দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে অভিযুক্ত চিকিৎসক শাহীন সইদ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে চিকিৎসক শাহীন সইদ তথা ‘ম্যাডাম সার্জন’কেই মূল ষড়যন্ত্রী বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তদন্তকারীদের একটি সূত্র অন্তত তেমনই দাবি করছে। ওই সূত্রের আরও দাবি, জইশ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে শাহীনের যোগসূত্রও পাওয়া গিয়েছে। জইশের হয়ে ভারতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ছক কষা হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, তদন্তকারী সূত্রের খবর, বিস্ফোরণের জন্য ছ’টি শহরকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। কোন কোন শহরে বিস্ফোরণের ছক ছিল, তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, ফরিদাবাদ থেকে শাহীনকে গ্রেফতারের পর যে সব ডিজিটাল নথি, হাতেলেখা ডায়েরি, পরিকল্পনার নানা তথ্য উদ্ধার হয়েছে। আর সেই সূত্র ধরেই ‘ম্যাডাম সার্জন’কেই মূল ষড়যন্ত্রী বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ওই সূত্রের দাবি, হামলার যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সেটির নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন ডি সিক্স’। কেন এই নাম দেওয়া হয়েছে, সেই সাঙ্কেতিক শব্দের রহস্যভেদও করেছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের দাবি, ‘ডি সিক্স’ বলতে ৬ ডিসেম্বর বলেই সন্দেহ করছেন তদন্তকারীরা। এ ছাড়াও ছ’টি শহরে হামলা। উদ্ধার হওয়া সমস্ত নথি খতিয়ে দেখার পর তদন্তকারীরা তেমনই মনে করছেন বলে সূত্রের দাবি।
তদন্তকারীদের আরও সন্দেহ, ৬ ডিসেম্বরেই দেশের ছ’টি শহরে বিস্ফোরণের ছক ছিল ‘ম্যাডাম সার্জন’ এবং তাঁর সঙ্গীদের। তদন্তকারীদের একটি সূত্র বলছে, ‘অপারেশন ডি সিক্স’-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কাশ্মীরি চিকিৎসক মুজ়াম্মিল গনাই, উমর-উন-নবিদের। সূত্রের খবর, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ভারতে জইশের মহিলা বাহিনী তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল চিকিৎসক শাহীনকে। জামাত-উল-মোমিনিন নামে একটি নিষিদ্ধ সংগঠনের ছত্রছায়ায় সেই বাহিনী গড়ার কাজ চালাচ্ছিলেন শাহীন।
সূত্রের খবর, ২০ লক্ষ টাকার হাওয়ালা লেনদেনরও তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সেই টাকা জইশের হ্যান্ডলাররা হাওয়ালার মাধ্যমে শাহীন, মুজ়াম্মিল এবং উমরের হাতে পৌঁছে দেয়। সন্দেহ করা হচ্ছে, জঙ্গিদলে নিয়োগ, আশ্রয়ের ঠিকানা এবং হামলার জন্য বাকি সব ব্যবস্থার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। শাহীনের আর্থিক লেনদেন নিয়েও তদন্ত শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, কানপুরে একটি, লখনউয়ে দু’টি এবং দিল্লিতে দু’টি অ্যাকাউন্টের হদিস মিলেছে। সেই অ্যাকাউন্টে কোথায় কত টাকা লেনদেন হয়েছে, সেগুলি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।