ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
নিজের মেয়েকে খুনের অভিযোগে শিরোনামে উঠে এসেছিলেন বছর দুয়েক আগে। যে জেলে বন্দি রয়েছেন, সেখানকার এক বন্দিনীকে পিটিয়ে খুনের প্রতিবাদ করে, এ বার ফের একবার শিরোনামে ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়। শুধু শিরোনামেই নন, সহ-বন্দিনীদের বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে নতুন মামলাও দায়ের করেছে মুম্বই পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত গত শুক্রবার মুম্বইয়ের বাইলাকুল্লা কারাগারে। এখানেই বন্দি আছেন ইন্দ্রাণী। অভিযোগ, মঞ্জুরা শিটে নামে বছর একত্রিশের এক বন্দিনীকে সে দিন প্রচণ্ড মারধর করেন কয়েকজন জেলকর্মী। শুক্রবার রাতেই মঞ্জুরাকে মুম্বইয়ের জেজে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, অনেক আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রেই জানানো হয়, মৃতের ফুসফুসে পর্যন্ত গুরুতর আঘাত রয়েছে।
আরও পড়ুন: আগামী চার মাসে আরও ঝাঁ চকচকে হবে রাজধানী-শতাব্দী
শুক্রবার রাতে এই মৃত্যুর খবর জেলে এসে পৌঁছতেই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। বন্দিনীদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ। শনিবার সকালে তা চরমে ওঠে। এই জেলে রয়েছেন ২৫১ জন বন্দিনী। তাঁদের অধিকাংশই স্লোগান দিতে শুরু করেন। জেলের ভিতর পুলিশি নির্যাতনে বন্দিনীর মৃত্যুর প্রতিবাদে সরব হয়ে ওঠেন তাঁরা। খবর কাগজ পুড়িয়ে আগুন জ্বালানোর চেষ্টাও করা হয়। এমনটাই জানিয়েছেন জেল কর্তৃপক্ষ। জেল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বন্দিদের এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়। যিনি শিনা বোরা হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত। কারাগার সূত্রে খবর, শনিবার সকালে ২০০ জন বন্দিনীকে সঙ্গে নিয়ে ইন্দ্রাণী জেলের ছাদে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করছিলেন। এমনকী রক্ষীদের সামলাতে শিশু সন্তানদের ঢাল হিসাবে ব্যবহার করার পরামর্শও বন্দিনীদের দিয়েছিলেন তিনি। কারাগারের ভিতর বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগে ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় সহ ২০০ জন মহিলা বন্দিনীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। অন্য দিকে, বন্দিনী মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত এক জেলার এবং পাঁচ জেলকর্মীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। তাঁদের সাসপেন্ডও করা হয়েছে। ইন্দ্রাণীর আইনজীবী গোটা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়েছেন।
গত ২০১৫ সালের অগস্টে নিজের মেয়ে শিনাকে খুনের অভিযোগে ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়। পরে গ্রেফতার হন তাঁর স্বামী, এক সময়ের মিডিয়া ব্যারন, পিটার মুখোপাধ্যায়ও।