প্রথমে জামাত ই ইসলামি। তার পর গত সপ্তাহে জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট (জেকেএলএফ)-কে নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্র। এর পরে কে, সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। সংশয় তৈরি হয়েছে হুরিয়ত কনফারেন্স দলের ভবিষ্যৎ নিয়েও।
বিশেষ করে যে ভাবে অর্থের বিনিময়ে উপত্যকায় অশান্তি ছড়ানোর পিছনে একের পর এক হুরিয়ত নেতার ভূমিকা সামনে আসছে, তাতে আগামী দিনে ওই দলের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে ভাবছে কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘উপত্যকায় বাইরে থেকে আসা টাকার জোগান বন্ধ করা গেলেই সন্ত্রাস অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।’’ বাইরে থেকে আসা টাকার জোগান আটকাতে তদন্তে নেমে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) সম্প্রতি একটি রিপোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে জমা দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যেই প্রায় ১৩ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে প্রায় ৭ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যে টাকা মূলত এসেছে বিদেশ থেকে। যা উপত্যকায় সন্ত্রাসের কাজে ব্যবহার করার কথা ছিল। এনআইএ-র ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, সম্প্রতি জাহুর আহমেদ শাহ ওয়াটালি নামে গুরুগ্রামের এক কাশ্মীরি ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট। তদন্তে জানা যায়, হাওয়ালার মাধ্যমে তিনি দিল্লি থেকে কাশ্মীরে টাকা পাচার করতেন। কাশ্মীরে অশান্তি ছড়ানোর জন্য হাফিজ সৈয়দ, সৈয়দ সালাউদ্দিন মতো জঙ্গিরা ওই টাকা পাঠায়। এর পাশাপাশি নয়াদিল্লির পাক দূতাবাসের মাধ্যমেও টাকা পৌঁছে দেওয়া হত ওটানির কাছে। ওই টাকা পাচার চক্র গোটাটা নিয়ন্ত্রণ করে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তদন্তে দাবি করা হয়েছে, এই টাকার একটি বড় অংশ যায় হুরিয়ত নেতাদের কাছে। ব্যক্তিগত খরচ ছাড়াও বাকি টাকা উপত্যকায় ভারত বিরোধী কার্যকলাপের জন্য খরচ করার নির্দেশ রয়েছে হুরিয়ত নেতাদের উপর। পাথর ছোড়ার পারিশ্রমিক হিসেবে উপত্যকার কিশোর ও যুবকদের কাছে ওই অর্থ পৌঁছে যায় হুরিয়ত নেতাদের হাত ঘুরে। পাশাপাশি সংবাদমাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারত বিরোধী প্রচারেও খরচ হত টাকা। হুরিয়ত ছাড়াও এ ভাবে আসা টাকা দেওয়া হয় লস্কর ই তইবা, হিজবুল মুজাহিদিনের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীকেও। তাদের দৈনন্দিন খরচ চালানো, হ্যান্ডলারদের খরচ, স্থানীয় যুবকদের অর্থ দেওয়া হয় ওই পয়সা দিয়েই। গোয়েন্দাদের একটি অংশের দাবি, নতুন জঙ্গি সংগ্রহের জন্য ব্যবহার করা হয় কিছু মাদ্রাসা ও মসজিদকে। সেগুলির খরচ, রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও ওই অর্থের ব্যবহার হয়ে থাকে।