(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী এবং মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
‘নিরাপত্তাগত কারণ’ দেখিয়ে ঢাকায় ভারতীয় ভিসা আবেদনকেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল নয়াদিল্লি। বুধবার দুপুর ২টো থেকে এই ভিসাকেন্দ্রটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের ‘ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার’-এর (আইভ্যাক) তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে কবে বা কত ক্ষণ পর্যন্ত এটি বন্ধ থাকবে, তা ওই বিবৃতিতে বলা হয়নি। কেবল বলা হয়েছে, যে সমস্ত ভিসা আবেদনকারী বুধবারের জন্য ‘স্লট’ বুক করেছিলেন, তাঁদের জন্য নতুন তারিখ এবং সময় নির্ধারণ করা হবে।
ভিসাকেন্দ্র বন্ধ রাখার কারণ হিসাবে বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির কথা বলা হলেও সবিস্তার কিছু জানানো হয়নি। স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টি নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। ঘটনাচক্রে, বুধবারই দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাকে তলব করেছিল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। সংবাদসংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, বাংলাদেশের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের একাংশের দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আবদুল্লার ভারতবিরোধী বক্তৃতার প্রেক্ষিতেই এই তলব। সম্প্রতি হাসনাত তাঁর বক্তৃতায় ‘সেভেন সিস্টার্স’-কে (উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্য) ভারতের মানচিত্র থেকে আলাদা করে দেওয়ার ডাক দেন। শুধু তা-ই নয়, উত্তর-পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় দেওয়ার কথাও বলেন। তার পরেই ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করে ভারত সরকার।
এই আবহে ঢাকার ভিসাকেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশে ভারতের ভিসাকেন্দ্রটি রয়েছে ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্কে। নিরাপত্তাগত কারণটা ঠিক কী, তা যেমন নয়াদিল্লি বা ভিসাকেন্দ্রের তরফে স্পষ্ট করা হয়নি, তেমনই মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসনের তরফেও এই বিষয়ে এখনও কিছু বলা হয়নি।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন একই সঙ্গে হবে জুলাই সনদ নিয়ে গণভোটও। তবে নির্বাচন ঘোষণার পরই বাংলাদেশে বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। বিভিন্ন নেতার মুখে ভারতবিরোধী বক্তৃতাও শোনা যায়। সেই আবহে বাংলাদেশে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ভোটের আগে অশান্তি আরও বাড়তে পারে, সেই আশঙ্কা করে সম্প্রতি বিবৃতি জারি করে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।