পাক-অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে তদন্ত চায় ভারত

রাষ্ট্রপুঞ্জে নওয়াজ শরিফের বক্তৃতার আগেই প্রকাশ্যে এসেছে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে পাকিস্তান থেকে ‘‘আজাদি’’র দাবিতে আন্দোলনের ভিডিও। সেটিকে হাতিয়ার করে এ বার অধিকৃত কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি তুলল ভারত। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জেও পাকিস্তানকে কড়া জবাব দিলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:৫১
Share:

রাষ্ট্রপুঞ্জে নওয়াজ শরিফের বক্তৃতার আগেই প্রকাশ্যে এসেছে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে পাকিস্তান থেকে ‘‘আজাদি’’র দাবিতে আন্দোলনের ভিডিও। সেটিকে হাতিয়ার করে এ বার অধিকৃত কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি তুলল ভারত। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জেও পাকিস্তানকে কড়া জবাব দিলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।

Advertisement

বুধবার রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় নিজের বক্তৃতায় কাশ্মীর প্রসঙ্গ টেনে ভারতকে আক্রমণ করেন শরিফ। তাঁর ৪ দফা ‘শান্তিপ্রক্রিয়া’র অঙ্গ হিসেবে কাশ্মীর থেকে ভারতীয় সেনা সরানোর দাবি করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে ফের কাশ্মীরের আন্তর্জাতিকীকরণের মরিয়া চেষ্টা করেছেন তিনি। কাশ্মীরের সঙ্গে প্যালেস্তাইনের তুলনা টেনে শরিফ বলেছেন, ‘‘কাশ্মীরি ও প্যালেস্তাইনিরা বিদেশি দখলদারির শিকার।’’ রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের কাশ্মীর নিয়ে একাধিক প্রস্তাব কার্যকর না হওয়াটা রাষ্ট্রপুঞ্জেরই ব্যর্থতা বলেও দাবি করেন শরিফ। তার জবাবে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় সাফ বলেছেন, ‘‘৪ দফার প্রয়োজন নেই। কেবল সন্ত্রাস ছড়ানো বন্ধ হলেই ফের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু হতে পারে।’’

কিন্তু শরিফ যখন কাশ্মীর নিয়ে ভারতের দিকে আঙুল তুলছেন, তার আগেই ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে আসার দাবি জানাতে পথে নেমেছেন অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দারা। মুজফ্ফরাবাদ, গিলগিট, কোটলি- সর্বত্র একই দৃশ্য। এবং পাক-বিরোধী সেই বিক্ষোভ যে নির্মম ভাবে দমন করেছে পাক বাহিনী, তা-ও দেখা গিয়েছে। ফলে, জম্মু-কাশ্মীরে বার বার মানবাধিকার লঙ্ঘনের পাক অভিযোগের জবাব দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে দিল্লি।

Advertisement

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজুর কথায়, ‘‘অধিকৃত কাশ্মীরে পাক দমনপীড়নের কথা গোয়েন্দা সূত্রে জানতাম। এখন তা সবাই দেখলেন। পাকিস্তানের উচিত ওই এলাকা নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলিকে তদন্ত করতে দেওয়া।’’ প্রায় একই সুরে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ বলেছেন, ‘‘এই ভিডিও বিশ্বের চোখ খুলে দিয়েছে। অধিকৃত কাশ্মীরে বরাবরই অসন্তোষ আছে। পাকিস্তানের অন্য প্রদেশের চেয়ে সেখানে মানুষের উপরে দমনপীড়নের মাত্রাও বেশি।’’

পাকিস্তান বিশেষজ্ঞদের মতে, বরাবরই উর্দুভাষী পঞ্জাবিদের সঙ্গে অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দাদের বিরোধ রয়েছে। সেইসঙ্গে রয়েছে আর্থিক বৈষম্য। ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক দাবাখেলায় বার বার অধিকৃত কাশ্মীরকে ব্যবহার করে ইসলামাবাদ। কিন্তু ওই এলাকার উন্নয়নের জন্য বিশেষ কিছুই করে না তারা। দুনিয়া ২০১৫ সালে পৌঁছে গেলেও অধিকৃত কাশ্মীরে তার বিশেষ প্রতিফলন দেখা যায় না। এক প্রাক্তন কূটনীতিকের কথায়, ‘‘ওই প্রদেশে তথাকথিত নির্বাচিত সরকার আছে ঠিকই। কিন্তু তা পুরোপুরি পাক সেনা ও আইএসআইয়ের নির্দেশে চলে।’’ আবার সীমান্ত বিরোধের ক্ষেত্রে ভারতীয় পাল্টা হামলার ধাক্কাও অধিকৃত কাশ্মীরবাসীদের ই সামলাতে হয়। ফলে, স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই এই এলাকার বাসিন্দারা ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেমেছেন। এমনকী, তাঁদের একাংশের মধ্যে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় কাশ্মীরে চলে আসার প্রবণতাও আছে বলে দাবি কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতে, ভারতীয় কাশ্মীরে তবু কিছুটা মানুষের মতো বাঁচা যাবে বলে মনে করেন অধিকৃত কাশ্মীরের বেশ কিছু বাসিন্দা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement