India US Oil Trade

আমেরিকা থেকে তেল আমদানি লাফিয়ে বাড়ছে, খরচও দ্বিগুণ! ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর কত দামে কত জ্বালানি কিনেছে দিল্লি

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত আমেরিকার তেল আমদানি গত বছরের তুলনায় ৫১ শতাংশ বে়ড়ে গিয়েছে। আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসেছেন ২০ জানুয়ারি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৫ ০৮:১৭
Share:

(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আমেরিকা থেকে ভারতে খনিজ তেল আমদানি লাফিয়ে বাড়ছে। গত কয়েক মাসে তা অর্ধেকেরও বেশি বেড়ে গিয়েছে। তার জন্য খরচও হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ। সরকারি সূত্র উল্লেখ করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত আমেরিকার তেল আমদানি গত বছরের তুলনায় ৫১ শতাংশ বে়ড়ে গিয়েছে। তার জন্য খরচ হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসেছেন ২০ জানুয়ারি।

Advertisement

সরকারি সূত্রের দাবি, ২০২৪ সালের প্রথম ছ’মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন) আমেরিকা থেকে ভারত দিনপ্রতি ১.৮ লক্ষ ব্যারেল হিসাবে খনিজ তেল আমদানি করেছিল। ২০২৫ সালের ওই একই সময়ে আমদানি পৌঁছে গিয়েছে দিনে ২.৭১ লক্ষ ব্যারেল। আরও বিশদে পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে, মার্কিন তেল আমদানি সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে এপ্রিল থেকে। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত বৃদ্ধির হার গত বছরের তুলনায় ১১৪ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের প্রথম ভাগে মার্কিন তেল আমদানিতে ভারতের খরচ হয়েছিল ১৭৩ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা)। ২০২৫-এ তা হয়েছে ৩৭০ কোটি ডলার (৩২ হাজার কোটি টাকা)। সূত্রের আরও দাবি, আপাতত মার্কিন তেল আমদানি কমার কোনও সম্ভাবনা নেই। বরং আগামী দিনে তা আরও বাড়তে পারে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জুন মাসের তুলনায় জুলাই মাসে আমেরিকা থেকে তেল আমদানি ২৩ শতাংশ বেড়েছে। সার্বিক ভাবে ভারত আমেরিকা থেকে যে পরিমাণ তেল আমদানি করত, তা মোট আমদানির তিন শতাংশ ছিল। তা বেড়ে এখন আট শতাংশ হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

শুধু তেল নয়, এলপিজি, এলএনজি-র মতো জ্বালানি গ্যাসও আমেরিকা থেকে আগের চেয়ে বেশি কিনছে ভারত। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে এলএনজি আমদানির পরিমাণ প্রায় ১০০ শতাংশ বেড়েছে।

ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ। মোট আমদানির অন্তত ৩৫ শতাংশ রাশিয়া থেকে আসে। যা নিয়ে অসন্তুষ্ট ট্রাম্প। ভারতের পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে গেলে ভারতকে দিতে হবে জরিমানা। এই প্রকাশ্য অসন্তোষের পরেও নয়াদিল্লি কিন্তু আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার বার্তা দিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়ালকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রাশিয়ার প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘আমেরিকা এবং ভারতের সম্পর্ক অনেক পরিবর্তন এবং চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে এগিয়েছে। একে অপরের স্বার্থের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধা অটল রয়েছে। আমেরিকার সঙ্গে আমাদের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার। গত কয়েক বছরে তা আরও শক্তিশালী হয়েছে। আমাদের সঙ্গে যত দেশের যত রকমের সম্পর্ক রয়েছে, সেগুলি নিজস্ব যোগ্যতার উপরে দাঁড়িয়ে। তৃতীয় কোনও দেশের আয়নায় এই সম্পর্কগুলিকে দেখা উচিত নয়।’’ তেল আমদানির ক্ষেত্রে তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাজারে কে কী দাম নিচ্ছে এবং সার্বিক বিশ্ব পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে আমরা আমাদের জ্বালানি চাহিদা পূরণ করে থাকি।’’ শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও বারাণসী থেকে বলেছেন, ‘‘পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হতে চলেছে ভারত। তাই নিজের অর্থনৈতিক স্বার্থের বিষয়ে ভারত অবশ্যই সজাগ থাকবে।’’ রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মার্কিন তেল আমদানিও। এই পরিস্থিতিতে পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, তেল বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারত ‘কৌশল’ বদলে ফেলেছে। নতুন অঙ্কে এগোচ্ছে নয়াদিল্লি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement