India-UK Landmark Free Trade

মুক্ত বাণিজ্যচুক্তিতে আগামী সপ্তাহে সই করতে পারে ভারত এবং ব্রিটেন! এ দেশের বাজারে সস্তা হতে পারে স্কচ, চকোলেট

এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে সই হওয়ার পরে তাতে অনুমোদন দিতে হবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে। সেই সঙ্গে ব্রিটেনের পার্লামেন্টের ছাড়পত্রও লাগবে। তবেই চুক্তি কার্যকর হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৫ ২১:৫৯
Share:

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়র স্টার্মার এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।

আলোচনার শেষে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে সই করার কথা আগেই ঘোষণা করেছিল ভারত এবং ব্রিটেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই বলছে, আগামী সপ্তাহে দুই দেশ এই চুক্তি (এফটিএ)-তে সরকারি ভাবে সই করতে পারে। এক কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিককে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ‘‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিপত্রের আইনি দিকগুলি ঘষামাজার প্রক্রিয়া চলছে। আগামী সপ্তাহে সই হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’’ আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন, এই নিয়ে দর কষাকষি চলছে। এর মধ্যে ব্রিটেনের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সই হয়ে গেলে ভারতের হাতই শক্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ দেশের পণ্যের জন্য ব্রিটেনের বাজারও খুলে যাবে।

Advertisement

ভারত এবং ব্রিটেনের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষরিত হলে ভারত যে সব জিনিস ব্রিটেনে রফতানি করে, তার উপর শুল্ক কমবে। ব্রিটেনে চামড়াজাত জিনিস, কাপড়, জুতো, খেলনা, সামুদ্রিক পণ্য, দামি জহরত, গয়না রফতানি করে ভারত। এই চুক্তি কার্যকর হলে সেই জিনিসগুলি ব্রিটেনে সস্তা হবে। অন্য দিকে, ব্রিটেন থেকে আমদানি করা স্কচ হুইস্কি, জিন, জাগুয়ার, ল্যান্ডরোভারের মতো গাড়ি, মেডিক্যাল যন্ত্র, প্রসাধনী, চকোলেট, নরম পানীয় সস্তা হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ দ্বিগুণ হতে পারে। তবে স্থানীয়দের স্বার্থের কথা ভেবে আপেল, চিজ়, দুগ্ধজাত পণ্য চুক্তির আওতায় আনেনি ভারত। এগুলি আমদানির ক্ষেত্রে কর ছাড় থাকছে না।

এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে সই হওয়ার পরে তাতে অনুমোদন দিতে হবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে। সেই সঙ্গে ব্রিটেনের পার্লামেন্টের ছাড়পত্রও লাগবে। তবেই চুক্তি কার্যকর হবে। মনে করা হচ্ছে দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সই হওয়ার পর থেকে তা কার্যকর হতে এক বছর সময় লাগবে। মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে ২০২২-এর গোড়ায় ভারত ও ব্রিটেনের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু বারবার ব্রিটেনে প্রধানমন্ত্রী বদলের ফলে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে দর কষাকষিতে বাধা পড়েছিল।

Advertisement

গত ৬ মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার এই চুক্তি সই হওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, টেলিফোনে মোদী-স্টার্মার আলোচনার পরে চুক্তির রূপরেখা চূড়ান্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী সমাজমাধ্যমে জানান, বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এই চুক্তি নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে। অন্য দিকে এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে পোস্ট দিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিখেছিলেন, ‘‘একটি শক্তিশালী এবং নিরাপদ অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা, বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে সমন্বয় গড়ে তোলা এবং বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাধা হ্রাস করাই আমাদের পরিবর্তিত পরিকল্পনার অংশ।’’

গত মে মাসে এই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ছাড়াও ভারত এবং ব্রিটেনের মধ্যে সামাজিক নিরাপত্তা চুক্তি নিয়েও বোঝাপড়া চূড়ান্ত হয়েছিল। এই চুক্তির ফলে ব্রিটেনে স্থিত ভারতীয় কর্মীদের তিন বছর পর্যন্ত সামাজিক সুরক্ষার জন্য টাকা দিতে হবে না। এর ফলে সুবিধা পাবেন ৬০ হাজার তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। তাঁদের বেতনের প্রায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাঁচবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement