একসঙ্গে: ডেসমন্ড এবং শর্মিলা চানু। ফাইল চিত্র
স্বজন ও স্বভূমি তাঁর প্রেমকে কখনওই মেনে নেয়নি। অনশন ভাঙার পরে পাশ থেকে সরে গিয়েছিলেন বহু দিনের সঙ্গী ‘শর্মিলা কানবা লুপ’-এর সদস্যরাও। তাই শেষ পর্যন্ত মণিপুর থেকে অনেক দূরে, কেরলে, প্রেমিক ডেসমন্ড কুটিনহোকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিলেন ইরম শর্মিলা চানু।
শর্মিলার সঙ্গে ডেসমন্ডের প্রেম ভাঙার বিস্তর চেষ্টা চলেছে। এমন কী, ইম্ফলের আদালতে চানুর সঙ্গে দেখা করতে এলে ডেসমন্ডকে মারধর করে জেলে পাঠানো হয়। গত বছর শর্মিলার অনশন ভাঙায় অনুগামীরা দাবি করেন, ভারত সরকারের চর ডেসমন্ড প্রেমের ফাঁদে ফেলে চানুকে বিপথগামী করেছেন। চানু আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, ডেসমন্ডকে বিয়ে করলে তাঁদের মেরে ফেলা হতে পারে।
অনশন ভেঙে শর্মিলা ভোটে লড়তে নেমেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। পেয়েছিলেন মাত্র ৯০টি ভোট। হতাশ, ভেঙে পড়া শর্মিলা পাড়ি দিয়েছিলেন কেরল। তার পর থেকে পরিবার ও নিজের গড়া রাজনৈতিক দল ‘প্রাজা’র সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ক্ষীণ হতে থাকে।
দক্ষিণ ভারত থেকে ফিরে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন চানু। জানান, প্রেমিককে ইংল্যান্ডে গিয়ে বিয়ে করে সেখানেই থেকে যেতে চান। ঘনিষ্ঠদের কাছে দুঃখ করেন, এত দ্রুত ১৬ বছরের অনশন ভুলে মানুষ তাঁকে অপ্রাসঙ্গিক করে দেবে, তা তিনি ভাবতে পারেননি।
আরও পড়ুন: আয়কর দফতরের এ বার নিশানায় বেনামি সম্পত্তি
বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে শর্মিলাকে পাসপোর্ট দেওয়া হয়নি। তাই চানু সিদ্ধান্ত নেন, কেরলেই বিয়ে করবেন। চানু জানান, এত দূরের রাজ্যে যে ভালবাসা ও আতিথ্য পেয়েছেন, তাতে তিনি মুগ্ধ। মণিপুর থেকে মাদুরাই পৌঁছেছেন তিনি। ডেসমন্ডও মাদুরাই এসেছেন। সেখান থেকে কেরল যাবেন তাঁরা। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার স্বার্থে বিয়ের স্থান ও সময় জানাতে নারাজ হবু দম্পতি।
মেয়ে এত দিন পরে মুক্তি পেলেও তাঁর বিয়ে নিয়ে কোনও আনন্দ নেই চানু পরিবারে। মা সখী দেবী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আফস্পা প্রত্যাহার হলে তবেই মেয়ের মুখ দেখবেন। তা হয়নি। অনশন ভাঙার পরেও পরিবার ও পরিস্থিতির চাপে মায়ের সঙ্গে থাকতে পারেননি চানু। থাকতে হয়েছিল ইস্কনের কেন্দ্রে। তাঁর বিয়ে নিয়েও পরিবারের উৎসাহ নেই। দাদা সিংহজিত বলেন, “ভোটে লড়ার সময় থেকেই চানু আমাদের এড়িয়ে চলত। বহু বার আমার ফোন ধরেনি। বিয়ে শর্মিলার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এ নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।”