ভারতীয় বায়ুসেনা রয়েছে বিশ্বের প্রথম দশটি শক্তিশালী বায়ুসেনা বাহিনীর তালিকায়। ভারতের স্থান তাতে ষষ্ঠ। বায়ু সেনার ৬০টি বিমান ঘাঁটি রয়েছে। এ ছাড়াও বিদেশের মাটিতে ভারতীয় বায়ু সেনার ঘাঁটি রয়েছে তাজিকিস্তানের ফারখোরে।
ভারতের আগে রয়েছে আমেরিকা, রাশিয়া, ইজরায়েল, ব্রিটেন, চিন, ফ্রান্স। ভারতের থেকে পিছিয়ে রয়েছে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, তারও পরে রয়েছে পাকিস্তান। বিমানবাহিনীর যতগুলি কম্যান্ড রয়েছে তার মধ্যে ওয়েস্টার্ন এয়ার কম্যান্ড সবচেয়ে বড়। এর নিজের ১৬টি বিমান ঘাঁটি রয়েছে। কোন কোন বিশেষ হাতিয়ার থাকায় ভারতীয় বায়ুসেনা বাহিনী এতটা শক্তিশালী?
১৯৩২ সালের ৮ অক্টোবর ভারতীয় বায়ুসেনা প্রতিষ্ঠিত হয়। ভারতীয় বায়ুসেনায় রয়েছে এক লক্ষ সত্তর হাজার সেনা, রয়েছে ১৫০০ বিমান। এরই মধ্যে মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমানের সাহায্যেই জঙ্গি ঘাঁটিতে অভিযান করেছিল বায়ুসেনা। এ ছাড়াও কী কী রয়েছে তাদের হাতে।
ভারতীয় বায়ুসেনার সিয়াচেন গ্লেসিয়ার সবথেকে উঁচু এয়ার স্টেশন। প্রায় ২২ হাজার ফুট উচ্চতায় রয়েছে এটি। ১৯৯০ থেকে বায়ু সেনায় যুক্ত হন মহিলারা। ১৯৯১ সাল থেকে নিযুক্ত করা হয় মহিলা পাইলটকে চপার ও পরিবহণ বিমানের জন্য। তাঁরাও শক্ত করেছেন বায়ুসেনাকে। দেখে নেওয়া যাক, কোন কোন হাতিয়ারের কারণে এত শক্তিশালী ভারতীয় বায়ুসেনা।
মিরাজ ২০০০ ছাড়াও বায়ুসেনার হাতে রয়েছে ২০০টি সুখোই এসইউ-৩০এমকেআই ফ্ল্যাঙ্কার। মিগ-২৯ সম্প্রতি আধুনিকীকরণ করা হয়েছে। পাল্লা, লক্ষ্যমাত্রা, ক্ষেপণাস্ত্রের সম্ভার ও রাডার সহযোগে বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান এয়ার টু এয়ার এবং এয়ার টু গ্রাউন্ড অভিযানের ক্ষেত্রে অন্যতম দক্ষ বাহিনী।
এমআই-২৫/এমআই-৩৫ রয়েছে বাহিনীর কাছে। দুটি ইঞ্জিনের টার্বোশ্যাফ্ট, অ্যান্টি আর্মার এই হেলিকপ্টারে ৮টি স্কোয়াড থাকে। নোজ বারবেটে থাকে ১২.৭ এমএম রোটারি গান। ১৫০০ কেজি পর্যন্ত অতিরিক্ত ওজন বহনে সক্ষম কপ্টারে রয়েছে স্করপিয়ন অ্যান্টি ট্যাঙ্ক মিসাইল। গতি ঘণ্টায় ৩১০ কিমি।
এমআই-২৬: দুটি ইঞ্জিনের টার্বোশ্যাফ্ট রুশ প্রযু্ক্তিতে তৈরি কপ্টার, প্রায় ৭০ কমবাট ইক্যুয়িপড ট্রুপ থাকে এতে। ২০,০০০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত অতিরিক্ত ওজন বহনে সক্ষম কপ্টারে। গতি ঘণ্টায় ২৯৫ কিমি।
এমআই-১৭ভি৫: অত্যন্ত আধুনিক মানের এই সামরিক কপ্টারে রয়েছে নেভিগেশনাল ইক্যুইপমেন্টস, অ্যাভিওনিক্স, আবহাওয়া সংক্রান্ত রাডার।
চেতক: এক ইঞ্জিন টার্বোশ্যাফ্ট, তুলনামূলক হাল্কা ফরাসি প্রযুক্তিতে তৈরি কপ্টারে ছয় যাত্রী বহনে সক্ষম। ৫০০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত ওজন বহনে সক্ষম। গতি ঘণ্টায় ২২০ কিমি।
চিতা: এক ইঞ্জিন টার্বোশ্যাফ্ট, ফরাসি প্রযুক্তিতে তৈরি কপ্টারে তিন জন যাত্রী বহনে সক্ষম। ১০০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত অতিরিক্ত ওজন বহনে সক্ষম। গতি ঘণ্টায় ১২১ কিমি।
কপ্টার ছাড়াও রয়েছে মিগ ২৯ বিমানের মতো শক্তিশালী সামরিক বিমান। দুটি ইঞ্জিন, এক আসন বিশিষ্ট এয়ার সুপিরিয়োরিটি যুদ্ধবিমান রুশ প্রযুক্তিতে তৈরি। গতি ২৪৪৫ কিমি প্রতি ঘণ্টায়। ৩০ এমএম কামান-সহ চারটি আর৬০ ক্লোজ কমব্যাট, দুটি আর২৭ আর মিডিয়াম পাল্লার রাডার গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে।
মিগ ২৯ ছাড়াও রয়েছে মিগ ২৭ বিমান। এক ইঞ্জিন, এক আসন বিশিষ্ট এয়ার সুপিরিয়োরিটি যুদ্ধবিমান রুশ প্রযুক্তিতে তৈরি। গতি ১৭০০ কিমি প্রতি ঘণ্টায়। ২৩ এমএম ৬ ব্যারেল রোটারি ইন্টিগ্রাল কামান রয়েছে এতে। অতিরিক্ত ৪ হাজার কিলোগ্রাম অস্ত্র বহনে সক্ষম।
সেনার কাছে রয়েছে মিগ ২১ বাইসন। রুশ প্রযুক্তিতে তৈরি এক ইঞ্জিন, এক আসন বিশিষ্ট মাল্টিরোল সামরিক যুদ্ধবিমানটি বায়ুসেনার পাঁজর বলা যায়। গতি ২২৩০ কিমি প্রতি ঘণ্টায়। ২৩ এমএম দুটি ব্যারেলযুক্ত কামান ও চারটি আর৬০ ক্লোজ কমবাট মিসাইল রয়েছে এতে। অতিরিক্ত ৪ হাজার কিলোগ্রাম অস্ত্র বহনে সক্ষম।
বায়ুসেনা বাহিনীর অন্যতম ভরসা জাগুয়ার: দুটি ইঞ্জিনের, এক আসন বিশিষ্ট ডিপ পেনিট্রেশন স্ট্রাইক যুদ্ধবিমান ১৩৫০ কিমি প্রতি ঘণ্টায় উড়তে পারে। দুটি ৩০ এমএম বন্দুক রয়েছে, এছাড়াও দুটি আর-৩৫০ ম্যাজিক সিসিএম ছাড়াও অতিরিক্ত ৪৭৫০ কিলোগ্রাম ওজনে (বোমা বা জ্বালানি)সক্ষম।