Tigiria

ছিল ২৫টি গাড়ি, শিকারের নেশা, নিঃস্ব অবস্থায় শেষ জীবন কাটে বিলাসী এই দেশীয় রাজার

অতীতের এই রাজা জানিয়েছিলেন এক কালে গাড়ি ও জিপ মিলিয়ে তাঁর বাহন ছিল মোট পঁচিশটি। পরিচারকের সংখ্যা তিরিশ। ছিল শিকারের নেশাও। তাঁর দাবি, তিনি রাজা থাকাকালীন ১৩টি বাঘ, ২৮টি লেপার্ড এবং একটি পুরুষ হাতি মেরেছিলেন। গ্রামবাসীদের ফসল নষ্ট করছিল বলেই নাকি হাতিটি মারতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৯ ১১:৩৬
Share:
০১ ১০

তিনটে পাহাড় বা গিরি। তার থেকে জায়গার নাম ‘তিগিরিয়া’। আজকের ওড়িশায় কটকের একটি ব্লক। ব্রিটিশ ভারতের তিগিরিয়া রাজন্য এস্টেট। জঙ্গলে ঘেরা এই ছোট্ট জনপদে ঘনবসতির কারণ নাকি ছিল রাজার সুশাসন। অথচ সেই এস্টেটের শেষ রাজা ব্রজরাজ ক্ষত্রিয় বীরবর চমুপতি সিংহ মহাপাত্র চুরানব্বই বছর বয়সে মারা গিয়েছিলেন কপর্দকহীন হয়ে। তাঁর পরিণতি ছিল নিঃস্ব, করুণ ও রিক্ত।

০২ ১০

ব্রজরাজের জন্ম ১৯২১-এর ১৫ অক্টোবর। তাঁর বাবা সুদর্শন ক্ষত্রিয় বীরবর চমুপতি সিংহ ছিলেন তিগিরিয়ার রাজা। ১৯৪০ সালে রায়পুরের রাজকুমার কলেজ থেকে পাশ করার পরে ব্রজরাজ বিয়ে করেন। তাঁর স্ত্রী রানি রসমঞ্জরী দেবী ছিলেন বিহারের সোনপুরের রাজকুমারি।

Advertisement
০৩ ১০

১৯৪৩ সালে সিংহাসনে অভিষেক হয় ব্রজরাজের। অতি-বিলাসী জীবন কাটাতে অভ্যস্ত ছিলেন তিনি। সংবাদমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন তরুণ বয়সে কার্যত আসক্ত ছিলেন সুরা ও ধূমপানে। শৌখিন ছিলেন গাড়ি নিয়ে। বাজারে নিত্যনতুন গাড়ি এলেই কেনার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকতেন। প্রতীকী ছবি।

০৪ ১০

অতীতের এই রাজা জানিয়েছিলেন এক কালে গাড়ি ও জিপ মিলিয়ে তাঁর বাহন ছিল মোট পঁচিশটি। পরিচারকের সংখ্যা তিরিশ। ছিল শিকারের নেশাও। তাঁর দাবি, তিনি রাজা থাকাকালীন ১৩টি বাঘ, ২৮টি লেপার্ড এবং একটি পুরুষ হাতি মেরেছিলেন। গ্রামবাসীদের ফসল নষ্ট করছিল বলেই নাকি হাতিটি মারতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। প্রতীকী ছবি

০৫ ১০

১৯৪৭ সালে তিগিরিয়া স্বাধীন ভারতের অংশে‌ পরিণত হয়। লোপ পায় দেশীয় এস্টেট পরিচয়। রাজা ব্রজরাজ হয়ে যান সাধারণ ভারতীয় নাগরিক। ১৯৬০ সালে ৭৫ হাজার টাকার বিনিময়ে রাজ্য সরকারকে বিক্রি করে দেন তাঁর প্রাসাদ। তাঁর অনুরোধ ছিল, যেন সেখানে বিদ্যালয় তৈরি করা হয়। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

০৬ ১০

ক্ষমতা, পদ ও প্রাসাদহীন ব্রজরাজের কাছ থেকে এরপর চলে যান তাঁর স্ত্রীও। ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় ব্রজরাজ ও রসমঞ্জরীর। দারিদ্রের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছিলেন না রসমঞ্জরী। ব্রজরাজের সঙ্গে সে ভাবে যোগাযোগ রাখতেন না সন্তানরাও।

০৭ ১০

বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো জীবনে ব্রজরাজের সম্বল বলতে কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া সামান্য ভাতা। পরে ১৯৭৫ সালে সেই ভাতাও বন্ধ করে দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী। এরপর এক সময়ের প্রজাদের দয়া দাক্ষিণ্যই ছিল ব্রজরাজের বেঁচে থাকার ভরসা।

০৮ ১০

কিছু দিন থাকতে গিয়েছিলেন বড় দাদার কাছে। তিনিও ছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন দেশীয় রাজা। কিন্তু সেখানেও মন বসল না ব্রজরাজের। ফিরে এলেন তিগিরিয়ায়। ২০১৩ সালে ব্রজরাজের কাছে যাওয়া সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিনিধি জানিয়েছিলেন ভগ্নপ্রায় ঘরে থাকতেন প্রাক্তন রাজা। আসবাব বলতে কয়েকটি প্লাস্টিকের চেয়ার। অ্যাসবেস্টসের ফুটিফাটা ছাদ গলে পড়ছে জল। বিছানার আব্রু ত্রিপল। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

০৯ ১০

এই অবস্থাতেই জীবনের শেষ দিনগুলো কেটেছিল ব্রজরাজের। তাঁর ঘরে ইতস্তত পড়েছিল কিছু বই আর অনেকটা গোবর। কিন্তু মনে কোনও খেদ ছিল না। জানিয়েছিলেন, রাজা থেকে প্রজা হয়ে তাঁর কোনও অনুশোচনা নেই। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

১০ ১০

ব্রজরাজের ছ’জন সন্তানের এক জন মারা গিয়েছিলেন তাঁর জীবদ্দশাতেই। বাকি তিন জন ছেলে এবং দুই মেয়েও যোগাযোগ রাখতেন না। নিঃসঙ্গ অবস্থাতেই মারা গিয়েছিলেন মুকুটহীন রাজা। ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর। ছবি: সোশ্য়াল মিডিয়া

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement