement

পড়াশোনার বরাবরই ভাল ছিলেন আসাদ। মিশনারি স্কুল থেকে পড়াশোনা করেন তিনি। ক্লাসের ‘টপার’ও ছিলেন। স্কুল থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করে বিদেশে আইন পড়তে যাওয়ার কথা ছিল আসাদের। কিন্তু পরিবারের অপরাধের রেকর্ড থাকায় তাঁর পাসপোর্ট বাতিল হয়ে গিয়েছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, ছোটবেলা থেকেই আসাদ বদমেজাজি স্বভাবের ছিলেন। হার কিছুতেই মেনে নিতে পারতেন না। স্কুলে এক বার দড়ি টানাটানি প্রতিযোগিতায় তিনি ছিলেন দলের নেতা। তাঁর দল হেরে যাওয়ায় খেলার শিক্ষককে স্কুলের মধ্যেই মারধর করেন। যে হেতু সাংসদের ছেলে এবং তাঁর পরিবারের অপরাধের রেকর্ড ছিল, তাই স্কুল কর্তৃপক্ষও সেই সময় অভিযোগ জানাতে সাহস পাননি। ২০০৪ সালে আতিক যখন সাংসদ হন, তাঁর গ্যাংয়ের লোকেরা আসাদকে ‘ছোটে সাংসদজী’ বলে ডাকতেন।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, বিদেশে পড়াশোনা করতে যেতে না পারায় অপরাধের সঙ্গে নিজেকে আস্তে আস্তে জড়িয়ে ফেলেন। এলাকায় বোমাবাজি দেখে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন। তা ছাড়া তাঁর বাবার গ্যাংয়ের সদস্যদের কাছে অস্ত্র দেখে নিজেকেও সেই দলে সামিল করার চেষ্টা করেন। তবে আসাদের প্রথম পছন্দ ছিল বোমাবাজিতে হাত পাকানো। কিন্তু আতিক তা চাইত না। তাই আসাদকে সাবধানও করেছিল আতিক। বোমাবাজি করতে না পারায় পিস্তল চালানো শুরু করেন। ধীরে ধীরে শার্পশুটার হয়ে ওঠেন।

আতিক জেলে যাওয়ার পর থেকেই পরিবারের ব্যবসা সামলাচ্ছিলেন আসাদ। তবে কোনও বড় সিদ্ধান্ত নিতে হলে আতিকের স্ত্রী শায়িস্তা পরভিনই তা ঠিক করতেন। উমেশ পালের হত্যার ঘটনার পর থেকে শায়িস্তাও এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

অন্য দিকে, আসাদের সঙ্গী গুলামও ইলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। কিন্তু পড়াশোনা ভাল লাগত না তাঁর। কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ছাত্রনেতা ছিলেন গুলাম। তার পর ধীরে ধীরে ভিড়ে যান গ্যাংস্টারের দলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন