বিহারের বিজেপি সাংসদ গিরিরাজ সিংহের বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া নগদ প্রায় সওয়া কোটি টাকার উৎস খুঁজতে নামল আয়কর দফতর।
পরশু তাঁর পটনার বাড়ি থেকে চুরি যায় নগদ ১ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা, ৬০০ মার্কিন ডলার, সোনা ও রুপোর গয়না এবং সাতটি অত্যন্ত দামি বিদেশি ঘড়ি। গিরিরাজ দিল্লিতে ছিলেন। তাঁর বাড়ির লোকজন পুলিশে অভিযোগ জানাতেই জটিলতা বেড়েছে। চটজলদি ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। চুরির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বমাল চোরদের ধরে ফেলে পুলিশ। আর তাতেই ফাঁপরে পড়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা নওয়াদার বিজেপি সাংসদ গিরিরাজ সিংহ। আর দুর্নীতির গন্ধ পেয়েই সরব হয়েছে জেডিইউ-আরজেডি। আজ বিধানসভায় জেডিইউ এবং আরজেডির বিধায়কেরা বিক্ষোভ দেখান। দাবি, গিরিরাজকে গ্রেফতার করতে হবে। স্বাভাবিক ভাবেই এতে প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সভাপতি মঙ্গল পাণ্ডে আপাতত এড়িয়ে যেতে চেয়েছেন পুরো বিষয়টি। তাঁর কথায়, “সাংসদের সঙ্গে কথা না বলে কিছু বলতে পারব না।”
গিরিরাজের এই সম্পত্তির হিসেব পেতে ইতিমধ্যেই আয়কর বিভাগ তদন্ত শুরু করেছে। কাল রাতে আয়কর কর্তারা থানায় গিয়ে উদ্ধার হওয়া নগদ টাকা ও অন্য সামগ্রী পরীক্ষা করে। রাজ্য পুলিশও আলাদা ভাবে তদন্ত শুরু করেছে। গিরিরাজ সিংহ জানিয়েছেন, “এই টাকা আমার এক আত্মীয়ের। আমার কাছে রাখা ছিল।” তাঁর বক্তব্য, কোনও প্রমাণ পাওয়ার আগেই বিরোধীরা রাজনৈতিক চক্রান্ত শুরু করেছে। বিরোধী দল নেতা, বিজেপির নন্দকিশোর যাদবও মনে করেন, “পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। আগে থেকেই বিরোধীরা অহেতুক রাজনীতি করছে।” সংসদ চলায় গিরিরাজ দিল্লিতে ছিলেন। আজই তাঁর পটনায় পৌঁছনোর কথা।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাতে গিরিরাজের ফ্ল্যাট থেকে চুরি হয়। পটনার এস কে পুরী থানা এলাকার একটি আবাসনে গিরিরাজের ফ্ল্যাট। অভিযোগ পাওয়ার পরেই পুলিশ একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করে চার জনকে পটনা থেকে গ্রেফতার করে। ধৃতরা সাংসদের ব্যক্তিগত কর্মী, নিরাপত্তা রক্ষী ও রান্নার লোক। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় চুরি যাওয়া জিনিস। ধৃতদের কাছ থেকে এত টাকা উদ্ধারের পরে প্রশ্ন উঠেছে, এই টাকার উৎস কী? লোকসভা ভোটের সময় নির্বাচন কমিশনের কাছে গিরিরাজ যে হলফনামা জমা দেন সেখানে ৭০ লক্ষ টাকার সম্পত্তি, ব্যাঙ্কে গচ্ছিতের পরিমাণ ১৮ লক্ষ টাকা এবং হাতে নগদ দেড় লক্ষ টাকা থাকার কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু তার দেড় মাসের মধ্যে হাতের টাকা এতটা বাড়ল কী করে সেই জবাব গিরিরাজকে দিতেই হবে। আজ পটনায়, বিধানসভা ভবনের মূল ফটকের সামনে বিজেপি-বিরোধী বিধায়কেরা ধর্নায় বসেন। জেডিইউ এবং আরজেডির পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, বিজেপি সরকার যখন কালো টাকার বিরুদ্ধে অভিযানের কথা বলছে, তখন সেই দলের এক সাংসদের ঘর থেকে এত টাকা এবং বিদেশি মুদ্রা কী ভাবে পাওয়া গেল?