কাশ্মীর উপত্যকায় নিরাপত্তাবাহিনী। —ফাইল চিত্র।
জম্মু ও কাশ্মীরের সোপিয়ানের জঙ্গলে জঙ্গিদমন অভিযান ‘অপারেশন কেল্লার’ চলাকালীন উদ্ধার হল প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র এবং গোলাবারুদ। পাওয়া গিয়েছে বেশ কিছু গ্রেনেড, রাইফেল, ম্যাগাজ়িন এবং প্রচুর কার্তুজও। মঙ্গলবারই দক্ষিণ কাশ্মীরের সোপিয়ানে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে তিন জঙ্গি নিহত হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রগুলি ওই তিন জঙ্গিরই।
জঙ্গি গতিবিধির খবর পেয়ে মঙ্গলবার সোপিয়ানের শুরু কেল্লার এলাকায় জঙ্গলের মধ্যে অভিযান চালিয়েছিল নিরাপত্তাবাহিনী। ‘অপারেশন কেল্লার’-এ নিহত তিন জঙ্গির সঙ্গে পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠী লশকর-এ-ত্যায়বার যোগ রয়েছে বলে সন্দেহ করছেন গোয়েন্দারা। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ সূত্রকে উদ্ধৃত করে পিটিআই জানিয়েছে, নিহত তিন জঙ্গির মধ্যে দু’জনকে ইতিমধ্যে শনাক্ত করা গিয়েছে। মৃতদের নাম শাহিদ কুট্টে এবং আদনান শফি। দু’জনেই কাশ্মীরের স্থানীয় জঙ্গি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। শাহিদের বাড়ি সোপিয়ানের হীরপোড়া এলাকায় এবং শফির বাড়ি একই জেলার ওয়ানদুনায়। তৃতীয় জঙ্গির শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া এখনও চলছে। যদিও বাহিনীর তরফে সরকারি ভাবে এখনও পর্যন্ত ওই জঙ্গিদের লশকর যোগের কথা জানানো হয়নি।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গি হানার পরে শাহিদ এবং শফি উভয়েরই বাড়িতে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। সূত্রের খবর, শাহিদ গত তিন-চার বছর ধরে সক্রিয় জঙ্গি কার্যকলাপের জড়িত ছিল। শফি গত বছরের অক্টোবরে জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিয়েছিল। পহেলগাঁও কাণ্ডের তদন্তে উঠে এসেছিল, ওই হত্যালালীয় জড়িত জঙ্গিরা দক্ষিণ কাশ্মীরের পাহাড়ি জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে দক্ষিণ কাশ্মীরের সোপিয়ানে তিন জঙ্গির মৃত্যু হয়। তবে এই তিন জঙ্গির সঙ্গে পহেলগাঁও কাণ্ডের কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মঙ্গলবার বিকেলে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালকেও এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি জানিয়েছিলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
বস্তুত, জঙ্গিদের সহযোগিতা করার অভিযোগে ইতিমধ্যেই কাশ্মীর উপত্যকার বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে একশোরও বেশি স্থানীয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূলত তাঁরা জঙ্গিদের ‘ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কার’ হিসাবে কাজ করতেন। এ রকম আরও কারা এই ঘটনায় জড়িত, সেই খোঁজও চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। এই অবস্থায় দক্ষিণ কাশ্মীরের জঙ্গলে তিন জঙ্গির মৃত্যু এবং অস্ত্রসম্ভারের সন্ধান মেলায় সম্ভাব্য সব দিক খতিয়ে দেখতে চাইছেন তদন্তকারীরা।