প্রতীকী ছবি।
বেজিং-এর বিরোধিতাকে অগ্রাহ্য করেই ভিয়েতনামে উপগ্রহ কেন্দ্র খুলতে চলেছে ভারত। এর ফলে দক্ষিণ চিন সাগরের উপরে নজরদারি রাখা সম্ভব হবে। পাশাপাশি চিনের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য মুঠোয় আসবে সাউথ ব্লকের।
আসিয়ান সম্মেলনের পার্শ্বমঞ্চে প্রায় নিঃশব্দে এই পদক্ষেপটি সেরে ফেলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। গত কাল রাতে ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী নুয়েন জুয়ান ফুক-এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যে দু’টি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সই হয়, তার মধ্যে অন্যতম এই উপগ্রহ চুক্তিটি। এরপর হো চি মিন সিটি-তে ভারতের ইসরো এবং ভিয়েতনামের জাতীয় রিমোট সেন্সিং ডিপার্টমেন্ট যৌথ ভাবে এই কেন্দ্রটি বসানোর কাজ শুরু করবে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে চিন নানা স্তরে ভারতের এই প্রস্তাবিত উদ্যোগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। শি চিনফিং সরকারের বক্তব্য, এই উপগ্রহ কেন্দ্র বসানোর ফলে কৌশলগত ভাবে ভারত এক ধাপে অনেকটাই এগিয়ে যাবে। এর আগে সে দেশের সরকারি মুখপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’-এর একটি রিপোর্টে যথেষ্ট কড়া সুরে জানানো হয়, হো চি মিন সিটিতে ভারতীয় উপগ্রহ কেন্দ্র খোলার বিষয়টি স্পষ্ট ভাবেই আঞ্চলিক বিবাদকে উস্কানি দেওয়ার পদক্ষেপ। এটাও ঘটনা যে চিনের ঘোরতর আপত্তিতে কিছুটা দ্বিধার মধ্যে পড়ে যায় ভিয়েতনামও। চুক্তিটি নিয়ে তারাও কিছুটা ধীরে চলার নীতি নেয়। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, গত দু’বছর ধরে বিষয়টি নিয়ে হ্যানয়ের সঙ্গে দৌত্য চালিয়ে গিয়েছে নয়াদিল্লি। আর এই দু’বছরের মধ্যে দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের একাধিপত্য নিয়ে ক্ষোভ বেড়েছে ভিয়েতনাম-সহ আসিয়ান ভুক্ত বেশ কিছু দেশের। বিদেশ মন্ত্রক ঘরোয়া ভাবে জানাচ্ছে, এই আঞ্চলিক ক্ষোভকেই কৌশলগত ভাবে কাজে লাগিয়েছে সাউথ ব্লক।
দক্ষিণ চিন সাগরে ভিয়েতনামের জন্য চিহ্নিত ব্লকগুলি থেকে ভারতীয় সংস্থা ওএনজিসি-র তৈল নিষ্কাশন নিয়ে বরাবর আপত্তি জানিয়ে এসেছে বেজিং। এই মাসেরই গোড়ায় নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত থন সিন থানকে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক ডেকে পাঠিয়েছিল তৈলক্ষেত্রে আরও বড় মাপের বিনিয়োগের প্রস্তাব দিতে। তৎক্ষণাৎ চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ঘটনাটির নিন্দা করে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন বেজিং-এ।