Special Intensive Revision

প্রতিটি বিধানসভা আসনে গড়ে ২৩ হাজার! কমিশনের নতুন হিসাব জানাল বিহারে ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়বে ৫৬ লক্ষ নাম

কমিশনের তরফে বুধবার জানানো হয়েছে, বাদ পড়া ৫৬ লক্ষ নামের মধ্যে অন্তত ২০ লক্ষ ‘মৃত’ বলে তথ্য-প্রমাণ রয়েছে তাদের কাছে। ২৮ লক্ষ স্থানান্তরিতের নামও ছাঁটাই হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৫ ২০:৪৫
Share:

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

বিহারের সংশোধিত ভোটার তালিকা নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিবৃতি ‘সংশোধন’ করল নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার কমিশনের তরফে জানানো হয়েছিল, নতুন তালিকা থেকে প্রায় ৫২ লক্ষ ‘মৃত, স্থানান্তরিত এবং অযোগ্য’ নাম বাদ পড়তে পারে। বুধবার কমিশন জানিয়েছে, সংশোধিত ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়তে চলেছে অন্তত ৫৬ লক্ষ নাম।

Advertisement

কমিশনের তরফে বুধবার জানানো হয়েছে, বাদ পড়া নামগুলির মধ্যে অন্তত ২০ লক্ষ ‘মৃত’ বলে তথ্যপ্রমাণ রয়েছে তাদের কাছে। তালিকা থেকে ছাঁটাই ২৮ লক্ষ ভোটার এখন আর বিহারের স্থায়ী বাসিন্দা নন। তাঁরা ভিন্‌রাজ্যে থাকেন। অবশিষ্টদের মধ্যে অন্তত সাত লক্ষ জনের নাম একাধিক ঠিকানার ভোটার তালিকায় থাকায় বাদ দেওয়া হয়েছে। কমিশনের হিসেব জানাচ্ছে, ভোটার তালিকার ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধন’ (স্পেশ্যাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা এসআইআর)-এ বিধানসভা কেন্দ্র পিছু গড়ে ২৩ হাজার নাম বাদ পড়তে পারে।

চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে ভোটার তালিকার এসআইআর করতে গিয়ে আগেই বিতর্কের মুখে পড়েছে নির্বাচন কমিশন। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার দলের সমাবেশে অভিযোগ তুলেছিলেন, ৪০ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে পড়শি রাজ্যে। পশ্চিমবঙ্গেও বিধানসভা ভোটে একই কায়দায় কমিশন নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা করবে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। বস্তুত, বিহারের ভোটার তালিকায় নাম ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে কমিশনের ঘোষণা মমতার দাবিকেও ছাপিয়ে গিয়েছে।

Advertisement

কমিশন মঙ্গলবার জানিয়েছে, আগামী ১ অগস্ট যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে, সকল যোগ্য ভোটারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিহারের ভোটার তালিকায় সংশোধন নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সেগুলি একত্রিত করে শুনানি শুরু হয়েছে বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে। তার মধ্যে কী ভাবে নির্বাচন কমিশন সংশোধিত ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এ ক্ষেত্রে সংবিধানের ৩২৪ অনুচ্ছেদে উল্লিখিত ‘ক্ষমতা এবং এক্তিয়ারে’র উল্লেখ করে কমিশনের যুক্তি, গোটা প্রক্রিয়াটি একটি সুসংহত এবং সাংবিধানিক পদ্ধতিতে পরিচালিত হচ্ছে। ১৭ জুলাই শীর্ষ আদালত নির্বাচন কমিশনকে এসআইআর-২০২৫ এর উদ্দেশ্যে আধার, ভোটার আইডি এবং রেশন কার্ড বিবেচনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার কমিশনের তরফে শীর্ষ আদালতকে জানানো হয়েছে, ভোটার তালিকায় নাম তোলার ক্ষেত্রে সেগুলি বিবেচনা করা যাবে না।

কমিশনের দাবি, আধার আদতে একটি পরিচয়পত্র মাত্র, নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। এমনকি, এসআইআর-পর্বে নতুন করে ভোটার তালিকায় নাম তোলার ক্ষেত্রে ভোটার আইডি চূড়ান্ত পরিচয়পত্র হতে পারে না বলেও জানিয়েছে কমিশন। এ ক্ষেত্রে শীর্ষ আদালতের একটি পুরনো রায়ের নজির দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, নাগরিকত্ব যাচাই করা নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না, সে দায়িত্ব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের। কিন্তু কমিশনের যুক্তি, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে, ভোটার তালিকায় নাম তোলার আগে নাগরিকত্ব যাচাই করতে পারে তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement