পুলওয়ামা হামলার পর ভারতের আচমকা প্রত্যাঘাতে পাকিস্তানের দাবি মাটিতে মিশে গিয়েছে। ছবি: এএফপি।
পুলওয়ামা হামলার দিন কয়েক পরেই পাকিস্তানের দাবি ছিল, তাদের কখনই চমকে দিতে পারবে না ভারত। উল্টে ভারতকে চমকে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে তারা। তবে মঙ্গলবার ভোরে ভারতের আচমকা প্রত্যাঘাতে সে দাবি মাটিতে মিশে গিয়েছে। একেবারে আক্ষরিক অর্থেই হতচকিত হয়ে গিয়েছে পাকিস্তান। ভারতের প্রতিঘাতের রেশ সামলাতে জরুরি ভিত্তিতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশিরা।
১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় জঙ্গিহানার কিছু দিন পরেই ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে পাক সেনার মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর বলেছিলেন, “পাকিস্তানকে ঘাঁটাতে যাবেন না।” তাঁর দাবি ছিল, “পাকিস্তান যুদ্ধ চায় না। তবে দয়া করে এটা মাথায় রাখবেন, কোনও রকম আগ্রাসী পদক্ষেপের উদ্যোগ নিলে আগে আমাদের চমকে দিতে হবে। কারণ, তা না হলে আমরাই চমক দেব।
এ দিনের অভিযানের পর ভারতীয় বিদেশসচিব বিজয় গোখেল জানিয়েছেন, গোয়েন্দাদের সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই পাক অধিকৃত কাশ্মীরে হানা দেয় ১২টি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান। খাইবার পাখতুনখোয়ার বালাকোটে পাক মদতেপুষ্ট জইশ-ই-মহম্মদের সবচেয়ে বড় ঘাঁটিও ধ্বংস করে দেওয়া হয়। নিকেশ হয় ২০০ থেকে ২৫০। তাদের মধ্যে রয়েছে জইশ প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহারের শ্যালক মৌলানা ইউসুফ আজহার-সহ একাধিক জঙ্গি, তাদের প্রশিক্ষক, জইশের প্রথম সারির কম্যান্ডাররা।
ভারত পাক সম্পর্কের উত্থান পতন সম্পর্কে আপনি কতটা জানেন?
আরও পড়ুন: অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে প্রত্যাঘাত বায়ুসেনার, নিকেশ ৩০০ জঙ্গি, বোমাবর্ষণে ধ্বংস একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি
আরও পড়ুন: দেশ নিরাপদ হাতে রয়েছে, মাথা নত হতে দেব না: প্রত্যাঘাতের পরে বললেন মোদী
বিদেশসচিবে দাবি, ছিল, পাকিস্তানে এবং অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি প্রশিক্ষণ ঘাঁটিগুলির অবস্থান নিয়ে পড়শি দেশকে জানানো হলেও তা নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেনি তারা। উল্টে তাদের অস্তিত্ব অস্বীকার করেছে পাকিস্তান।
আরও পড়ুন: পরপর ৫টা বিস্ফোরণ! উড়ে এল পাক ফাইটার জেট, তার পর...
আরও পড়ুন: ‘গাছের উচ্চতায় নেমে গিয়ে আক্রমণ চালিয়েছে ভারতের যুদ্ধবিমান মিরাজ ২০০০’
শুধুমাত্র জঙ্গি ঘাঁটিগুলির অস্তিত্বই নয়, এ দিন ভারতের অভিযানে ক্ষয়ক্ষতি বিষয়টিও স্বীকার করতে চায়নি পাকিস্তান। উল্টে মেজর জেনারেল আসিফ গফুরের দাবি ছিল, পাকিস্তানের পাল্টা প্রতিরোধের মুখে পড়ে ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলি ফিরে যায়।
এ দিন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রায় ৮০ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে বালাকোট, চকোটি এবং মুজফ্ফরাবাদে হানা দেয় ভারত। সেই প্রসঙ্গে পাক সেনার দাবি, নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে মাত্র তিন-চার কিলোমিটার ভিতরে ঢুকেছিল ভারতীয় বায়ুসেনা। এবং ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলির বোমা খোলা এলাকায় পড়ায় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবরপেতে পড়ুন আমাদেরদেশবিভাগ।)