সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদানের বিষয়ে এখনও সরাসরি কিছু বলেননি রবার্ট বঢরা। ছবি: পিটিআই।
উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ লোকসভা কেন্দ্র থেকেই কি ভোটে লড়বেন রবার্ট বঢরা? জল্পনা আরও উস্কে দিল ওই কেন্দ্রের একটি পোস্টারের বয়ান।
কী লেখা রয়েছে তাতে? বেশ ইঙ্গিতপূর্ণ ওই পোস্টারে লেখা, ‘রবার্ট বঢরাজি, মোরাদাবাদ লোকসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আপনাকে স্বাগত জানাই।’
যুব কংগ্রেসের তরফে মোরাদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের একাধিক পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। পোস্টারের বেশির ভাগটা জুড়েই রয়েছে রবার্ট বঢরার মুখের ছবি। এবং পিছনের সারিতে সনিয়া গাঁধী এবং রাহুল গাঁধীর মুখ।
রবার্ট বঢরা সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানতেন?
আরও পড়ুন: ‘সত্যই আমার হাতিয়ার’, জামিন পেয়েই এম জে আকবরকে তোপ দাগলেন সাংবাদিক প্রিয়া
আপাতদৃষ্টিতে এটি রবার্ট বঢরার কাছে মোরাদাবাদ যুব কংগ্রেসের আবেদন বলে মনে হতে পারে। তবে একটি অসমর্থিত সূত্রের দাবি, রবার্ট বঢরা নিজেই সাংবাদিকদের ওই পোস্টার বিলি করেছেন। তাতেই তাঁর সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদানের জল্পনায় আরও হাওয়া লেগেছে।
উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদে এই পোস্টারই দেখা গিয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
ঘটনাচক্রে, রবিবার ফেসবুকে একটি পোস্টে এমন ইঙ্গিতই দিয়েছিলেন রবার্ট। তাতে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘দেশবাসীকে সাহায্য করার জন্য আমার রাজনীতিতে আসার প্রয়োজন নেই। কিন্তু, যদি রাজনীতিতে যোগ দিয়ে আমি আরও বড়সড় বদল ঘটাতে পারি, তা হলে ক্ষতি কি? তবে সে বিচার মানুষই করবেন।’’
মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই দাদা রাহুল গাঁধী দলের সাধারণ সম্পাদক পদে নিয়ে এসেছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকে। দায়িত্ব দিয়েছেন পূর্ব উত্তরপ্রদেশের। তবে কি উত্তরপ্রদেশ থেকেই নির্বাচনী লড়াইয়ে দেখা যাবে প্রিয়ঙ্কার স্বামীকেও? শুরু হয়েছে জল্পনা। কারণ, ওই ফেসবুক পোস্টে রবার্ট আরও লিখেছেন, “প্রচার ও কাজের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষত উত্তরপ্রদেশে সময় কাটিয়েছি। তা থেকে মনে হয়েছে, মানুষের জন্য আরও কাজ করা বাকি আছে। এবং আরও ছোটখাটো বদল ঘটানোর প্রয়োজন রয়েছে।” এতেই থেমে থাকেননি রবার্ট, তাঁর লেখায় ফুটে উঠেছে তাঁর রাজনৈতিক উচ্চাশাও।... “এত বছরের শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা বিফলে দেওয়া যায় না। এবং তা কাজে লাগানো উচিত।”
তবে কি উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ কেন্দ্র থেকেই লোকসভা ভোটে লড়াই করতে দেখা যাবে রবার্ট বঢরাকে? এ নিয়ে তিনি নিজে সরাসরি কিছু বলেননি। তবে ওই ফেসবুক পোস্টের পর কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিজেপি। বিজেপি-র মুখপাত্র মুখতার আব্বাস নকভির কটাক্ষ, “লোকসভা নির্বাচনের জন্য কংগ্রেসের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। #রবার্টইজরেডি। এই পি-আর (প্রিয়ঙ্কা-রাহুল) ক্ষমতার সার্কাসে এক জন জোকার অনুপস্থিত ছিল। এ বার মনে হচ্ছে সেই জোকারেরও প্রবেশ ঘটল।”
আরও পড়ুন: ‘স্বামীর ইউনিফর্ম-স্টার পরেই স্যালুট জানাব’! সেনায় যোগ দেওয়ার আগে বললেন নিহত মেজরের স্ত্রী
ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, লোকসভা ভোটের আগে সক্রিয় রাজনীতিতে রবার্ট বঢরার যোগদান নিয়ে জল্পনা শুরু হলেও তাঁর পক্ষে কাজটা সহজ নয়। কারণ রবার্টের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতি মামলা ঝুলছে। রাজস্থান ও হরিয়ানায় দুর্নীতির অভিযোগ ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে ব্রিটেনে ন’টি বেনামি সম্পত্তি কেনা ও বিকানেরে জমি সংক্রান্ত দুর্নীতির তদন্ত করছে ইডি। বরাবরই সে সমস্ত অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে এসেছেন তিনি। তবে সে সব বিষয়কে আপাতত দূরে ঠেলে রাখতে চান রবার্ট নিজে। তাঁর কথায়, “আমার মনে হয়, এক বার সমস্ত অভিযোগের নিষ্পত্তি হয়ে গেলে আমার উচিত মানুষের সেবায় আরও বড় ভূমিকা পালন করতে পারব।”
কিন্তু, লোকসভা ভোটের আগে সেই সমস্ত অভিযোগের নিষ্পত্তি হওয়াটা দূর অস্ত্ হলেও মোরাদাবাদের পোস্টার ফের উস্কে দিয়েছে রবার্ট বঢরার রাজনীতিতে যোগদানের জল্পনা।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবরপেতে পড়ুন আমাদেরদেশবিভাগ।)