ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকার পর তার প্রতিবেশী দেশ মেক্সিকোও ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার পথে হাঁটছে। কিছু দিন আগে সেই ঘোষণার পর সে দেশের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের। তবে আলোচনায় কাজ না হলে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে নয়াদিল্লিও। সংবাদসংস্থা পিটিআইকে এক আধিকারিক এমনটাই জানিয়েছেন।
গত ১১ ডিসেম্বর নতুন শুল্ক নীতিতে সম্মতি দিয়েছে মেক্সিকোর সেনেট। সেখানে বলা হয়েছে, যে সমস্ত দেশের সঙ্গে মেক্সিকোর মুক্ত বাণিজ্যনীতির চুক্তি নেই, সেই সমস্ত দেশের পণ্যে শুল্ক আরোপ করা হবে। ৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভারত ছাড়াও সেই তালিকায় রয়েছে ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, চিন, তাইল্যান্ড। সূত্রের খবর, সেপ্টেম্বর মাস থেকেই এ বিষয়ে মেক্সিকো সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে সেখানকার ভারতীয় দূতাবাসের। ভারতকে এই নতুন শুল্কের আওতার বাইরে রাখার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু লাভ হয়নি।
এক আধিকারিক পিটিআইকে বলেছেন, ‘‘মেক্সিকোর সঙ্গে বন্ধুত্বকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় ভারত। দুই দেশের মধ্যে স্থিতিশীল, ভারসাম্যযুক্ত বাণিজ্যনীতি তৈরি করতে সবরকম আলোচনায় আমরা প্রস্তুত। যাতে দুই দেশের ব্যবসায়ী এবং উপভোক্তাই লাভবান হন। এ বিষয়ে দেশের বাণিজ্য মন্ত্রক মেক্সিকোর অর্থ মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলছে। বিশ্বনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং পারস্পরিক লাভজনক সমাধান খুঁজে বার করার চেষ্টা চলছে।’’ কিন্তু আলোচনায় কাজ না হলে? ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘ভারতীয় রফতানিকারকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ করতেই পারে নয়াদিল্লি। আমাদের সেই অধিকার রয়েছে। তবে আলোচনার মাধ্যমেই আমরা এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করব।’’ ভারতের বাণিজ্যসচিব রাজেশ আগরওয়ালের সঙ্গে মেক্সিকোর অর্থ মন্ত্রকের উপমন্ত্রী লুইস রসেন্ডোর একটি বৈঠক ইতিমধ্যে হয়ে গিয়েছে। আগামী দিনে আরও কিছু বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে।
ভারত থেকে বিভিন্ন গা়ড়ির যন্ত্রাংশ, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, জৈব রাসায়নিক, ওষুধ, পোশাক এবং প্লাস্টিকের পণ্য মেক্সিকোতে রফতানি করা হয়। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪-২৫ সালে মেক্সিকোতে মোট ৫২ হাজার কোটি টাকার পণ্য রফতানি করেছিল ভারত। মেক্সিকো থেকে আমদানি করা হয়েছিল ২৬ হাজার কোটি টাকার পণ্য। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনও রকম পূর্ব-আলোচনা ছাড়াই মেক্সিকো চড়া হারে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় নয়াদিল্লি খানিক অসন্তুষ্ট। সরকারি আধিকারিককে উল্লেখ করে তা জানিয়েছে পিটিআই। ভারত বিশ্বাস করে, এই সিদ্ধান্ত সহযোগিতামূলক বা স্বচ্ছতার নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তবে আলোচনা চলছে। এই মুহূর্তে মেক্সিকোর বিরুদ্ধে কঠোর কোনও পদক্ষেপের ভানা নেই নয়াদিল্লির।