পি চিদম্বরম।—ফাইল চিত্র।
গণভোটের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নেহরু, তবে তা অবিভক্ত কাশ্মীরে। বর্তমানে ভারতের হাতে যে কাশ্মীর রয়েছে, সেখানে নয়, দাবি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের। শনিবার চেন্নাইয়ে নিজের লেখা ‘আনডন্টেড: সেভিং দ্য আইডিয়া অফ ইন্ডিয়া’ বইয়ের উদ্বোধনে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই এমন মন্তব্য করেন। তাঁর কথায়, কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই গণভোটের প্রশ্নই ওঠে না। তবে স্বশাসনের অধিকার দেওয়া যেতেই পারে।
চেন্নাইয়ে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিএমকে নেতা থামিজাচি থাঙ্গপন্ডিয়ান। জওহরলাল নেহরু কাশ্মীরে গণভোটের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা নিয়ে জানতে চাইলে চিদম্বরম বলেন,‘‘অবিভক্ত জম্মু-কাশ্মীরে গণভোটের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এই মুহূর্তে পুরনো চিন্তা-ভাবনা থেকে সরে এসেছে জম্মু। লাদাখ, লেহ এবং কার্গিলের চিন্তা-ভাবনাও পাল্টেছে। পরিস্থিতি এতটাই পাল্টে গিয়েছে যে, আজ আর সেখানে গণভোটের যুক্তি খাটে না।’’
তবে ভারতের অংশ কাশ্মীরকে যে কোনও মতেই হাতছাড়া করার পক্ষপাতী নন তিনি, তাও স্পষ্ট জানিয়ে দেন চিদম্বরম। তাঁর কথায়, ‘‘কাশ্মীরকে ভারতের থেকে আলাদা করায় একেবারেই সম্মতি নেই আমার। কোনও পরিস্থিতিতেই তা হতে দেওয়া যাবে না। তবে যতদূর জানি, ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে থেকেই স্বশাসনের দাবি জানাচ্ছেন কাশ্মীরিরা। তাতে সমস্যা থাকার কথা নয়। এই টুকু দেওয়া যেতেই পারে।’’
আরও পড়ুন: ‘আর ৭৩ সিলেক্টেড’, পাক যুদ্ধবিমানকে ধ্বংস করার আগে এই বার্তাই দিয়েছিলেন অভিনন্দন
আরও পড়ুন: রাজ্য জুড়ে বাইক মিছিল, কলকাতা-সহ নানা জেলায় পুলিশ-বিজেপি খণ্ডযুদ্ধ
গত কয়েকবছরে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। তবে সামরিক সংঘাত নয়, বরং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই পড়শি দেশের সঙ্গে সমঝোতায় আসতে হবে বলে মত চিদম্বরমের। কংগ্রেস বিধায়ক বিজয় ধরণীর প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘ভারতে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতেই সব ক্ষমতা। পাকিস্তানের শাসনব্যবস্থা একেবারেই আলাদা। কেন্দ্রীয় সরকার, সেনা এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে ক্ষমতা ভাগ হয়ে গিয়েছে। জইশ-ই-মহম্মদের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলিও যথেষ্ট ক্ষমতাশালী। সরকারের তোয়াক্কা না করেস নিজেদের মর্জি মাফিক কাজ করে তারা। এমন অবস্থায় পাকিস্তানের সঙ্গে সমঝোতা করা কষ্টসাধ্য। কিন্তু অটলবিহারী বাজপেয়ীর কথা মনে রাখতে হবে, পরবর্তী কালে মনমোহন সিংহও যে কথা একাধিকবার বলেছেন, চাইলে বন্ধু পাল্টানো যায়, পড়শি পাল্টানো যায় না। পাকিস্তান আমাদের পড়শি, চিরকাল তাদের নিয়েই চলতে হবে। তাই আলোচনা ছাড়া পথ নেই। যুদ্ধ এই সমস্যার সমাধান কখনওই হতে পারে না। তাই কষ্ট হলেও, আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।’’আর কিছু না হলেও, কাশ্মীর উপত্যকায় শান্তি টিকিয়ে রাখতে, কাশ্মীরবাসীদের নিরাপত্তার স্বার্থে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া উপায় নেই বলে মত চিদম্বরমের।
(কী বললেন প্রধানমন্ত্রী, কী বলছে সংসদ- দেশের রাজধানীর খবর, রাজনীতির খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)