কোপে দূষণকারী কারখানা, কঠোর পরিবেশ আদালত

২০০৯-১০ সালে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদগুলিকে সঙ্গে নিয়ে দূষণ সৃষ্টিকারী শিল্প সংস্থাগুলির প্রভাব নিয়ে দেশজুড়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৯ ০২:৪৭
Share:

ঘনবসতি এলাকায় কোনও ধরনের দূষণকারী শিল্প গড়া যাবে না বলে মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। যে সব এলাকায় ঘনবসতি এলাকায় দূষণকারী শিল্প ইতিমধ্যেই রয়েছে সেখানে স্থানীয় প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

Advertisement

মহারাষ্ট্রের মালেগাঁও শিল্পাঞ্চলের আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত রিপোর্ট পর্যালোচনা করতে গিয়ে এই নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আদালত বলেছে, দেশের অতিদূষিত শিল্পাঞ্চলগুলিতে দূষণকারী সব শিল্প সংস্থাকে তিন মাসের মধ্যে বন্ধ করে দিতে হবে। দূষণকারী অন্য সব শিল্প সংস্থার কাছ থেকেই মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ আদায়েরও নির্দেশ দিয়েছে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে এ ব্যাপারে অবিলম্বে পদক্ষেপ করতে হবে।

২০০৯-১০ সালে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদগুলিকে সঙ্গে নিয়ে দূষণ সৃষ্টিকারী শিল্প সংস্থাগুলির প্রভাব নিয়ে দেশজুড়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল। সেই সমীক্ষায় দূষণ সূচকের নিরিখে দেশের শিল্পাঞ্চলগুলিকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়- মারাত্মক ভাবে দূষিত শিল্পাঞ্চল, অতিদূষিত শিল্পাঞ্চল এবং বাকি দূষিত শিল্পাঞ্চল। সেই সমীক্ষার রিপোর্ট আদালতে পেশ করে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।

Advertisement

ওই সমীক্ষা রিপোর্ট খতিয়ে দেখে জাতীয় পরিবেশ আদালতের চেয়ারম্যান আদর্শকুমার গোয়েলের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের মন্তব্য, ‘‘জনস্বাস্থ্যকে বলি দিয়ে কোনও দেশের আর্থিক উন্নয়ন চলতে
দেওয়া যায় না।’’

কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে আদালতের নির্দেশ, ‘‘রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদগুলিকে সঙ্গে নিয়ে দেশের শিল্পাঞ্চলগুলিতে ফের সমীক্ষা চালাতে হবে। গত পাঁচ বছরে কোন শিল্প জনস্বাস্থ্যের কতটা ক্ষতি করেছে, পরিবেশের ভারসাম্য কতটা নষ্ট করেছে তা বের করুন। তার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট শিল্প সংস্থার কাছে থেকে জরিমানা আদায় করতে হবে।’’ জরিমানার অঙ্ক কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকেই ঠিক করতে হবে।

পরিবেশ আদালতের নির্দেশ, অতি দূষণকারী বলে চিহ্নিত শিল্প সংস্থাগুলি সেগুলি যদি কারখানা আরও বড় করতে চায় সেই অনুমতি তো দেওয়া চলবেই না, সেগুলিকে বন্ধ করে দিতে হবে। যদি কোনও অতি দূষণকারী শিল্প সংস্থা তাদের প্রস্তাবিত নতুন কারখানা পুরোপুরি দূষণ নিয়ন্ত্রণের শর্ত মেনে করতে চায় তবে তা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় পর্ষদ। সে ক্ষেত্রে পুরনো অতি দূষণকারী কারখানাটি বন্ধ করে দিতে হবে।

কোনও শিল্পাঞ্চলে কোন কোন শিল্প সংস্থা কতটা বায়ু ও জল দূষণ করছে সেই তথ্য প্রকাশ্যে আনার জন্য কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর ওই সব এলাকায় সমীক্ষা চালিয়ে সেই তথ্য প্রকাশ্যে আনতে হবে। তাদের নির্দেশ কতটা পালন করা হল তা তিন মাসের মধ্যে ই-মেলে জানাতে হবে পরিবেশ আদালতকে। আগামী পাঁচ নভেম্বর সেই রিপোর্টের পর্যালোচনা করবে জাতীয় পরিবেশ আদালত। শিল্পাঞ্চলগুলির পরিবেশ রক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রককে পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দেয় কোর্ট।

মালেগাঁও শিল্পাঞ্চলের পরিবেশ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে আদালত কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের প্রতিনিধি, কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, মহারাষ্ট্র রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও মালেগাঁও পুরসভার প্রতিনিধিকে নিয়ে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছে। দূষণে মানুষের কতটা ক্ষতি হয়েছে, পরিবেশের ভারসাম্য কতটা নষ্ট হয়েছে, কোন শিল্প সংস্থা কতটা ক্ষতি করছে তা খতিয়ে দেখে নিজেদের সুপারিশ সম্বলিত একটি রিপোর্ট আদালতে জমা দেবে। তার ভিত্তিতে আগামী ১৫ অক্টোবর আদালত পরবর্তী নির্দেশ দেবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন