অগ্নি প্রাইম ক্ষেপণাস্ত্র। ছবি: পিটিআই।
ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও মজবুত করতে তৈরি করা হল ‘অগ্নি প্রাইম’ ক্ষেপণাস্ত্র। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ হল বৃহস্পতিবার। ওড়িশার চাঁদিপুর থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ-পরীক্ষা হয়। ডিআরডিও জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা সফল হয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এই সমরাস্ত্রের পরীক্ষার প্রশংসা করে জানিয়েছেন, দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে মজবুত করার আরও একটি প্রক্রিয়া সফল হল। তার জন্য গোটা দেশ গর্বিত। ডিআরডিও এবং স্ট্র্যাটেজিক ফোর্স কমান্ড-কে ধন্যবাদও জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
‘অগ্নি প্রাইম’ মূলত ‘নেক্সট জেনারেশন’ ক্ষেপণাস্ত্র। এই ক্ষেপণাস্ত্রকে চলমান লঞ্চিং ব্যবস্থার মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা হয়। আর সেই পরীক্ষা সফলও হয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ট্রেন থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। যেটিকে সামরিক পরিভাষায় ‘রেল-বেসড মোবাইল লঞ্চার সিস্টেম’ বলা হয়। এই প্রথম কোনও ট্রেনের সঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ব্যবস্থাকে জুড়ে দেওয়া হল। ফলে রেললাইন দিয়ে যে কোনও জায়গায় এই লঞ্চিং ব্যবস্থাকে নিয়ে যাওয়া যাবে। ফলে দেশের যে সব জায়গায় রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে, সেই সব জায়গা থেকে অনায়াসে শত্রুপক্ষকে নিশানা বানাতে পারবে এই ক্ষেপণাস্ত্র।
‘নেক্সট জেন’ এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ২০০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুকে নিমেষে ধ্বংস করতে পারে। শুধু তা-ই নয়, শত্রুপক্ষের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সহজে বোকা বানিয়ে নিশানা বানাতে পারে।
রেল লঞ্চার সিস্টেম আসলে কী?
এটি এক ধরনের বিশেষ উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা। যা রেললাইন ধরে যাতায়াত করতে পারে। রেলইঞ্জিনের সঙ্গে একটি পণ্যবাহী ট্রেনের বগির মতো দেখতে উৎক্ষেপণ ব্যবস্থাকে জুড়ে দেওয়া হয়। যা কোনও ভাবেই বাইরে থেকে বোঝা সম্ভব নয় যে, এটি একটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা। সাধারণ পণ্যবাহী ট্রেনের মতোই মনে হতে পারে। এত দিন পর্যন্ত স্থিতিশীল লঞ্চিং প্যাডের মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হত। এ বার চলমান লঞ্চিং প্যাডের মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ প্রক্রিয়া শুরু হল।
রেল মোবাইল লঞ্চারের বেশ কয়েকটি সুবিধা রয়েছে। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দেশের রেল যোগাযোগকারী যে কোনও জায়গায় অনায়াসে নিয়ে যাওয়া যায়। ফলে শত্রুপক্ষের নজর সহজে এড়ানো যাবে। চলতে চলতেই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালাতে পারে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এটিকে এমন ভাবে বানানো হয়েছে যে, ট্রেনের ভিড়ে সহজে মিশে শত্রুপক্ষের নজর এড়াতে পারবে।