তিস্তা চুক্তি নিয়ে দিল্লি বার্তা পাঠাল ঢাকাকে

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরের আগে আজ তিস্তা চুক্তি নিয়ে বার্তা দিল নয়াদিল্লি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:১১
Share:

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরের আগে আজ তিস্তা চুক্তি নিয়ে বার্তা দিল নয়াদিল্লি।

Advertisement

এ দিন কেন্দ্রীয় জলসম্পদ প্রতিমন্ত্রী সঞ্জীবকুমার বালিয়ান লোকসভায় একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘‘তিস্তা চুক্তি রূপায়ণের বিষয়ে ভারত সরকার উদ্যোগী। সব পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সমাধান সূত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা হচ্ছে।’’

১৭ তারিখ নয়াদিল্লি আসছেন হাসিনা। পাকিস্তানের সঙ্গে ধারাবাহিক সংঘাতের প্রক্ষাপটে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে বিদেশ মন্ত্রক। ঢাকা সফরে যাওয়া প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে হাসিনা আজও জানিয়েছেন, সন্ত্রাস প্রশ্নে দিল্লির পাশেই থাকবে ঢাকা। উরি-সন্ত্রাসের বিরোধিতা করে ইসলামাবাদে সার্ক সম্মেলন বয়কট করেছে ঢাকা। ভবিষ্যতেও কৌশলগত প্রশ্নে হাসিনাকে পাশে পাওয়া প্রয়োজন মোদী সরকারের। তাই তিস্তা চুক্তি রূপায়ণ করতে ভারত যে কোমর বেঁধেছে, সেই বার্তা দিতে চাইছে দিল্লি।

Advertisement

লোকসভায় প্রতিমন্ত্রীর এই ঘোষণার মাধ্যমে মমতা সরকারকেও বার্তা দিতে চাইছে মোদী সরকার। নোট বাতিল-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য যতই দ্বৈরথ চলুক না কেন, তিস্তা প্রশ্নে কিন্তু মমতার সঙ্গে সমন্বয় রেখেই এগোতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। মোদীর সঙ্গে ঢাকা সফর এবং স্থলসীমান্ত চুক্তির সফল রূপায়ণের পরে বাংলাদেশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনোভাব এখন অনেক নমনীয়। এ মাসের ১৫ তারিখ থেকে কলকাতার নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ‘বিজয় দিবস’ উপলক্ষে পাঁচ দিনের বাংলাদেশ উৎসব শুরু হবে, যার উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকার এই উৎসবের অন্যতম সহযোগী। ঢাকাও মমতার এই মনোভাবকে আশাপ্রদ বলেই মনে করছে। বাংলাদেশ সরকারের এক বর্ষীয়ান মন্ত্রীর কথায়, ‘‘তিস্তা চুক্তি নিয়ে দিল্লির সঙ্গে কথা চলছে ঢাকার। কিন্তু রাজ্য সরকারের মনোভাবও এ বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি বিভিন্ন বিষয়ে যে ভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন, তা খুবই আশাপ্রদ।’’

কয়েক মাস আগেই বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছিলেন, ‘‘তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশ, ভারত ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ঐকমত্যে পৌঁছনো জরুরি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে চান।’’ সূত্রের খবর, প্রচারের আলো এড়িয়ে তিস্তা চুক্তি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্র। মমতা চান উত্তরবঙ্গের জন্য পর্যাপ্ত জলের নিশ্চয়তা দিয়ে তবেই বাংলাদেশকে তিস্তার জল দিক কেন্দ্র। বাংলাদেশের ওই মন্ত্রীর কথায়— মমতাকেও রাজ্যের স্বার্থ দেখতে হবে। কিন্তু তিস্তার জলের ভাগ কী হবে, ঢাকা চায় আলোচনার মাধ্যমেই তার মীমাংসা হোক। বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলিও জানান, তিস্তা নিয়ে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আস্থা রেখেই এগোতে চান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন