আয়েষা ফলক। ছবি: ইউটিউবের সৌজন্যে।
একেই বলে বোধহয়, চোরের উপর বাটপাড়ি!
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র আশিফকে অপহরণ করে দুই দুষ্কৃতী। অপহরণের পর বছর একুশের ওই পড়ুয়ার বাড়িতে ফোন করে জানিয়েও দেওয়া হয় সে কথা। চাওয়া হয় ২৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ। হুমকি দেওয়া হয়, পুলিশকে জানালে হিতে বিপরীত হতে পারে। কিন্তু, কে জানত ওই পড়ুয়ার বৌদি অপহরণকারীদের সব চক্রান্ত মাটি করে দেবেন!
অপহরণের পর ওই ছাত্রের পরিবারকে নির্দিষ্ট একটি জায়গা বলে দেয় দুষ্কৃতীরা। সেখানেই টাকা নিয়ে হাজির থাকতে বলা হয়। সময় মতো সেই জায়গায় পৌঁছন আশিফের পরিবারের সদস্যরা। গাড়ি থেকে নেমে ওই ছাত্রের বাড়ির লোকেদের নেমে আসতে দেখে প্রকাশ্যে আসে অপহরণকারীরা। প্রথমেই গাড়ি থেকে এক মহিলাকে নামতে দেখে খুব একটা আমল দেয়নি তারা। কিন্তু, চমকটা ছিল সেখানেই।
গাড়ি থেকে যিনি নেমেছিলেন, তিনি আসলে আয়েষা ফলক। জাতীয় স্তরের শুটার ও কোচ৷ আর সম্পর্কে আশিফের বউদি। বছর তেত্রিশের আয়েশার সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী আলম। গাড়ি থেকে বেরিয়েই আয়েশা হাতে তুলে নেন তাঁর লাইসেন্সওয়ালা পিস্তল। অপহরণকারীরা এগিয়ে আসতেই গুলি চালান তিনি। নিমেষেই দুই অপহরণকারীকে ঘায়েল করেন। যদিও তাঁদের প্রাণে মারেননি৷ এক দুষ্কৃতীর কোমরে গুলি লাগে, অন্য জনের লাগে পায়ে। পিছনেই ছিল পুলিশ৷ বাকি কাজটা তারাই করে।
জাতীয় স্তরের শুটার ও কোচ আয়েষা ।
যেন কোনও সিনেমার চিত্রনাট্য৷ কিন্তু, বাস্তবেই এ কাজ সম্ভব করে তুলেছেন আয়েষা ফলক৷ তিনি জানিয়েছেন, লাইসেন্সওয়ালা পিস্তলটি সব সময়ই নিজের কাছে রাখেন তিনি৷ আশিফের ফোন পেয়ে, প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন মজা করছেন তিনি৷ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া আশিফ৷ ক্লাস শেষে ক্যাব চালিয়ে পকেট মানি উপার্জন করেন৷ গত সপ্তাহে বুধবার তাঁর গাড়িতে ওঠে দুই দুষ্কৃতী। আশিফকে জোর করে আটকে রেখে টাকা চাওয়া হয়। এর পরেই স্বামীর সঙ্গে মিলে দেওরকে উদ্ধার করার ছক কষেন আয়েষা।
আরও পড়ুন: রাস্তায় প্রস্রাব করার প্রতিবাদ, যুবককে পিটিয়ে খুন দিল্লিতে
দুই অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আয়েশার পিস্তলটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দিল্লির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার। আত্মরক্ষায় গুলি চালানোয় আয়েশার বিরুদ্ধে কোনও গুরুতর অভিযোগ দায়ের করা হবে না বলেও পুলিশ জানিয়েছে। আয়েশার এই সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ।