(বাঁ দিক থেকে) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
রাশিয়া থেকে সস্তায় তেল কিনে, আবার বিক্রি করছে ভারত! এক সাক্ষাৎকারে এমনই দাবি করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অর্থসচিব স্কট বেসেন্ট। তাঁর আরও দাবি, ইউক্রেন যুদ্ধের সময় রাশিয়া থেকে তেল কেনার পরিমাণ বাড়িয়েছে ভারত। আর তাতে লাভবানও হয়েছে। মার্কিন অর্থসচিব জানান, নয়াদিল্লির এই পদক্ষেপকে অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করে ওয়াশিংটন!
ইউক্রেন যুদ্ধের আগে এবং পরে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের জ্বালানি সংক্রান্ত ব্যবসার পরিসংখ্যান তুলে বেসেন্ট দাবি করেন, ভারত যা তেল আমদানি করে, তার ৪২ শতাংশই রাশিয়া থেকে। ইউক্রেন যুদ্ধের আগে মাত্র এক শতাংশ তেল রাশিয়া থেকে কিনত ভারত। তার পরেই মার্কিন অর্থসচিব জানান, রাশিয়ার দীর্ঘ দিনের তেলের ক্রেতা চিন। যুদ্ধের আবহে তারাও রাশিয়ান তেল ক্রয় বাড়িয়েছে। তবে মাত্র তিন শতাংশ।
সংবাদমাধ্যম ‘সিএনবিসি’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট বলেন, ‘‘ভারত সব সময় লাভ খোঁজে। রাশিয়া থেকে তেল কিনে ফের বিক্রি করছে তারা। সস্তায় রাশিয়া থেকে তেল কিনে, তা আবার বিক্রি করাকে ভারতের স্বেচ্ছাচারিতা বলব। এটা কখনওই গ্রহণযোগ্য নয়।’’ যদিও আমেরিকার এই অভিযোগ নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি ভারত সরকার।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে এক কূটনৈতিক টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে। এর নেপথ্যে অন্যতম কারণ হল রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক। গত তিন বছর ধরে চলে আসা রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে উদ্যোগী হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর অভিযোগ, ভারতের সঙ্গে ব্যবসার লভ্যাংশ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহার করছে রাশিয়া। মস্কোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখার জন্য নয়াদিল্লির উপর চড়া হারে শুল্কও চাপিয়েছেন ট্রাম্প।
ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক এই টানাপড়েনের আবহেই আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাঁর মতে, এই শুল্ক চাপানোর ফলেই সম্ভবত পুতিন বৈঠকের জন্য রাজি হয়েছেন। তিনি এ-ও দাবি করেছেন, অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর ফলে রাশিয়া থেকে তেল কেনা থেকে তিনি ভারতকে দূরে রাখতে পেরেছেন। যদিও রাশিয়ার থেকে ভারত তেল কেনা বন্ধ রেখেছে বলে কোনও তথ্য নয়াদিল্লি থেকে প্রকাশ্যে জানানো হয়নি। বরং, ভারত সরকারের সূত্রের দাবি, রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখবে নয়াদিল্লি।