দলে কোন্দল, কর্নাটক নিয়ে চিন্তায় অমিত শাহ

ইয়েদুরাপ্পা বনাম ঈশ্বরাপ্পা! দেশ জুড়ে যখন নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের জুটির বিজয়যাত্রা চলছে, সেই সময়েই দক্ষিণ ভারতে দলীয় কোন্দলে অস্বস্তিতে বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:১৬
Share:

অমিত শাহ

ইয়েদুরাপ্পা বনাম ঈশ্বরাপ্পা!

Advertisement

দেশ জুড়ে যখন নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের জুটির বিজয়যাত্রা চলছে, সেই সময়েই দক্ষিণ ভারতে দলীয় কোন্দলে অস্বস্তিতে বিজেপি। দলের কর্নাটক শাখার সভাপতি তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে কার্যত জেহাদ ঘোষণা করে বসেছেন দলেরই একটি অংশ। এই বিদ্রোহীদের মুখ দলেরই প্রাক্তন সভাপতি কে এস ইশ্বরাপ্পা। উভয় শিবিরের মধ্যে বিরোধ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দলের কর্নাটকের ভারপ্রাপ্ত নেতা মুরলিধর রাওকে আজ সে রাজ্যে পাঠিয়েছেন অমিত শাহ। রাতে দুই শিবিরের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন মুরলিধর।

ইয়েদুরাপ্পাকে দলের দায়িত্ব দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে জল্পনা চলেছিল বেশ কিছু দিন ধরে। কিন্তু মোদী-শাহরা সব দিক বিবেচনা করেই ইয়েদুরাপ্পাকে রাজ্য সভাপতি করেন। বিজেপির যুক্তি, কর্নাটকে ৩০ শতাংশের বেশি ভোটার লিঙ্গায়েত সমাজের। ইয়েদুরাপ্পা এই সমাজের নেতা ও তাঁদের উপরে এখনও যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ রয়েছে তাঁর। তাই আগামী বছরের নির্বাচনে ইয়েদুরাপ্পাকেই সামনে রেখে এগোতে চাইছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বিজেপি লিঙ্গায়েতদের গুরুত্ব দিচ্ছে, এই বার্তা দিতে এ দিনই দিল্লিতে লিঙ্গায়েত কবি ও সমাজ সংস্কারক বাসবান্নার জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

আরও পড়ুন: দাউদ অসুস্থ! তোলপাড় দিল্লি

কিন্তু বেসুরো গাইছেন ইশ্বরাপ্পা। ইয়েদুরাপ্পার দুর্নীতি নিয়ে সরব হওয়াই শুধু নয়, তাঁর কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে বসেছেন দলের এই প্রাক্তন সভাপতি। ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে ‘বিজেপি বাঁচাও’ নামে একটি ফ্রন্টও খুলে ফেলেছেন তিনি। ক্ষিপ্ত ইয়েদুরাপ্পার অভিযোগ, সঙ্ঘের নেতা বি এল সন্তোষের উস্কানিতেই এ ভাবে বিদ্রোহ শুরু করেছেন ইশ্বরাপ্পা।

বিরোধের উৎসটা কী? দলীয় সূত্রের খবর, এর শুরুটা হয়েছে মূলত ইয়েদুরাপ্পার ঘনিষ্ঠ এস রুদ্রগৌড়াকে সিমোগা জেলার সভাপতি করার পরেই। একটা সময়ে বিজেপি থেকে বহিষ্কৃত হয়ে ‘কর্নাটক জনতা পার্টি’ গড়েছিলেন ইয়েদুরাপ্পা। সে সময়ে এই রুদ্রগৌড়া সেই দলের হয়ে ইশ্বরাপ্পার বিরুদ্ধে নির্বাচনে লড়েন ও প্রচুর ভোট পান। তখন থেকেই রুদ্রগৌড়ার উপর ক্ষেপে ছিলেন ইশ্বরাপ্পা। সেই ব্যক্তিকে সিমোগার দায়িত্ব দেওয়ায় প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন ইশ্বরাপ্পা।

রাজ্যে কংগ্রেস এখন ক্ষমতায় থাকলেও, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ২৮টির মধ্যে ১৭টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। গত চার বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া নানা সমস্যায় জেরবার হয়ে রয়েছেন। কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ছাড়াও রাজ্যে প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া রয়েছে বলে মনে করছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে আগামী বছরের ভোটে জিতে কর্নাটকে ফের ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন দেখছেন অমিত শাহ।

কিন্তু রাজ্য বিজেপিতে ওই কেন্দল মাথা চাড়া দিয়ে কর্নাটক জয়ের স্বপ্ন ভেস্তে দিক, সেটা কোনও মতেই চাইছেন না অমিত শাহরা। সে কারণেই দ্রুত রাজ্য নেতৃত্বের সংঘাত থামাতে তৎপর হয়েছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন