নরেন্দ্র মোদী
চার বছরে ৬০টিরও বেশি দেশ ঘুরে ফেলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অথচ তথ্য বলছে, কূটনীতিক নিয়োগের বিচারে অনেক দেশের থেকেই পিছিয়ে ভারত। তাই প্রধানমন্ত্রীর সফরে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট দেশে থাকা ভারতীয় দূতাবাসকে। পড়শি চিন আবার এ ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে। এ ভাবে বিশ্ব কূটনীতির মঞ্চে ভারত পিছিয়েই পড়ছে বলে মনে করছেন বিদেশ মন্ত্রকের প্রাক্তন কর্তারা।
আগামী সপ্তাহে দিল্লি আসছেন মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো এবং প্রতিরক্ষাসচিব জেমস ম্যাটিস। আসছেন বিশেষ কূটনৈতিক প্রতিনিধি দলও। অথচ কর্মীর অভাবে ধুঁকছে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের তুলনায় ভারতকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিতে চাইছে ট্রাম্প প্রশাসন। সেখানে এই ঘাটতি সাউথ ব্লককে বিপাকে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা অনেকের।
পরিসংখ্যান বলছে, নিউজ়িল্যান্ড বা সিঙ্গাপুরের মতো ছোট দেশগুলির তুলনায় সংখ্যায় হাতে গোনা বিদেশি কূটনীতিক বেশি রয়েছে ভারতের। ভারতের মতো বড় দেশের যেখানে ৯৪০ জন আইএফএস রয়েছেন, নিউজ়িল্যান্ড বা সিঙ্গাপুরে সেই সংখ্যাটাই যথাক্রমে ৮৮৫ আর ৮৫০। দু’বছর আগে সরকারি পরিসংখ্যানই জানিয়েছিল, প্রায় দেড়শো অফিসার কম ভারতের। তবে এ নিয়ে সরকারি ভাবে মুখ খুলতে চায়নি মন্ত্রক। কোনও রাষ্ট্রনেতার বিদেশ সফরের পরে দু’দেশের মধ্যে আলোচনার কতটা বাস্তবায়িত হল, তা দেখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আইএফএসের অভাবে তাতেও ব্যাঘাত ঘটছে।
অবিলম্বে আইএফএস নিয়োগ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন প্রাক্তন কূটনীতিক তথা কংগ্রেস নেতা শশী তারুর। তাঁর কথায়, ‘‘এত কম লোক নিয়ে বিদেশ নীতি রূপায়ণ অসম্ভব।’’ তারুরের ব্যাখ্যা, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ বা পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠীতে জায়গা করে নেওয়ার চেষ্টায় বড়সড় ধাক্কা দিতে পারে কূটনীতিকদের এই অভাব।
সাউথ ব্লকের মুখপাত্রেরা অনেকেই জানাচ্ছেন, ভাষার সমস্যার জন্য দক্ষিণ আমেরিকার অনেক দেশে দূতাবাস খুলতে পারছে না ভারত। তবে তাঁদের দাবি, এই সমস্যা সম্পর্কে সচেতন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৮ থেকে ’২১ সালের মধ্যে জিবুতি-সহ আফ্রিকার ১৮টি দেশে দূতাবাস খোলার নির্দেশ দিয়েছেন মোদী। তবে লোকসভা ভোটের আগে বিদেশ নীতিতে নরেন্দ্র মোদীর সাফল্যকে তুলে ধরতে গেলে আইএফএস নিয়োগ যে জরুরি, তা বুঝে গিয়েছে সরকারও। সেই মতো পদক্ষেপের ভাবনা রয়েছে তাদের।