নজরুল সাহিত্যে আশ্রয় খুঁজছে বরাক

নাগরিকত্ব হারানোর আতঙ্ক ঘিরেছে বরাক উপত্যকাকে। ফের তার প্রমাণ মিলল নজরুল জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানেও। বক্তাদের আলোচনায় উঠে এল জাতীয় নাগরিক পঞ্জী ও ‘ডি ভোটার’ (ডাউটফুল ভোটার) প্রসঙ্গও। অনেকে বললেন— বরাক তথা অসমের বঙ্গভাষীদের এই বিপন্ন সময়ে একমাত্র নজরুল চেতনাই সকলকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে।

Advertisement

অমিত দাস

হাইলাকান্দি শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৫ ০৩:০১
Share:

নাগরিকত্ব হারানোর আতঙ্ক ঘিরেছে বরাক উপত্যকাকে। ফের তার প্রমাণ মিলল নজরুল জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানেও। বক্তাদের আলোচনায় উঠে এল জাতীয় নাগরিক পঞ্জী ও ‘ডি ভোটার’ (ডাউটফুল ভোটার) প্রসঙ্গও।

Advertisement

অনেকে বললেন— বরাক তথা অসমের বঙ্গভাষীদের এই বিপন্ন সময়ে একমাত্র নজরুল চেতনাই সকলকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে।

বাঙালির চেতনায় উজ্জ্বল কবি নজরুল ইসলামকে স্মরণ করতে হাইলাকান্দিতে বসেছিল কথা-কবিতা-গান-আলোচনার আসর। আয়োজক ছিল বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের হাইলাকান্দি শহর আঞ্চলিক কমিটি। গত সন্ধেয় রবীন্দ্রভবন প্রেক্ষাগৃহে নজরুল স্মরণে ভিড় জমেছিল। সেই অনুষ্ঠানের সুরেও কিন্তু মিশেছিল নাগরিকত্ব নিয়ে আশঙ্কা।

Advertisement

অনুষ্ঠানের সূচনা প্রদীপ জ্বালানো দিয়ে। তার পর গান, কথা, কবিতা। আলোচনায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন বক্তা নজরুল ইসলামের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে তাঁদের অভিমত তুলে ধরেন।

বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতীশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘নজরুল বাঙালির জাতীয় কবি। তিনিই রবীন্দ্র সাহিত্যের পর নুতন ধারায় বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁর সাহিত্যের বড় অংশ জুড়ে রয়েছে নির্যাতিত মানুষের কথা। পরাধীন ভারতের কথা।’’ এ কথা বলে নীতীশবাবুর মন্তব্য, ‘‘আজকের অবক্ষয়ের সময়ে নজরুল চেতনাই সঠিক দিশা দেখাতে পারে।’’ হাইলাকান্দি এস এস কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষিকা ইন্দিরা ভট্টাচার্য নজরুলকে ব্যাতিক্রমী সাহিত্যিক বলে চিহ্নিত করেন। তিনি বলেন, ‘‘ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সাহিত্যকেই অস্ত্র করেছিলেন নজরুল। আজ অসমে উগ্র জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে বাঙালিদের লড়াইয়ের হাতিয়ার হতে পারেন তিনিই।’’ বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের হাইলাকান্দি জেলা সমিতির সভাপতি হীরকজ্যোতি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রতিকূলতার মধ্যে লড়াই চালিয়ে সাহিত্য সাধনা করেছেন নজরুল। তিনি বঙ্গভাষীদের আন্দোলনের অনুপ্রেরণা।’’ আলগাপুর কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিজামউদ্দিন লস্কর মনে করেন, বৃহত্তর মানবতার স্বার্থে আরও বেশি করে নজরুল-চর্চা করা জরুরি। বরাক বঙ্গের অন্যতম কর্তা সুকোমল পাল বলেন, ‘‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নজরুলের প্রাসঙ্গিকতা বেড়ে চলেছে।’’

ওই আলোচনা সভায় নজরুল সাহিত্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন সুরজিৎ দেব, অনিন্দ্য কুমার নাথ, পিনাকপানি ভট্টাচার্য, রানা চক্রবর্তীও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন